আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (43 points)

আসসালামু আলাইকুম 

 

১) একজন মানুষ অসুস্থ কেন হয়?  অসুস্থ হওয়া, এটা কি আল্লাহর পরীক্ষা বা আল্লাহর শাস্তি হতে পারে? 

 

১.১)যদি আল্লাহর পরীক্ষা বা আল্লাহর শাস্তি না হয় তাহলে এর বাইরে কি অন্য কিছু হতে পারে যেমন নিজের কর্মফল বা অন্যের কর্মফল ?  

 

১.২) যদি অসুস্থতা আল্লাহর শাস্তি হয় তাহলে কিভাবে বুঝা যাবে যে সেটা আল্লাহর শাস্তি? 

 

২) কেউ কি বালেগ হওয়ার পর তার নিজের নতুন নাম কি রাখতে পারবে?  আর রাখলে কি আকিকা আবার করতে হবে? 

 

২.১) একাধিক নাম কি রাখতে পারবে আর পূর্বের কোন নাম চাইলে কি বাদ দিতে পারব? এজন্য কি কোন কাজ করতে হবে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে? 


 

৩) সুস্থতা কি রিজিকের অন্তর্ভুক্ত নাকি নিয়ামতের অন্তর্ভুক্ত ?


 

৪) পশ্চিম দিকে পা দেওয়ার বিধান কী? কোন ওযর থাকলে পা দিলে কি গুনাহ হবে? আর ওযর না থাকলে পা দিলে কি হুকুম?   


 

৫) বান্দা গুনাহ করলে সে কি রিজিক থেকে মাসনুন হয়ে যায়? 




 

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (685,520 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
অসুস্থতা আল্লাহর নেয়ামত,পাশাপাশি এটি  পরিক্ষা।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ لَنَبۡلُوَنَّکُمۡ بِشَیۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَ الۡجُوۡعِ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَ الۡاَنۡفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۵۵﴾ۙ 

আর আমরা তোমাদেরকে অবশ্যই পরিক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদেরকে।
(সুরা বাকারা ১৫৫)

কেউ অসুস্থ হলেই এই কথা ভাবা যাবে না যে, এটি তার গুনাহের ফসল। আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-ও মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়েছেন।
,
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেয়ে বেশি রোগ যন্ত্রণা ভোগকারী অন্য কাকেও দেখিনি। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৬)

অসুস্থ হওয়ার পর ধৈর্য ধারন করলে আল্লাহ তায়ালা গুনাহ মাফ করেন।

আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গেলাম। তখন তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তো ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বললেন, হ্যাঁ। তোমাদের দু’ব্যক্তি যতটুকু জ্বরে আক্রান্ত হয়, আমি একাই ততটুকু জ্বরে আক্রান্ত হই। আমি বললাম, এটি এ জন্য যে, আপনার জন্য দ্বিগুণ সওয়াব। তিনি বললেন, হ্যাঁ তাই। কেননা যেকোনো মুসলিম দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়, তা একটা কাঁটা কিংবা আরো ক্ষুদ্র কিছু হোক না কেন, এর মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলোকে মুছে দেন, যেমন গাছ থেকে তার পাতাগুলো ঝরে পড়ে। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৮)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে কষ্ট ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফোটে, এসবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪১)

★তবে শর্ত হলো ধৈর্য ধারন করতে হবে।

(১.১)
এটি আল্লাহর পরীক্ষা। 
কর্মফল নয়।

(১.২)
এটি শাস্তি নয়।

(০২)
হ্যাঁ, নতুন নাম রাখতে পারবে।
এক্ষেত্রে পুনরায় আকীকা করতে হবেনা।

(২.১)
একাধিক নাম রাখতে পারবে।
তবে এক্ষেত্রে যেকোনো একটি নামে প্রসিদ্ধ হওয়া চাই,যেই নামে কিয়ামতের ময়দানে ডাকা হবে।
,
আর পূর্বের কোন নাম চাইলে বাদ দিতে পারবে।
এজন্য ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে কোন কাজ করতে হবেনা।

(০৩)
সুস্থতা নিয়ামতের অন্তর্ভুক্ত।
এটিকে রিজিকের অন্তর্ভুক্ত বললেও সমস্যা হবেনা।  কেননা রিজিকও আল্লাহর নিয়ামত।

(০৪)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
 الفتاوى الهندية- ويكره مد الرجلين إلى الكعبة في النوم وغيره عمدا (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الباب الخامس في آداب المسجد والقبلة والمصحف-5/319 
কাবার দিকে ইচ্ছাকৃত পা লম্বা করা মাকরূহ। ঘুমন্ত বা জাগ্রত অবস্থায়। {৫/৩১৯,} আরো বর্ণিত রয়েছে..... আল মুহিতুল বুরহানী-৮/১০, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৯/১৭৪} 

পশ্চিম দিকে পা দেয়ার ক্ষেত্রে মাসয়ালা হলোঃ-
অনিচ্ছায় হলে সমস্যা নেই।কিন্তু অসম্মান প্রদর্শনের নিয়তে হলে ঈমান চলে যাবার আশংকা থাকবে। ফুকাহায়ে কেরামদের ভাষ্যমতে স্বাভাবিক অবস্থায় পশ্চিম দিকে পা রাখা মাকরুহ।

তবে ওযর বশত হলে গুনাহ হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৫)
গুনাহের কাজের দরুন বান্দা তার প্রাপ্য রিযিক থেকে বঞ্চিত হয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عِيسَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ يَزِيدُ فِي الْعُمْرِ إِلاَّ الْبِرُّ وَلاَ يَرُدُّ الْقَدَرَ إِلاَّ الدُّعَاءُ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيُحْرَمُ الرِّزْقَ بِالذَّنْبِ يُصِيبُهُ " .

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সৎকর্ম ব্যতীত অন্য কিছু আয়ুস্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ব্যতীত অন্য কিছুতে তাকদীর রদ হয় না। মানুষ তার পাপকাজের দরুন তার প্রাপ্য রিযিক থেকে বঞ্চিত হয়।
(ইবনে মাজাহ ৪০২২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...