আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
66 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (10 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর।

(১) নামাজের ভিতরে মনে হলো যে, তাশাহুদে আংগুল ইশারার ব্যাপারে ভালভাবে জানবো বুঝবো তারপর আংগুল ইশারা করবো।
এটা মনে আসাতে কি ঈমানের কোন ক্ষতি হবে??

(২) একটা হুজুর তার ওয়াজে বললেন যে, "মানুষের চাদে যাওয়া ভুল, সূর্যের সাইজ মাপলো কিভাবে! এসব মিথ্যা কথা।
কোরআনে বলা আছে, মানুষ পৃথিবীর বাইরের খবর জানতে পারবে না"।
শায়েখ, আসলেই কি কোরআনে এরকম বলা আছে?
মনে সন্দেহ আসাতে প্রশ্ন করলাম, এতে কি আমার ঈমানের ক্ষতি হবে শায়েখ??

(৩) একটা মিষ্টির দোকানে গেলে সেখানে কিছু ভিক্ষুক লোক ভিক্ষা চাই। সেদিন আমি দোকানে থেকে বেরিয়ে এসে মটরসাইকেলে উঠার সময় মনে হলো কোন ভিক্ষুক পিছন থেকে আমার দিকে আসছে। আমি চাচ্ছিলাম  না যে কোন ভিক্ষুক আমার কাছে টাকা চাক। এজন্য আমি দ্রুত গাড়ি স্টার্ট করে চলে আসি। এজন্য কি আমার গুনাহ হবে শায়েখ??

(৪) বাইক মিস্তিরিকে বললাম যে, বাল্ব কয়দিন চলবে? এটা বলার পরপরি আমার মনে হলো যে, আমি মনে হয় তাকে গায়েব জিগ্গাসা করলাম। কারন, বাল্ব কয়দিন চলবে সেটা একমাএ আল্লাহ জানেন। এজন্য কি আমার ঈমানে কোন সমস্যা হবে শায়েখ?

(৫) আমার ওয়াসওয়াসা আছে। কোন বই পড়তে গেলে মনে হয় আমি মনে হয় এই বইকে কোরআনের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ন মনে করছি। তাই কোরআন না পড়ে এই বই পড়ছি। এমন মনে হয়। এখন এমন চিন্তা বাদ দিয়ে যদি অন্য কোন বই পড়ি তাহলে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(৬) কয়দিন থেকে মনে হচ্ছে যে, নবি (সা:) কে অনুকরন করতে হবে। এবং শুধু আল্লাহকে অনুশরন করতে হবে। এমন মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, অনুশরন মানে তো স্বরন করা, আর স্বরন শুধু তো আল্লাহকে করা উচিত।
নবি (সা:) কে অনুশরন ও অনুকরন করতে হবে এমন কথা বলা যাবে কি শায়েখ?
এমন বিষয় মনে হওয়াতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ?

(৭) একটা টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রুপে ইসলামিক পিডিএফ শিয়ার করে। আমি সেগুলা ডাওনলোড করে পড়ি। এটা কি আমার জন্য যায়েজ হবে?

(৮) আমার মনে আল্লাহ,  রাসুল(সা:) ও কোরআন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খারাপ চিন্তা আসে। আজকে এসব বিষয় মনে হওয়াতে আমার মনে কোরআনকে অবমাননাকর একটা চিন্তা আসলো আর মনে হলো যে, এত সমস্যা না হয়ে যদি এভাবে কোরআন অবমাননা করতাম তাহলে ভাল হতো। এরকম মনে ভিতর আসার পরপরি আমার মনে হতে থাকে যে,এ আমি কি ভাবছি। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(৯) আমার এক বন্ধু আছে যার সাথে আমি মাঝে মধ্যেই ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করি। তাই গত শুক্রবার আমার বন্ধু যাদু করা নিয়ে কথা বলছিল। এবং এক মহিলা যে কিনা মুসলমানদের যাদু করতে পারে না সেই বিষয়ে ইউটিউবে আমাকে একটা ভিডিও দেখাচ্ছিল। যাদুর বিষয়ে আমি বললাম যে, হ্যা যাদু সত্যা,  ইসলামে এর শাস্তি মিত্যুদন্ড। তারপর কথার বলার এক পর্যায় আমার বন্ধু বললো যে, শয়তান মানুষের বাবা মাকে জীবিত করবে। আরো অনেক ধরনের কথা বলছিল।আর আমি "হুম হুম" করছিলাম। তখনি আমার মনে হলো যে,  শয়তানের তো মানুষকে জীবিত করার ক্ষমতা নেই। মানুষ জীবিত করার ক্ষমতা তো একমাএ আল্লাহর। আর আমিতো "হুম" বলে ফেললাম। এরপর আমার বন্ধু ফেসবুকের মেটাভার্সে মৃত কারো ইনফরমেশন দিলে তাকে আর্টিফিশিয়ালভাবে বানিয়ে দেবে সেসব বলছিল। পরবর্তিতে আমার মনে শুধু আসছে যে, আমার বন্ধু কি শয়তান মানুষকে জিবিত  করতে পারবে এটা কি উদ্দেশ্য নিয়ে বললো?

আবার মনে হচ্ছে যে , দাজ্জাল ও তো শয়তান। তাকে তো মানুষ জীবিত করার ক্ষমতা আল্লাহ দিবেন।  তাহলে কি আমার বন্ধু শয়তান বলতে দাজ্জালকে বোঝালো?
এমন চিন্তা মাথায় আসছে। কিন্তু "শয়তান মানুষকে জীবিত করতে পারবে" এমন কথায় "হুম" বলার জন্য কি আমি ঈমানহারা হয়ে যাবো শায়েখ??

(১০) এখন মাঝে মাঝে "শয়তান মানুষকে জিবিত করতে পারবে" শব্দটি মনে আসা মাএ মনে হচ্ছে আমি "হুম" বলে ফেলবো। আবার কখনো কখনো সন্দেহ হচ্ছে শব্দটি মনে আসার পর "হুম" বলে ফেললাম কিনা। আমার ওয়াসওয়াসার জন্য মনে যখনি কোন খারাপ চিন্তা আসে আমি তখনি মুখ দিয়ে একটা সাউন্ড করে ফেলি , অনেকটা শরিল খারাপ হলে মানুষ যেমন করে আরকি। "শয়তান মানুষকে জিবিত করতে পারবে " এমন কথা মনে আসার পর যদি সেরকম সাউন্ড ও করি,  তবুও মনে হচ্ছে আমি "হুম" বললাম মনে হয়।

এতে কি ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(১১) আমার বিয়ের বয়স ৭ বছরের মত হবে। ওয়াসওয়াসার জন্য এখন বিয়ের আগে ঘটে যাওয়া বা অনেক আগে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন কথা মনে আসছে, আর মনে হচ্ছে আমার বিবাহিত সম্পর্ক মনে হয় আর বহাল নেই । যেমন : বিয়ের আগে আমি যখন চাকরিতে ঢুকি তখন আমি অন্য একজনের সার্টিফিকেট দিয়ে কোম্পানিতে চাকরি নি। এটা তো প্রতারনা। এখন মনে হচ্ছে আমি বিয়ের আগে প্রতারনা করার জন্য আমার ঈমান চলে গিয়েছিল। আর তার এক বছর পর আমি বিয়ে করেছি, আমার বিয়ে মনে হয় যায়েজ হয়নি। এমন কথা মনে আসছে। এমন চিন্তা করা কি আমার উচিত হচ্ছে শায়েখ??

1 Answer

0 votes
by (677,840 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


কুরআনের একটি আয়াতকে অস্বীকার করলে,আল্লাহর আকাট্য ভাবে প্রমানীত  যেকোনো ফরজ বিধান অস্বীকার করলে ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবে।
,
সুরা আল-বাকারাহ : ২/৩৯ ,২/৪১
وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِـَٔايٰتِنَآ أُولٰٓئِكَ أَصْحٰبُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خٰلِدُونَ
আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী ; অন্তকাল সেখানে থাকবে।

وَءَامِنُوا بِمَآ أَنزَلْتُ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَكُمْ وَلَا تَكُونُوٓا أَوَّلَ كَافِرٍۭ بِهِۦ ۖ وَلَا تَشْتَرُوا بِـَٔايٰتِى ثَمَنًا قَلِيلًا وَإِيّٰىَ فَاتَّقُونِ
আর তোমরা সে গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, যা আমি অবতীর্ণ করেছি সত্যবক্তা হিসেবে তোমাদের কাছে। বস্তুতঃ তোমরা তার প্রাথমিক অস্বীকারকারী হয়ো না আর আমার আয়াতের অল্প মূল্য দিও না। এবং আমার (আযাব) থেকে বাঁচ ।

সূরা আন-নিসা : ৪/৫৬, ৪/১৪০
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِـَٔايٰتِنَا سَوْفَ نُصْلِيهِمْ نَارًا كُلَّمَا نَضِجَتْ جُلُودُهُم بَدَّلْنٰهُمْ جُلُودًا غَيْرَهَا لِيَذُوقُوا الْعَذَابَ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَزِيزًا حَكِيمًا
এতে সন্দেহ নেই যে, আমার আয়াত সমুহের প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে, আমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, হেকমতের অধিকারী ।

الَّذِينَ يَتَرَبَّصُونَ بِكُمْ فَإِن كَانَ لَكُمْ فَتْحٌ مِّنَ اللَّهِ قَالُوٓا أَلَمْ نَكُن مَّعَكُمْ وَإِن كَانَ لِلْكٰفِرِينَ نَصِيبٌ قَالُوٓا أَلَمْ نَسْتَحْوِذْ عَلَيْكُمْ وَنَمْنَعْكُم مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ ۚ فَاللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ۗ وَلَن يَجْعَلَ اللَّهُ لِلْكٰفِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلًا

আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফিক ও কাফিরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন ।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এটি মনে আসাতে ঈমানের কোনো ক্ষতি হবেনা।

(০২)
পৃথিবীর বাহিরে জ্ঞান মানুষ কোনোভাবেই জানতে পারবেনা, এ কথা সঠিক নয়। 
এ কথা কুরআনে নেই।

এমন কথা মনে আসাতে ঈমানের কোনো ক্ষতি হবেনা।

(০৩)
এ জন্য আপনার গুনাহ হবেনা।
তবে সামর্থ থাকলে আর সেই ভিক্ষুক উপার্জনে অক্ষম হলে তাকে ভিক্ষা দেয়া উচিত ছিলো।

(০৪)
এ জন্য আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৫)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৬)
এমন কথা বলা যাবে।
এমন বিষয় মনে হওয়াতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৭)
সংরক্ষিত প্রকাশনার কোনো বইয়ের পিডিএফ এভাবে শেয়ার করা তাহা ডাউনলোড করা তাহা পড়া কোনোটাই জায়েজ নয়।

(০৮)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৯)
আপনি না বুঝে হুম বলেছেন,তাই ঈমান চলে যাবেনা।
শয়তানের আসলে এই ক্ষমতা নেই।
তবে দাজ্জালকে এই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

(১০)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(১১)
এমন চিন্তা করা উচিত হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...