আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
105 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আমি ছবি আকতে ভালোবাসি (প্রানীর ছবি ছাড়া)। আমি গাছপালা,ঘরবাড়ি,নদীনালা ইত্যাদির ছবি আকি। এখন আমার প্রশ্ন হলো আধুনিক বিজ্ঞানের মতে গাছের ও তো প্রান আছে। তাহলে গাছ আকা কী জায়েজ!

আর এমনি কী প্রানী ছাড়া অন্যান্য ছবি আকার জন্য আমাকে জবাবদিহিতা করতে হবে!? বা স্বাভাবিক ছবি আকা কী অনুত্তম কাজ?

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا - قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - يَقُولُ : " كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ ، يُجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا ، فَيُعَذِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ " . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : فَإِنْ كُنْتَ لَا بُدَّ فَاعِلًا فَاصْنَعِ الشَّجَرَ وَمَا لَا رُوحَ فِيهِ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক ছবি প্রস্তুতকারী জাহান্নামী। সে যতগুলো ছবি তৈরি করেছে (কিয়ামতের দিন) সেগুলোর মধ্যে প্রাণ দান করা হবে এবং জাহান্নামের শাস্তি দেয়া হবে। ইবনু ‘আব্বাস  বলেন, যদি তোমাকে একান্তই ছবি তৈরি করতে হয়, তাহলে গাছ-গাছড়া এবং এমন জিনিসের ছবি তৈরি কর যার মধ্যে প্রাণ নেই। (সহীহ : বুখারী ২২২৫, মুসলিম ৫৬৬২, আহমাদ ২৮১০, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ৩০৫৪)

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى ﷺ يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون

আ’মাশ তিনি  মুসলিম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুকের  সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিন ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্  রাযি.-এর নিকট শুনেছি, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।’ (বুখারী ২/৮৮০)

 প্রিয় ভাই/বোন! বৃক্ষ-লতা, প্রাকৃতিক দৃশ্য, কা‘বা গৃহ, মসজিদে নববী, বায়তুল আক্বছা বা অনুরূপ পবিত্র স্থানসমূহের ছবি, যদি তাতে কোন প্রাণীর ছবি না থাকে এসব অংকন করা যাবে। এর দলিল হল,

সাঈদ ইবন আবিল হাসান রহ. বলেন,

كُنْتُ عِنْدَ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، إِذْ أَتَاهُ رَجُلٌ ، فَقَالَ : يَا أَبَا عَبَّاسٍ ، إِنِّي إِنْسَانٌ ، إِنَّمَا مَعِيشَتِي مِنْ صَنْعَةِ يَدِي ، وَإِنِّي أَصْنَعُ هَذِهِ التَّصَاوِيرَ ، فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : لَا أُحَدِّثُكَ إِلَّا مَا سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ ، يَقُولُ ، سَمِعْتُهُ يَقُولُ : ” مَنْ صَوَّرَ صُورَةً فَإِنَّ اللَّهَ مُعَذِّبُهُ حَتَّى يَنْفُخَ فِيهَا الرُّوحَ ، وَلَيْسَ بِنَافِخٍ فِيهَا أَبَدًا ، فَرَبَا الرَّجُلُ رَبْوَةً شَدِيدَةً وَاصْفَرَّ وَجْهُهُ ” ، فَقَالَ : وَيْحَكَ إِنْ أَبَيْتَ إِلَّا أَنْ تَصْنَعَ ، فَعَلَيْكَ بِهَذَا الشَّجَرِ كُلِّ شَيْءٍ لَيْسَ فِيهِ رُوحٌ

আমি একদা আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি.-এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এল। লোকটি এসে বলল, হে ইবন আব্বাস! আমার উপার্জনের নির্ভরতা আমার হাতের সৃষ্টির উপর, আমি ছবি আঁকি। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. বললেন, আমি তোমার কাছে সেই কথা বর্ণনা করছি, যা আমি রাসূল -কে বলতে শুনেছি, আমি রাসূল -কে এটা বলতে শুনেছি যে, যেই ব্যক্তি ছবি বানায়, তাকে আল্লাহ তাআলা শাস্তি দিতে থাকবেন যতক্ষণ না সে উক্ত ছবিতে প্রাণ দিতে পারে, আর সেই ব্যক্তি কোনদিন তাতে প্রাণ দিতে পারবে না। একথা শুনে লোকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আর তার চেহারা পাংশু হয়ে গেল। তখন আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. বললেন, আরে ভাই! যদি তুমি বানাতেই চাও, তাহলে গাছের ছবি আঁকো। আর প্রত্যেক ঐ বস্তুর ছবি আঁকো, যাতে প্রাণ নেই। (বুখারী ২১১২)

*** গাছের প্রাণ আছে একথা ঠিক নয়; বরং গাছের জীবন আছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاء كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ

এবং জীবন্ত সব কিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না? (সূরা আম্বিয়া ৩০)

ফাতাওয়া শা’রাবী (الفتاوي للشعراوي)-তে এসেছে,

س: هل النمو دليل على وجود الروح

كلا.. هذا هو الخلط، لأنهم يعتبرون أن كل ما ينمو فيه الروح، والنبات ينمو، ولا الروح فيه، ولكن فيه حياة.

إذن الحياة فى النبات،

তারা মনে করেছে, যা কিছু বেড়ে ওঠে তার মধ্যে প্রাণ আছে। বস্তুত বৃক্ষ-লতা বড় হয় ঠিক, তার মধ্যে প্রাণ নেই। তবে তার মধ্যে জীবন আছে। সুতরাং বৃক্ষ-লতার মাঝে জীবন আছে, তার মাঝে প্রাণ নেই, যদিও সে বেড়ে ওঠে।’  (ফাতাওয়া শা’রাবী ২০৬)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নের বিবরণ মতে ক্বাবা,মসজিদ, গাছপালা,বট-বৃক্ষ, প্রাকৃতিক সিনারি এবং দর্শনীয় স্থান, যেগুলিতো প্রাণীর ছবি থাকেনা এইসব ছবি আঁকা যাবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই কোনো প্রাণীর ছবি আঁকা যাবেনা। প্রাণীর ছবি আঁকার শাস্তি উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং আপনি আপনার কোন প্রয়োজনে হালাল ছবি অংকন করতে পারবেন এতে কোন সমস্যা নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...