আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
শায়েখ,

(১) আমার তালাকের ওয়াসওয়াসা আছে। আমার মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলার সময় আমার মেয়ে মিষ্টি খেতে চাইলে আমি বলি,  বাড়ি এসে।
বাড়ি এসে বলার পর মনে হচ্ছে আমি বাড়ি যেয়ে আমার ওয়াইফে তালাক দিয়ে দেবো। এমন কথা মনে আসতে থাকে।
এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(২) আমার ওয়াইফের পিরিওড রাতে শেষ হয়েছে। পিরিওড শেষে গোছল না করে যদি সকালে সহবাস করে ফেলি, তাহলে কি গুনাহ হবে??

(৩) একটা ভিডিওতে সালাম দিতে দেখে আমার মনের ভিতর কল্পনা হচ্ছে যে,  আমি মাথা নত করে কাউকে সালাম দিচ্ছি। এতে কি আমার ঈমানের কোন ক্ষতি হবে শায়েখ??

(৪) ফেসবুকের বিভিন্ন স্ট্যাটাসে "ছেড়ে দিলাম" ডিভোর্স" ইত্যাদি শব্দ থাকে। আমার ওয়াসওয়াসা থাকার জন্য এসব শব্দ পড়লে ভয় হওয়া শুরু হয়। এবং মনে হয় আমি যেন এসব শব্দ আমার ওয়াইফকে বললাম। যদিও আমি এগুলা উচ্চারন করে পড়ি না। হালকা জিব্বা নড়লে নড়তে পারে। বাট উচ্চারন হয় না।

এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(৫) স্বাভাবিক কথাবার্তা হলেও মনে হয় কেনায়া বাক্য হয়ে গেল। আমার মেয়ের চুল কাটা প্রশংগে আমি বললাম, যা আছে থাক। এটা বলার পর মনের ভিতর তালাকের নিয়ত করে ফেলছি। মনে হচ্ছ আমি তালাকের নিয়তে বললাম।

এসব কারনে কি তালাক পতিত হবে??

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
এতে তালাক পতিত হবেনা। 

(০২)
সুরা বাকারার ২২২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

২:২২২ وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ الۡمَحِیۡضِ ؕ قُلۡ هُوَ اَذًی ۙ فَاعۡتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الۡمَحِیۡضِ ۙ وَ لَا تَقۡرَبُوۡهُنَّ حَتّٰی یَطۡهُرۡنَ ۚ فَاِذَا تَطَهَّرۡنَ فَاۡتُوۡهُنَّ مِنۡ حَیۡثُ اَمَرَکُمُ اللّٰهُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ ﴿۲۲۲﴾

আর তারা তোমাকে হায়েয সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা হায়েযকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে। 
,
হায়েজের সর্বোচ্চ সীমা ১০ দিনের মাথায় এসে যদি হায়েজ বন্ধ হয়,তাহলে গোসল ব্যাতিতই সহবাস জায়েজ আছে।
তবে সহবাস গোসল করার পরেই উত্তম।
আর যদি ইহার কম সময়ে হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়,তাহলে গোসল করার পর সহবাস জায়েজ আছে।
অথবা এতটুকু সময় অপেক্ষা করবে,যার মধ্যে গোসল করে কাপড় পরিধান করে নামাজ শুরু করতে পারে। বা হায়েজে শেষ হওয়ার পর  নামাজের ওয়াক্ত চলে যায়,আর নামাজ তার যিম্মায় লাযেম তথা আবশ্যকীয় হয়ে যায়।
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১/২১১)

ویحل وطو ئھا اذا انقطع حیضھا لا کثرہ بلا غسل وجوباً بل ندباً الخ
الدر المختار علی ہامش ردالمحتارباب الحیض جلد اول ص ۲۷۱ ۔ط۔س۔ج۱ص۱۲۲۹۴ظفیر۔
সারমর্মঃ
যদি হায়েজের সর্বোচ্চ সীমার দিনে এসে হায়েজ বন্ধ হয়,তাহলে গোসল ব্যাতিতই সহবাস জায়েজ আছে।
এ সময় গোসল ওয়াজিব নয়,বরং মুস্তাহাব।

وان لاقلہ الخ لایحل حتی تغتسل او تیمم بشرطہ او یمضی علیھا زمن یسع الغسل ولبس الثیاب الخ (الدر المختار علی ہامش ردالمحتارباب الحیض ج۱ ص ۲۷۲۔ط۔س۔ج۱ص۲۹۴)ظفیر۔
সারমর্মঃ
আর যদি তার আগেই হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়,তাহলে গোসল করা ব্যাতিত সহবাস জায়েজ নেই,
অথবা এতটুকু সময় অপেক্ষা করবে,যার মধ্যে গোসল করে কাপড় পরিধান করে নামাজ শুরু করতে পারে। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার স্ত্রীর প্রতি মাসে অভ্যাস অনুযায়ী হায়েজের যেই নির্দিষ্ট দিন রয়েছে,এর আগেই যদি হায়েজ শেষ হয়ে যায়,তাহলে তো সেই নির্দিষ্ট দিন গুলো শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সহবাস কোনোভাবেই জায়েজ নেই।
কারন পুনরায় হায়েজ আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
,
আর যদি উক্ত নির্দিষ্ট দিনে এসে হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়,তার অভ্যাস যদি ১০ দিনের কম হয়, তাহলে গোসল বা নামাজের এক ওয়াক্ত অতিক্রম করার আগ পর্যন্ত  সহবাস জায়েজ নেই।
এতে গুনাহ হবে।
,
হায়েজের সর্বোচ্চ সীমা ১০ দিনের মাথায় এসে যদি হায়েজ বন্ধ হয়,তাহলে গোসল ব্যাতিতই সহবাস জায়েজ আছে।
তবে সহবাস গোসল করার পরেই উত্তম।

আরো জানুনঃ- 

★সেই হিসেবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু রাতে হায়েজ বন্ধ হওয়ার পর সকালে সহবাস করা হয়েছে,সুতরাং এতে গুনাহ হবেনা।
এটি জায়েজ আছে।
তবে সহবাস গোসল করার পরেই সহবাস করা উত্তম ছিলো।

(০৩)
মনের এ কল্পনার দরুন আপনার ঈমানের কোন ক্ষতি হবেনা।

(০৪)
এতে তালাক পতিত হবেনা। 

(০৫)
কেনায়া বাক্য তো সব গুলি নয়।

কেনায়া বাক্য কি কি,তাহা জানুনঃ- 

সুতরাং প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...