আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in সালাত(Prayer) by (44 points)

আসসালামু আলাইকুম 
 

১) প্রত্যেক ফরয নামাজের  পর  কি ১০ বার করে দুরুদে ইব্রাহিম পড়তে হয়? এটা না পড়লে নামাজ নাকি ৭ আসমানের মধ্যে ঝুলে থাকে। নামাজ কবুল হয় না। এ কথাটি কতটুকু সত্য? 

 

২) প্রত্যেক নামাজের ওয়াক্তে  কি ১০ বার করে দুরুদে ইব্রাহিম পড়তে হয়? এটা না পড়লে নামাজ নাকি ৭ আসমানের মধ্যে ঝুলে থাকে। নামাজ কবুল হয় না। এ কথাটি কতটুকু সত্য?

 

৩) ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বর্তমানে জোহরের নামাজের ওয়াক্ত দুপুর ১২.০০ টায় শুরু হয়। আর আসরের ওয়াক্ত শুরু হয় ৪.৩৫টা  এ। তাহলে আসরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগে জোহরের নামাজের ওয়াক্ত কি থাকে? যেমন: দুপুর ১২.০০ টা থেকে শুরু করে  ৪.৩৫ টা এর আগে যেকোনো সময়  কেউ জোহরের নামাজ পড়লে তখন কি তার জোহরের নামাজ কি কাযা হবে নাকি কাযা হবে না?

 

৪) আমাকে একজন বলেছে সূর্যাস্ত ২১ মিনিট ধরে চলতে থাকে।  তাই আসরের নামাজ সূর্য অস্ত যাওয়ার ২১ মিনিট আগে পড়তে হবে এরপর  পড়লে হবে না। তখন নিষিদ্ধ সময় চলে।  এ কথাটি কি সঠিক? 

 

৫) রাতকে ৩ ভাগে কিভাবে ভাগ করা হয়? এশার নামাজ ও তাহাজ্জুদের কারণে এ বিষয়ে জানতে চাই।



 

জাযাকাল্লাহু খাইরান 

1 Answer

+1 vote
by (684,760 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(১.২)
এগুলো ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা।
কুরআন হাদীসে এর কোনো সত্যতা নেই।

(০৩)
আসরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত জোহরের নামাজের ওয়াক্ত থাকে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে দুপুর ১২.০০ টা থেকে শুরু করে  ৪.৩৫ টা  এর আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় কেউ জোহরের নামাজ পড়লে তখন তার জোহরের নামাজ আদায় হবে।

এটি কাজা হিসেবে নয়।
বরং পূর্ণ ভাবে ওয়াক্ত মতোই আদায় হবে।

নামাজের ওয়াক্তের শুরু আর শেষ বুঝাতে হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَيَّاشِ بْنِ أَبِي رَبِيعَةَ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حَكِيمٍ، وَهُوَ ابْنُ عَبَّادِ بْنِ حُنَيْفٍ أَخْبَرَنِي نَافِعُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَمَّنِي جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ عِنْدَ الْبَيْتِ مَرَّتَيْنِ فَصَلَّى الظُّهْرَ فِي الأُولَى مِنْهُمَا حِينَ كَانَ الْفَىْءُ مِثْلَ الشِّرَاكِ ثُمَّ صَلَّى الْعَصْرَ حِينَ كَانَ كُلُّ شَيْءٍ مِثْلَ ظِلِّهِ ثُمَّ صَلَّى الْمَغْرِبَ حِينَ وَجَبَتِ الشَّمْسُ وَأَفْطَرَ الصَّائِمُ ثُمَّ صَلَّى الْعِشَاءَ حِينَ غَابَ الشَّفَقُ ثُمَّ صَلَّى الْفَجْرَ حِينَ بَرَقَ الْفَجْرُ وَحَرُمَ الطَّعَامُ عَلَى الصَّائِمِ . وَصَلَّى الْمَرَّةَ الثَّانِيَةَ الظُّهْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّ كُلِّ شَيْءٍ مِثْلَهُ لِوَقْتِ الْعَصْرِ بِالأَمْسِ ثُمَّ صَلَّى الْعَصْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّ كُلِّ شَيْءٍ مِثْلَيْهِ ثُمَّ صَلَّى الْمَغْرِبَ لِوَقْتِهِ الأَوَّلِ ثُمَّ صَلَّى الْعِشَاءَ الآخِرَةَ حِينَ ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ ثُمَّ صَلَّى الصُّبْحَ حِينَ أَسْفَرَتِ الأَرْضُ ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَىَّ جِبْرِيلُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ هَذَا وَقْتُ الأَنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِكَ . وَالْوَقْتُ فِيمَا بَيْنَ هَذَيْنِ الْوَقْتَيْنِ " .

ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জিবরীল (আঃ) কা'বা শরীফের চত্বরে দু'বার আমার নামাযে ইমামতি করেছেন। তিনি প্রথমবার যুহরের নামায আদায় করালেন যখন প্রতিটি জিনিসের ছায়া জুতার ফিতার মত ছিল। অতঃপর তিনি আসরের নামায আদায় করালেন যখন কোন বস্তুর ছায়া তার সমান ছিল। অতঃপর মাগরিবের নামায আদায় করালেন যখন সূর্য ডুবে গেল এবং যে সময়ে রোযাদার ইফতার করে। অতঃপর ইশার নামায আদায় করালেন যখন লাল বর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল। অতঃপর ফযরের নামায আদায় করালেন যখন ভোর বিদ্যুতের মত আলোকিত হল এবং যে সময় রোযাদারের উপর পানাহার হারাম হয়। তিনি (জিবরীল) দ্বিতীয় এবং পূর্ববর্তী দিন ঠিক যে সময় আসরের নামায আদায় করেছিলেন। অতঃপর আসরের নামায আদায় করালেন যখন কোন বস্তুর ছায়া তার দ্বিগুণ হল। অতঃপর মাগরিবের নামায আদায় করালেন পূর্বের দিনের সময়ে। অতঃপর ‘ইশার নামায আদায় করালেন যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ চলে গেল এবং ফযরের নামায আদায় করালেন যখন যমিন আলোকিত হয়ে গেল। অতঃপর জিবরীল (আঃ) আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে মুহাম্মাদ! এটাই হল আপনার পূর্ববর্তী নবীদের (নামাযের) ওয়াক্ত। নামাযের ওয়াক্ত এই দুই সীমার মাঝখানে। 
(হুকুমঃ হাসান সহীহ।)
 (তিরমিজি ১৪৯ মিশকাত— (৫৮৩), ইরওয়া— (২৪৯), সহীহ আবু দাউদ- (৪১৬)।

(০৪)
তার কথাটি সঠিক নয়।
সেই সময়েও ঐ দিনের আসরের নামাজ পড়া জায়েজ আছে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৫)
https://ifatwa.info/52848/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী ইশার নামাযের সময় পশ্চিমাকাশের লালিমা দূরিভূত হয়ে যে সাদা আভা দেখা দেয় তা দূরিভূত হবার পর থেকে নিয়ে রাতের তিন ভাগের এক ভাগের মাঝে পড়া মুস্তাহাব।

তিনভাগ অতিক্রান্ত হবার পর থেকে নিয়ে অর্ধেক রাত পর্যন্ত পড়া জায়েজ। এতে মাকরুহ হবেনা।

আর অর্ধেক রাত থেকে নিয়ে সুবহে সাদিক পর্যন্ত পড়া মাকরূহের সাথে জায়েজ। অর্থাৎ নামায আদায় হয়ে যাবে। বাকি বিলম্ব করার কারণে মাকরূহ হবে। {হেদায়া-১/৫০-৫১, শরহে নুকায়া-১/৫৩-৫৫, কাবীরী-২২৯-২৩৫. তামহীদ-৮/৯২}

★ ফজরের ওয়াক্তের আগ পর্যন্ত এশার নামায পড়া যাবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ عُبَيْدِ بْنِ جُرَيْجٍ , أَنَّهُ قَالَ لِأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: مَا إِفْرَاطُ صَلَاةِ الْعِشَاءِ؟ قَالَ: «طُلُوعُ الْفَجْرِ»

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হল, ইশার নামাযের সময় কখন শেষ হয়? তখন তিনি বলেন, ফজরের সময় হলে। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৯৫৯, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৭৬২}
,
★তবে অর্ধেক রাত অতিবাহিত হওয়ার পর ইশার  নামাজ পড়া মাকরুহ।
অর্থাৎ এক্ষেত্রে যদিও ইশার নামাজ আদায় হয়ে যাবে,তবে মাকরুহ হবে।

সুবহে সাদিক পর্যন্ত ঈশার ওয়াক্ত বাকি থাকে।তবে রাতের এক তৃতীয়াংশের আগে পড়া মুস্তাহাব।
কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/২৫৮

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-

وَإِنَّ أَوَّلَ وَقْتِ الْعِشَاءِ الْآخِرَةِ حِينَ يَغِيبُ الْأُفُقُ، وَإِنَّ آخِرَ وَقْتِهَا حِينَ يَنْتَصِفُ اللَّيْلُ،

নিশ্চয় ইশার নামাযের সময় শুরু হয় পশ্চিমাকাশের শাদা আভা দূরিভূত হওয়া থেকে। আর শেষ সময় হল অর্ধেক রাত অতিক্রান্ত হলে। [মানে এটি মাকরূহ ছাড়া মুবাহ সময়, এরপরও সময় থাকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত, কিন্তু সেটি মাকরূহ ওয়াক্ত, তাই সময় শুধু অর্ধেক রাত পর্যন্ত বলা হয়েছে] 

{মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৭১৭২, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৫১, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৯৪১}

আরো জানুনঃ 

শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 59 views
0 votes
1 answer 271 views
0 votes
1 answer 74 views
asked Jul 13, 2022 in সালাত(Prayer) by Alif (18 points)
...