আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!


১)কেউ যদি কারো গিবত করে আর আমি সেখানে উপস্থিত থাকি এবং তার কথা শুনি কিন্তু এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য বা কথা না বলি তাহলে কি আমি এই গিবত এর কারণে পাপের ভাগিদার হব?অনেক সময় দেশের সেলিব্রিটি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের অনুপস্থিতিতে গিবত করা হয় , কিন্তু তাদের সাথে সাক্ষাত করে ক্ষমা নেওয়ার ব্যবস্থা তো আমাদের মত সাধারণ মানুষ করতে পারবে না তাহলে তা ক্ষমার উপায় কি?


২) ধরুন,কারো গিবত করেছিলাম কিন্তু পরে সেই কথা আর মনে পরে নাই।তাই আর সেই ব্যক্তিদের কাছ থেকে তো ক্ষমা নেওয়া সম্ভব নয়।তাহলে সেই গিবত এর পাপ এভাবে দুয়া করলেই কি ক্ষমা হতে পারে যে, "আল্লাহ আপনি আমার সমস্ত গিবতের গুনাহ মাফ করে দিন!" ?


৩) উস্তাদ, আপনার কাছে একটা বিষয়ে মতামত চাই।আমি এখন যদি হিদায়াতের পূর্বের জীবনের কথা স্মরণ করি তখন আমি কেমন নির্বাক হয়ে পরি!তাহলে কেমন জানি ক্ষমা চাওয়ার মানসিকতা তেমনভাবে তৈরি হয় না।এখন কি আমি আমার পূর্বের জীবনকে ভূলে যাওয়ার চেষ্টা করব?


৪) নিজে যে আমল করি না বা নিজে যে পাপ থেকে বেঁচে থাকতে পারি না সে আমল করতে নির্দেশ দিতে কিংবা সে পাপ থেকে বেঁচে থাকতে নির্দেশ দিতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন। কিন্তু যদি আমি আগে যে আমল করতাম না সেটা যদি এখন করি বা আগে যে পাপ করতাম সে পাপ যদি এখন না করি তাহলে সেই আমল করতে বা পাপ থেকে বাঁচতে কি অন্য কাউকে নসিহাহ করতে পারব?


৫)দুআ'র মাঝে আমাদের আমলের হাদিয়া কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে হযরত মুহাম্মাদ (স.) এর রুহ মুবারকে পৌঁছানোর দুআ করা হয় কেন?(তিনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ আমলী ব্যক্তি,আর আমরা তো খুব সামান্যই আমল করি)


৬)কোনো নন মাহরাম গীবত করার পরও কি তার কাছে আগে ক্ষমা নিতে হবে?


৭)কেউ কেউ বলেন বুধবার ও জন্মবারে হাত-পায়ের নখ ও চুল কাটা বা ছোট করা যায় না।এটা কি ঠিক?


জাযাকাল্লাহ!

1 Answer

0 votes
by (713,320 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
কোনো মুসলমানের অগোচরে তার এমন বিষয় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করা, যা শুনলে সে তা অপছন্দ করবে।এটা গীবত। গীবতের ব্যখ্যা সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1715


হযরত মু'আবিয়া ইবনে হাইদাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
معاوية بن حيدة رضي الله عنه ، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ( أَتَرعُونَ عَنْ ذِكْرِ الْفَاجِرِ ! اذْكُرُوهُ بِمَا فِيهِ كَي يَعْرِفَهُ النَّاسُ وَيَحْذَرَهُ النَّاسُ ). 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,তোমরা কি ফাসিকের সমালোচনা থেকে বিরত থাকবে?বরং তোমরা ফাসিকের কৃত অপরাধ নিয়ে সমালোচনা করো,যাতেকরে লোকজন সেই অপরাধ থেকে বিরত থাকে।আস-(সুনানুল কুবরা-বায়হাক্বী-১০/২১০) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2114

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কেউ যদি কারো গিবত করে আর আপনি সেখানে উপস্থিত থাকেন এবং তার কথা শুনেন, কিন্তু এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য বা কথা না বলেন, তাহলে এই গিবতের কারণে আপনি পাপের ভাগিদার হবেন না।
তবে শর্ত হল, তখনো মনে মনে গীবতকে মন্দ ভাবতে হবে।কখনই উপভোগ করা যাবে না।
দেশের কোনো সেলিব্রিটি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের অনুপস্থিতিতে যদি তাদের প্রকাশ্য মন্দ বিষয় সম্পর্কে গিবত করা হয় , তাহলে সেক্ষেত্রেও গীবতের গোনাহ হবে না।


(২) কেউ যদি কারো গিবত করে এবং পরবর্তীতে সে ভুলে যায়, কোনো কথাই আর মনে না পরে । এবং সেই ব্যক্তিদের কাছ থেকে তো ক্ষমা নেওয়া সম্ভবপর না হয়।তাহলে সেই গিবত এর পাপ মাফ হওয়ার জন্য  এভাবে দুয়া করলেই হবে যে, "হে আল্লাহ! আপনি আমার সমস্ত গিবতের গুনাহ মাফ করে দিন!" 


(৩) আপনি আপনার পূর্বের জীবনকে ভূলে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।


(৪) নিজে আমল না করলে বা যে পাপ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হয়নি,সেই আমল করতে কিংবা সে পাপ থেকে বেঁচে থাকতে নির্দেশ দেওয়া যাবে।এতে কোনো সমস্যা হবে না। 

(৫)দুআ'র মাঝে আমাদের আমলের হাদিয়া কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে হযরত মুহাম্মাদ (স.) এর রুহ মুবারকে পৌঁছানোর দুআ করা হয়। এটা এজন্য যাতে মুহাম্মদ সাঃ এর উসিলায় আমাদের দু'আও কবুল হয়ে যায়।

(৬)কোনো নন মাহরামের গীবত করলে যদি সেই গীবত উক্ত নন মাহরামের নিকট গিয়ে পৌছে, তাহলে তার নিকট ক্ষমা চাইতে হবে।আর না পৌছলে তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে না।বরং শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেই হবে।

(৭)শুক্রুবারে হাত-পায়ের নখ ও চুল কাটা বা ছোট করা  মুস্তাহাব।তবে সাপ্তাহের যেকোনো দিন করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (713,320 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...