আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
244 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম,

আমাদের ভার্সিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে ফিলোসফির একটা কোর্স করানো হয় যেটার বেশিরভাগ জিনিস ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। গত কয়েকটা ক্লাস ধরে ইসলামের শাস্তির বিধান গুলো যে কতটা "অমানবিক" এবং "বর্বর" সেটা পড়ানো হয়েছে।গত ক্লাসে একটা কেস স্টাডি দেখানো হয়:

একজন লোকের স্ত্রী খুব অসুস্থ। ডাক্তাররা বলেছে তাকে সুস্থ করার জন্য একটাই মাত্র ওষুধ আছে যেটা শেষ আশা হতে পারে। লোকটা ওষুধ কিনতে দোকানে যায়। ওষুধটা তৈরি করতেন যেই কাঁচামাল খরচ হয়েছে সেটার দাম 200 ডলার। কিন্তু ওষুধের আবিষ্কারকের দাবী হল যে এই ওষুধ দিয়ে কিছু টাকা কামাই করতে চায় তাই সে এটা 2000 ডলার এর কমে  দিবেনা। লোকটার পক্ষে 2000 ডলার কোনভাবে দেয়া সম্ভব না সে 1000 ডলার দেয়ার দাবি করে কিন্তু দোকানদার নিতে চায় না। কারণ ওষুধের আবিষ্কারক এটা 2000 ডলার এর কমে বিক্রি করতে মানা করেছে। এরপর লোকটা বাধ্য হয়ে দোকানে ঢুকে এবং ওষুধ টা চুরি করে।
এই ঘটনার ব্যাখ্যা কী হবে? এখানে কে দোষী এবং দোষীর শাস্তি কি হবে? চোরেরা তো এরকম পরিস্থিতির শিকার হয়েই চুরি করে, এর জন্য হাত কাটা কি ঠিক হবে?

ক্লাসে এ ধরনের বিভিন্ন ঘটনা উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীদের কে বিভ্রান্ত করা হয়।
#️⃣ দয়া করে উপরের ঘটনার বিশ্লেষণ জানাবেন।

#️⃣এসব ফিতনা থেকে কিভাবে বাঁচব? ঈমান এবং আকিদা মজবুত না হলে যে কেউ বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। পারিবারিক অবস্থার কারণে ছেড়ে দেওয়াও সম্ভব না। যেটা বুঝতে পারছি যে টিকে থাকতে হলে আমাকে ইসলামী জীবন দর্শন এবং পশ্চিমা জীবন-দর্শনের পার্থক্য গুলো নিয়ে গভীর পড়াশোনা করতে হবে। যেমন: নাস্তিকতা, নারীবাদ, সমকামিত, ধর্মকে বাদ দিয়ে ভালো মন্দ বিচারের অসারতা ইত্যাদি। এসব বিষয় নিয়ে কিভাবে পড়াশোনা করব? এবং কোনও বই বা লেকচার সিরিজ এমন আছে কী?
closed

1 Answer

0 votes
by (582,930 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
পশ্চিমা দর্শন আর ইসলামী দর্শনের পার্থক্য এটাই যে, তারা মনে করে ঔষধ শে'ফা প্রদান করে, আর মুসলমানরা মনে করে যে, শে'ফা প্রদানকারী একমাত্র আল্লাহ তা'আলা। 
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
الَّذِي خَلَقَنِي فَهُوَ يَهْدِينِ
যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন,
وَالَّذِي هُوَ يُطْعِمُنِي وَيَسْقِينِ
যিনি আমাকে আহার এবং পানীয় দান করেন,
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।(সূরা শু'আরা-৭৮-৮০)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু পশ্চিমারা মনে করে যে, ঔষধই শে'ফা দান করে, তাই তারা এসব খোড়া যুক্তি দাড় করিয়ে চুরিকে হালাল মনে করে। কিন্তু মুসলমানরা যেহেতু মনে করে, শে'ফা প্রদানকারী একমাত্র আল্লাহ তা'আলা,ঔষধের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নাই, তাই ইসলামী আইনে এই সময়েও চুরির সুযোগ নাই। যদি ঔষধ শে'ফা দানকারী হতো, তাহলে কেন সবার উপর ঔষধ তার ক্ষমা প্রয়োগ করতে পারে না।কাজেই বুঝা গেল, ঔষধও অন্য কারো ইশারায় নাচে।

তাছাড়া কোনো কম্পানি যদি ঔষধ আবিস্কারের পর সেটা আকাশ চোয়া মূল্য নির্ধারণ করে, তাহলে সরকারের দায়িত্ব হল, ভর্তুকি দিয়ে জনসাধারণের নাগালের ভিতরে নিয়ে আসা অথবা আবিস্কারককে কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে মূল্য বৃদ্ধি সম্পর্কে জবাবদিহিতা তলব করা। এইসব পদক্ষেপ গ্রহণ না করে চুরি করার কথা এবং হাত কাটার প্রসঙ্গ আসা মানেই, শয়তানের প্রদর্শিত রাস্তায়ই হাটা। সুতরাং এসমস্ত আলোচনার যে জায়গায় হবে, সেই আলোচনা শ্রবণ করা যাবে না।বরং সেখান থেকে উঠে যেতে হবে। সুতরাং আপনার ভার্সিটির ঐ ক্লাসগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।অথবা সেগুলোর জবাব কোনো আলেমের কাছ থেকে জেনে নিয়ে তারপর ক্লাস করে উল্টো শিক্ষককে প্রশ্ন করতে পারেন।

وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ فِي آيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتَّىٰ يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ ۚ وَإِمَّا يُنسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلَا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَىٰ مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
যখন আপনি তাদেরকে দেখেন, যারা আমার আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণ করে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায় প্রবৃত্ত না হয়, যদি শয়তান আপনাকে ভূলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর জালেমদের সাথে উপবেশন করবেন না। (সূরা আন'আম-৬৮)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...