জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
মূলত জুয়া বলা হয়, যা লাভ ও লোকশানের মাঝে ঝুলন্ত থাকে, এমন অর্থের খেলার নাম জুয়া।
كُلُّ شَيْءٍ مِنَ الْقِمَارِ فَهُوَ مِنَ الْمَيْسِرِ حَتَّى لَعِبِ الصِّبْيَانِ بِالْجَوْزِ.
প্রত্যেক বাজি মাইছির তথা জুয়ার অন্তর্ভূক্ত এমনকি শিশুদের হারজিতের খেলাও জুয়ার অন্তর্ভূক্ত। [তাফসীরে ইবনে কাসীর-২/১১৬, সূরা মায়িদা, আয়াত নং-৯০-৯৩]
,
শরীয়তের বিধান মতে জুয়া স্পষ্ট আকারে হারাম।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا [٢:٢١٩]
তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে,তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। [সূরা বাকারা-২১৯]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٥:٩٠]
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ [٥:٩١]
হে মুমিনগণ,এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে? [সূরা মায়িদা-৯০-৯১]
আরো জানুনঃ
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এখানে লাভ লোকসান উভয়টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সুতরাং এখানে জুয়ার অর্থ পাওয়া যাচ্ছে।
বিধায় এটি জায়েজ নেই।
ইলেকট্রনিক সিগারেটের ভেতরে থাকে নিকোটিনের দ্রবণ যা ব্যাটারির মাধ্যমে গরম হয়। এর ফলে ধোঁয়া তৈরি হয়। এটি মস্তিষ্কে ধূমপানের মতো অনুভূতির সৃষ্টি করে।
গবেষকরা বলছেন, যারা ই-সিগারেট সেবন করছেন তাঁদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। দি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ই-সিগারেটে আছে জীবাণুনাশক ফরমালডিহাইড,যেটি ক্যানসার তৈরির উপাদান।
জানুয়ারির ২৮ তারিখে ক্যালিফোর্নিয়া হেলথ ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ই-সিগারেট মানুষের জন্য হুমকি স্বরূপ এবং এটিকে আইনের আওতায় আনা উচিত।
ই সিগারেটে আরো কিছু বিষয় রয়েছেঃ
ই-লিকুইড : ই-লিকুইড অথবা ই-জুস। এগুলো এমন এক ধরনের দ্রবণ যেগুলো তাপ উৎপাদন করে এবং অ্যারোসোলে রূপান্তর হয়। যেটা বাষ্পায়িত হয়ে বুকের ভেতরে প্রবেশ করে।
নিকোটিন : ই-সিগারেট এবং সাধারণ সিগারেট দুই ধরনের সিগারেটেই নিকোটিন ( নেশা জাতীয় দ্রব্য) থাকে। এটি মস্তিস্কের মধ্য স্নায়ুতে উদ্দীপকের কাজ করে। এটি রক্তচাপ, শ্বাসপ্রশাস এবং হৃদস্পন্দন বাড়ায়।
‘মানুষ সাধারণত ধূমপান করে নিকোটিনের কারণে’, বলে জানিয়েছেন গবেষক ডাক্তার মেসিজ গনিওইজ। তিনি নিউইর্কের রসওয়েল পার্ক সেন্টারের ইনস্টিটিউট ইন বাফেলো এর টোবাকো এবং ই-সিগারেট বিশেষজ্ঞ। ‘নিকোটিনের নেশা তৈরি করে। কিন্তু এটি ক্যানসার তৈরির কারণ নয়। কিন্তু ই-লিকুইডে থাকা অন্যান্য উপাদান বেশ উদ্বেগ জনক।’
ফ্লেভোরিংস : ডাক্তার গনিওইজ জানান, একশোরও বেশি স্বাদের ই-সিগারেট রয়েছে। চেরি, চিজ কেক, সিনামোন, টোবাকো ইত্যাদি। এগুলো সব গন্ধযুক্ত খাবারে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে ডায়াসেটিল রয়েছে। এটি সাধারণত পপকর্নের মাখনযুক্ত গন্ধ তৈরি করে। এর সাথে ফুসফুসের রোগের একটি যোগসূত্র রয়েছে এবং এটি বেশ ক্ষতিকরও।
প্রোপাইলিন গ্লাইকোল (পিজি) : পিজি গবেষণাগারে বানানো লিকুইড যা খাদ্য, ওষুধ এবং কসমেটিক বানানোর জন্য নিরাপদ। এটি রক-কনসার্টে কৃত্রিম ধোঁয়া তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি ফুসফুস এবং চোখে বিরক্তির উদ্রেগ করে। এটি ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের জন্য ক্ষতিকর। যেমন : অ্যাজমা ও এমপাইসিমা।
গ্লিসারিন : এটি গন্ধহীন এবং বর্ণহীন। তরল গ্লিসারিন অনেকটা মিষ্টি স্বাদের হয়। এটি বিভিন্ন পণ্যে পাওয়া যায়।
ধোয়া তৈরির তরল : ই-সিগারেটে ধোয়া তৈরির জন্য এক ধরনের ই-লিকুইড বা তরল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ধোয়া শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এমন ক্ষতি সত্যিকারের সিগারেটেও হয় না বলে জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালোফোর্নিয়ার অধ্যাপক বেনোউইটজ।
ই-সিগারেটে যেসব ক্যামিক্যাল রয়েছে : ই-সিগারেটে রয়েছে ফরমালডিহাইড ও এসিটালডিহাইড নামের দুটি রাসায়নিক দ্রব্য। এই উপাদান ই-লিকুইডের তাপমাত্রা বাড়ায়। দুর্ভাগ্যবশত এর ফলে আরো নিকোটিন তৈরি হয়। এ মধ্যে থাকা একরোলিন উত্তপ্ত গ্লিসারিন থেকে গঠিত। এটি ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।ধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
বস্তুকণা এবং ধাতু
ই-সিগারেটের এরোসোল রয়েছে যেটি ক্ষতিকারক। এটি শরীরে শিরাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ সৃষ্টি করে। এবং স্নায়ুর ওপর চাপ ফেলে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত বা টক্সিক ধাতু ই-সিগারেটের এরোসোলের ভেতর পাওয়া গেছে। যেমন : টিন, নিকেল, ক্যাডিয়াম, লেড ও মারকারি।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, لا ضرر ولا ضرار ক্ষতি ও ক্ষতি সাধনের কোন অনুমতি নেই। (সুনানে দারাকুতনী ৩০৭৯)