আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম।
গত বছরের শুরুতে আমাদের আব্বা মারা যাওয়ার পরে পেনশান সংক্রান্ত জটিলতার কারণে মীরাস বণ্টন করা হয়নি। আব্বা যেহেতু সরকারি চাকুরি করতেন, সেহেতু আব্বার ইন্তেকালের পরে কল্যাণ ভাতা বাবদ, দাফন- কাফন বাবদ, পেনশান বাবদ কিছু টাকা আমাদের হাতে এসেছে এবং কিছু টাকা ভবিষ্যতে আসার কথা।

এখন মীরাসের সঠিক বণ্টন সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলাম। উল্লেখ্য যে,
১. আমাদের দাদা বেঁচে নাই।
২. মীরাসের ভাগীদার বলতে আমাদের দাদী, আমাদের আম্মা এবং আমরা ৩ ভাই।

এখন যে প্রশ্নগুলো খুব বেশিই আমাদেরকে উদ্বেলিত করছে সেগুলো হচ্ছে,

১. আব্বা মারা যাওয়ার সময় যতটুকু সম্পদ মজুদ ছিলো, তার উপরেই কি মীরাস প্রযোজ্য হবে (যেমন: ব্যাংক ব্যালেন্স এবং নগদ অর্থ) নাকি মৃত্যুর আগে ও পরের সম্মিলিত সম্পদের উপরে মীরাস আরোপিত হবে(যেমন: পেনশান বাবদ প্রাপ্ত অর্থ যেটা অলরেডিই আমাদের হাতে এসেছে এবং যা ভবিষ্যতে আসবে+ রেখে যাওয়া ব্যাংক ব্যালেন্স)?

২. ক্রয়কৃত জমির বণ্টন কি জমির পরিমাপের উপরে নির্ভর করে হবে নাকি জমির বর্তমান বাজারমূল্য অনুসারে হবে?(যেমন: যদি ৩টি আলাদা জায়গায় জমি থাকে এবং ৩ জায়গায় জমির দামের তারতম্য থাকে; ধরলাম সর্বমোট জমির মূল্য ৬ লাখ টাকা এবং জমির পরিমাণ ১২ কাঠা। এখন যদি ওয়ারিশ থাকে ৬ জন তাহলে সবাই কি ১ লাখ সমমূল্যের জমির ভাগ পাবে নাকি সবাই ২ কাঠা করে জমির ভাগ পাবে (যেখানে কারোর ২ কাঠার মূল্য হতে পারে ৫০ হাজার আবার কারোর মূল্য হতে পারে ২ লাখ)??

৩. সম্পদের ওয়ারিশগণ কে কতটুকু সম্পদ পাবেন?
by
আসসালামু আলাইকুম। বাবার মৃত্যুর পর তার চাকুরীকালীন জমা হওয়া প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে এককালীন যে টাকাটা পেয়েছি, সেটার বণ্টণ কীভাবে হবে? সেটা কি বাবার সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে? 

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ ٭ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ۚ فَاِنۡ کُنَّ نِسَآءً فَوۡقَ اثۡنَتَیۡنِ فَلَہُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَکَ ۚ وَ اِنۡ کَانَتۡ وَاحِدَۃً فَلَہَا النِّصۡفُ ؕ وَ لِاَبَوَیۡہِ لِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَکَ اِنۡ کَانَ لَہٗ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّہٗ وَلَدٌ وَّ وَرِثَہٗۤ اَبَوٰہُ فَلِاُمِّہِ الثُّلُثُ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَہٗۤ اِخۡوَۃٌ فَلِاُمِّہِ السُّدُسُ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصِیۡ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ اٰبَآؤُکُمۡ وَ اَبۡنَآؤُکُمۡ لَا تَدۡرُوۡنَ اَیُّہُمۡ اَقۡرَبُ لَکُمۡ نَفۡعًا ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا ﴿۱۱﴾ 

আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচেছন: এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান; কিন্তু শুধু কন্যা দুইয়ের বেশী থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ, আর মাত্র এক কন্য থাকলে তার জন্য অর্ধেক। তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ; সে নিঃসন্তান হলে এবং পিতা-মাতাই উত্তরাধিকারী হলে তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ; তার ভাই-বোন থাকলে মাতার জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ; এ সবই সে যা ওসিয়াত করে তা দেয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও সন্তানদের মধ্যে উপকারে কে তোমাদের নিকটতর তা তোমরা জান না । এ বিধান আল্লাহর; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
(সুরা নিসা ১১ নং আয়াত)

(০১)
https://ifatwa.info/2701/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
সরকারি চাকুরিজীবী মারা যাওয়ার পর তাদের স্ত্রীকে যে পেনশনের টাকা সরকারের  পক্ষ থেকে দেওয়া হয়,এটা সরকারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রীর প্রতি দয়া, অনুগ্রহ, ইহসান।

এটার সাথে মৃত ব্যাক্তির মিরাছের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এটা শুধুমাত্র স্ত্রীই পাবে।

স্ত্রীই কেবল মাত্র এটা পাওয়ার হকদার।     
(ইমদাদুল ফাতওয়া ৪/৩৪২ মাকতাবায়ে যাকারিয়া)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
https://ifatwa.info/53308/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ
সরকারি চাকরিতে সরকারি নিয়ম অনুসারে চাকরিজীবী ব্যক্তিকে চাকরি শেষ হওয়ার পর প্রতি মাসে যে পেনশন দেওয়া হয় তা সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান স্বরূপ। উক্ত ব্যক্তির মালিকানাধীন সম্পদ নয়। কাজেই সেই সম্পদ পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ওয়ারিসরা পাবে না। বরং সরকারি আইন হিসেবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর যাকে দেওয়ার কথা বলা থাকে সেই তা প্রাপ্ত হবে।
সাধারণত, স্ত্রী সে টাকা পেয়ে থাকে। কাজেই সরকারি আইন হিসেবে স্ত্রী সে টাকা পাবে। ওয়ারিসরা তাতে যুক্ত হবে না।
আল বাহরুর রায়েক ৯/৩৬৫; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ২/৪

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
পেনশনের টাকা সরকারি আইন হিসেবে আপনার বাবার মৃত্যুর পর যাকে দেওয়ার কথা বলা থাকে সেই তা প্রাপ্ত হবে।
এক্ষেত্রে আপনার মায়ের কথা উল্লেখ থাকলে আপনার মা পাবে।
আর আপনাদের কথা উল্লেখ থাকলে আপনারা পাবেন।

এ টাকা সকলের মাঝে মিরাস হিসেবে বন্টন হবেনা।

আপনার বাবার রেখে যাওয়া ব্যাংক ব্যালেন্স মিরাস হিসেবে বন্টন হবে।

(০২)
তিনটি আলাদা জায়গায় জমি থাকলে তিনটির প্রত্যেকটি জমিতেই সকল ওয়ারিশগন অংশিদার হবে।

এক্ষেত্রে একেক স্থানের জমি একেক জন নিলে সেক্ষেত্রে সকলের সন্তুষ্টি চিত্তে বর্তমান মূল্য হিসাব করে তারা জমি বন্টন করে নিতে পারে।
বিষয়টি অনেকটা বদলের অন্তর্ভুক্ত। 

যদি সকলেই সন্তুষ্ট না হয়,সেক্ষেত্রে তিনটির প্রত্যেকটি জমিতেই সকল ওয়ারিশগন অংশিদার হয়ে নিজ মালিকানার জমি অপরের সাথে বদল করতে পারে।

(০৩)
এক্ষেত্রে আপনার দাদি (মাইয়্যিতের মা) ছয় ভাগের এক ভাগ সম্পদ পাবে।

আপনার মা (মাইয়্যিতের স্ত্রী) আট ভাগের এক ভাগ সম্পদ পাবে।

আপনারা তিন ভাই (মাইয়্যিতের ৩ ছেলে) আসাবা হিসেবে বাকি সম্পদ নিজেদের মাঝে সমান ভাবে ভাগ করে নিবে।
,
আপনার বাবার সমুদয় সম্পত্তি মোট ৭২ ভাগ হবে।

আপনার দাদি (মাইয়্যিতের মা) ছয় ভাগের এক ভাগ হিসেবে ১২ ভাগ পাবে।

আপনার মা (মাইয়্যিতের স্ত্রী) আট ভাগের এক ভাগ হিসেবে ৯ ভাগ পাবে।

আপনারা তিন ভাই (মাইয়্যিতের ৩ ছেলে) আসাবা হিসেবে ১৭+১৭+১৭ করে  মোট ৫১ ভাগ পাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...