আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in পবিত্রতা (Purity) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম

জনাব,

যতদূর মনে আছে, ৬/৭ শ্রেণিতে থাকার সময় ধর্ম বইয়ে পড়েছিলাম ফরয গোসলের কিছু নিয়ম। নাপাকি স্থান পরিষ্কার ও ওযু করার মাধ্যমে ফরয গোসল শুরুর কথা বলা ছিলো। আর সারা শরীর ধৌত করা শেষ হওয়ার পর, প্রথমে নাপাকি লেগে ছিলো যে স্থানে সে স্থানে পানি ঢালা, তারপর দুই কাঁধে, তারপর মাথায় দুই মগ এবং শেষে পা ধুয়ে ফেলা। এই নিয়মটি সঠিক কিনা জানি না। কিন্তু এক রকম অভ্যাস হয়ে গেছে এই নিয়মটা ফলো করার। এমনকি এই নিয়ম অনুযায়ী না করলে অস্বস্তি থেকে যায়, মনে হয় গোসল পরিপূর্ণ হয় নি।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে,

১. উপরিউক্ত নিয়মটি অনুসরণ করা কি কোনোভাবে বিদআত হবে কিনা। কেননা, ওই নিয়মটি অনুসরণ না করলে আমার মনের মধ্যে কাজ করে যে, গোসল পরিপূর্ণ হয় নি।

২. দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, উপরিউক্ত নিয়ম অনুসারে গোসল শেষে আমার মনে হয়েছে একটা অংশ ধৌত হয় নি ভালো করে। তাই ভালো করে সেই অংশ ধুয়ে আবার উপরিউক্ত নিয়ম অনুযায়ী গোসল শেষ করছি। তারপর আবার মনে হইছে, হয়তো সঠিক হয় নি ওই নিয়ম। তাই পুনরায় আবার ওই নিয়ম অনুসরণ করে গোসল শেষ করেছি। এতে কি আমার ফরয গোসল আদায় পরিপূর্ণ হয়েছে?
* আশা করি বুঝাতে পেরেছি।

1 Answer

0 votes
by (63,400 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/21252/?show=21252#q21252 নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

হাদীস শরীফে রাসুল সাঃ এর গোসলের পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে।    

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ مَيْمُونَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ، فَغَسَلَ فَرْجَهُ بِيَدِهِ، ثُمَّ دَلَكَ بِهَا الْحَائِطَ ثُمَّ غَسَلَهَا، ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءَهُ لِلصَّلاَةِ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ غُسْلِهِ غَسَلَ رِجْلَيْهِ.

মাইমূনাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপবিত্রতার গোসল করলেন। তিনি নিজের লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর হাত দেয়ালে ঘষলেন এবং তা ধুলেন। তারপর সালাতের উযূর ন্যায় উযূ করলেন। গোসল শেষ করে তিনি তাঁর দু’পা ধুয়ে নিলেন। (বুখারী ২৬০২৪৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৮)

,

حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَتْ مَيْمُونَةُ وَضَعْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَاءً لِلْغُسْلِ، فَغَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ أَفْرَغَ عَلَى شِمَالِهِ فَغَسَلَ مَذَاكِيرَهُ، ثُمَّ مَسَحَ يَدَهُ بِالأَرْضِ، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ، ثُمَّ أَفَاضَ عَلَى جَسَدِهِ، ثُمَّ تَحَوَّلَ مِنْ مَكَانِهِ فَغَسَلَ قَدَمَيْهِ

ইবনু ‘আববাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মাইমূনাহ্ (রাযি.) বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম। তিনি তাঁর হাত দু’বার বা তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে তাঁর বাম হাতে পানি নিয়ে তাঁর লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর মাটিতে হাত ঘষলেন। তারপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, তাঁর চেহারা ও দু’হাত ধুয়ে নিলেন। অতঃপর তাঁর সারা দেহে পানি ঢাললেন। তারপর একটু সরে গিয়ে দু’পা ধুয়ে নিলেন। (বুখারী ২৫৭,২৪৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৫)

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ يَبْدَأُ فَيَغْسِلُ يَدَيْهِ ثُمَّ يُفْرِغُ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ فَيَغْسِلُ فَرْجَهُ ثُمَّ يَتَوَضَّأُ وُضُوءَهُ لِلصَّلاَةِ ثُمَّ يَأْخُذُ الْمَاءَ فَيُدْخِلُ أَصَابِعَهُ فِي أُصُولِ الشَّعْرِ حَتَّى إِذَا رَأَى أَنْ قَدِ اسْتَبْرَأَ حَفَنَ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاَثَ حَفَنَاتٍ ثُمَّ أَفَاضَ عَلَى سَائِرِ جَسَدِهِ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ .

‘‘রাসুলুল্লাহ্ (সা.) যখন অপবিত্রতা থেকে গোসল করতেন তখন প্রথমে দুই হাত ধুতেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধুতেন। তারপর সালাতের অযূর মত অযূ করতেন। তারপর পানি নিয়ে তাঁর আঙ্গুলগুলো চুলের গোড়ায় ঢুকাতেন। এমনিভাবে যখন মনে করতেন যে, চুল ভিজে গেছে তখন মাথায় তিন আজল (দুই হাতের তালু ভরা) পানি ঢালতেন। তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে দিতেন। তারপর তাঁর উভয় পা ধুয়ে ফেলতেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ৪৭৪

 

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/17798/

 

গোসলের ফরয ১১টি।

(১) মুখ ধৌত করা।

(২) নাক ধৌত করা।

(৩) সমস্ত শরীর একবার ধৌত করা।

গোসলের ফরয সাধারনত এ তিনটিই। কেননা সমস্ত শরীরের মধ্যে পরবর্তী সবগুলাই ঢুকে গেছে। কিন্ত বিশেষ গুরুত্বের ধরুণ কোনো কোনো কিতাবে পৃথক পৃথক করে গননা করা হয়।

(৪) খতনাবিহীন ব্যক্তির পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া যদি খুলতে কষ্ট হয়, তবে তার ভেতরাংশ ধৌত করা।

(৫) নাভি ধৌত করা।

(৬) শরীরের এরূপ ছিদ্রে পানি পৌঁছানো, যা বুঁজে যায়নি।

(৭) পুরুষের চুলের বেণীর ভেতরে পানি পৌঁছানো, এতে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছা বা না পৌঁছার কোন শর্ত নেই।তবে মহিলার চুলের গোড়ায় যদি পানি পৌঁছে, তাহলে মহিলার চুলের বেণীর ভেতরে পানি পৌঁছানো ফরয নয়।

(৮) দাড়ির ভেতরস্থ চামড়া ধৌত করা।

(৯) গোঁফের ভেতরস্থ চামড়া ধৌত করা।

(১০) ভ্রুর ভেতরস্থ চামড়া ধৌত করা।

(১১) যোনি মুখবরনের বহিরাংশ ধৌত করা।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/229

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই /বোন!

 

১. জী, আপনি প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে গোসল করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই এবং এটা বিদআতও হবে না।

২. জী, উক্ত পদ্ধতিতে গোসল করার দ্বারাও ফরজ গোসল আদায় হয়ে যাবে। তবে সন্দেহের কারণে আবার প্রথম থেকে গোসল শুরু করা লাগবে না। বরং ঐ অঙ্গটা ভালো ভাবে ধৌত করে ফেললেই ফরজ গোসল আদায় হয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...