আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (25 points)
আসসালামু ওয়ালাইকুম শায়খ,আমার জীবনের সকল ব্যাংকিং লেনদেনের বিবরণ নিচে উল্লেখ করা হলো। আপনি দয়া করে জানাবেন কোনটি সুদি লেনদেন হয়েছে এবং সেই সুদের দায় থেকে মুক্তি পেতে শুধু তাওবাহ করলেই চলবে নাকি অই টাকা দান করতে হবে??কোন কোন খাতে দান করা যাবে??

১)আমার মায়ের টাকা একটি স্বনামধন্য  ইসলামি ব্যাংকে ৫ বছর মেয়াদি ডিপোজিট একাউন্টে রেখেছিলাম।মেয়াদ পূর্ণ হবার ৪/৫ মাস আগে টাকা উত্তোলন করে নেই।৮৫০০০+ টাকা হয়েছিল কিন্তু অই টাকাতে কত টাকা লভ্যাংশ ছিল তা আমার জানা নেই।

২)আমার নিজের উপার্জিত টাকা একটি সুদী ব্যাংকে ডিপোজিট একাউন্টে রেখেছিলাম।২ বছর পর উত্তোলন করি এবং এখান থেকে ১০০০ টাকা বা তার কিছু কম বেশি সুদ পেয়েছিলাম।সেই সুদের টাকা কোনখাতে ব্যয় করেছি আমার একদমই মনে নেই।

৩)একটি স্বনামধন্য ইসলামি ব্যাংকে আমার মায়ের ১০০০০০ টাকা এফডিআর একাউন্টে রাখি এবং মেয়াদশেষে ১০০০০ টাকা লভ্যাংশ পেয়েছি কিছু টাকা বাড়িভাড়া র কাযে ব্যয় করেছি।
৪) আমার মায়ের টাকা একটি সুদী ব্যাংকে ডিপোজিট একাউন্টে রাখি কিন্তু ৩ মাস পরেই ভেংগে ফেলি কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো সুদ পাইনি।

বি:দ্র:উপরোক্ত সকল ক্ষেত্রেই একাউন্ট আমার নামে ছিল,টাকা  আমার মায়েরই হোক /আমার ই হোক।

1 Answer

0 votes
by (677,760 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন  

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
উক্ত ব্যাংকে ৫ বছর মেয়াদি ডিপোজিট একাউন্টে মোট কত টাকা রেখেছিলেন?
কত দিন পর পর কিস্তি দিতে হয়েছিলো?
প্রতি কিস্তিতে কত টাকা করে জমা করেছিলেন?
এগুলো হিসাব করে বের করতে হবে।

প্রয়োজনে হিসাব জমা বহির সাহায্য নিয়ে বা ব্যাংকের কর্মকর্তার সাহায্য নিয়ে হিসেবে বের করতে হবে।

এক্ষেত্রে আপনাদের জমা দেয়া টাকা হতে যাহা অতিরিক্ত হবে,সবই ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

স্বনামধন্য ইসলামি ব্যাংক হওয়া সত্ত্বেও লভ্যাংশ দান করতে হবে,এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
আপনি মোট যত টাকা সূদ পেয়েছিলেন,প্রবল ধারণা উপর ভিত্তি করে একটি এমাউন্ট নির্দিষ্ট ধরে নিয়ে সেই পরিমান টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

(০৩)
মেয়াদ শেষে যে ১০০০০ টাকা লভ্যাংশ পেয়েছেন এসবই ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

(০৪)
এখানে যেহেতু সূদ পাননি,তাই এক্ষেত্রে কোনো টাকা দান করতে হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...