আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)

আস্সালামুআলাইকুম শায়েখ,
 

১/সঞ্চয়পত্র হতে প্রাপ্ত মুনাফা কি হালাল?

আমার দুইটি ব্যাঙ্ক একাউন্ট রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো মুদারাবা সেভিংস একাউন্ট অন্যটি হলো জেনারেল সেভিংস একাউন্ট। 

২/ মুদারাবা সেভিংস একাউন্ট হতে প্রাপ্ত মুনাফা কি জায়েজ হবে আমার জন্য? 

৩/জেনারেল সেভিংস একাউন্ট হতে যে সুদ আসবে তা দিয়ে যদি আমি ব্যাংকের খরচ যেমন একাউন্ট মেইনটেনেন্স ফি দিয়ে দেই তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

শরীয়তের বিধান মতে সূদ দেওয়া,গ্রহন করা,তাতে সহযোগিতা করা সবই হারাম।

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨] 

হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮] 

হাদিস শরিফে  এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.

আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

দেশের বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামদের তাহকীক  মতে বাংলাদেশে কোন ব্যাংকই সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামীক রুলস মেনে ব্যাংকিং করছে না। 

তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে টাকা না রাখাই ভাল। কিন্তু প্রয়োজন হওয়ার কারণে কারেন্ট একাউন্ট খোলা জায়েজ। ডিপোজিট এ জাতীয় দীর্ঘমেয়াদী কোন একাউন্ট খোলা জায়েজ হবে না।

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

তবে যেহেতু বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকগুলো ছাড়া বাকি ব্যাংকগুলো আমভাবে সুদী কারবার করে থাকে। শরয়ী বিধানের কোন তোয়াক্কাই করে না। সেই হিসেবে ইসলামী ব্যাংকগুলো শরয়ী বিধান পালনের কিছুটা হলেও চেষ্টা করে থাকে। যদিও পূর্ণাঙ্গ শরয়ী রুলস তারাও অনুসরণ করে না বলেই আমরা জানি। কিন্তুর মন্দের ভাল অবশ্যই। তাই অন্য ব্যাংকে একাউন্ট খোলার তুলনায় ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা নিরাপদ বলেই মনে হয়। বাকি আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন।

আর যদি কারেন্ট একাউন্ট খোলা সম্ভব না হয়, তাহলে বাধ্য হলে ডিপোজিট ও দীর্ঘমেয়াদী একাউন্টও জায়েজ আছে। তবে ডিভিডেন্টটি সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবে।

فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ [٢:١٧٣

অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। (সূরা বাকারা-১৭৩)

আরো বিস্তারিত জানুনঃ   https://ifatwa.info/4260/

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১-২: যেহেতু দেশের কোনো ব্যাংকই সঠিক ভাবে ইসলামী রুলস মেনে কাজ করছেনা,তাই টাকা রেখে লভ্যাংশ গ্রহন করা যাবেনা।

ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রেও সতর্কতামূলক লভ্যাংশ ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে। সুতরাং এই মাসে পাওয়া ফিক্সড এমাউন্টের টাকা সুদের অন্তর্ভুক্ত ধরা হবে। রুলস গুলো জানতে উপরোক্ত লিংক ভিজিট করুন। 

৩. ব্যাংক একাউন্ট প্রতি বছরে একাউন্ট মেইন্টেনেন্স বাবদ নির্দিষ্ট পরিমান যে চার্জ নেয় এবং কার্ডের জন্য যে চার্জ নেয়, এটি আপনার উপর আবশ্যকীয় একটি  চার্জ। যাহা আপনাকে দিতেই হবে। সুতরাং এটি আপনার খরচের খাত, আপনার জন্য যেহেতু এই সূদের টাকা নিজের কোনো খরচের খাতেই ব্যবহার করা জায়েজ নেই, তাই এই খাতেও ব্যবহার করা জায়েজ নেই।

অতএব প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাংক এর একাউন্ট বা কার্ড মেইন্টেনেন্স ফি হিসেবে সূদের টাকা দেওয়া জায়েজ হবেনা। সূদের টাকা পুরাটাই উত্তোলন করে তাহা গরিব মিসকিনকে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিতে হবে।  

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/24953/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...