আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (55 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি অনেক অনেক অনেক দিন ধরেই নিজের আচরন ভাল করার চেষ্টা করছি। দুয়া করছি।নামাজ পড়ছি। ভাল লেখা পড়ছি বা কুরান পড়ছি অর্থসহ। তাতেও আমার আচরন ভাল হচ্ছে না। তালিম বা এরকম কোন মাজলিসে যাওয়াটা সম্ভব না। বাচ্চা,  পরিবার এদের সাথে একদম ভাল আচরন করিনা। বহু চেষ্টা করছি নিজেকে সংশাধন করার কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা। রেগে যাই,  চিৎকার চেচামেচি করি।মোট কথা আমার কু আচরন হতে বাসার কেউ নিরাপদ না।আমি দিন দিম হতাশ হয়ে যাচ্ছি। বুঝতেসি আল্লাহ দেখতেসেন আমাকে তাও খারাপ ব্যবহার করে যাচ্ছি।
রোজা রেখে দুয়া করেছি,  তাহাজ্জুদে দুয়া করেছি,  সাদাকা করেছি,  তাও আমার আখলাক ভাল হচ্ছেনা। আল্লাহ তো আমার উপর অসন্তুষ্ট।
আমি কি কোন দিন ভাল আচরন করতে পারব না?  আমার আচরন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মত কেন হয় না?  আর কিভাবে আমি নিজেকে খারাপ আচরন করা থেকে বাচাব??
আমি খুব হতাশ হয়ে লিখছি

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

وَإِن جَاهَدَاكَ عَلَىٰ أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا ۖ وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا ۖ وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ۚ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ

পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো। (সূরা লুকমান-১৪/১৫)

 

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনি ইসরাঈল-২৩)

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَلَمْ يُوَقِّرْ كَبِيرَنَا وَيَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদেরকে অনুগ্রহ করে না, আমাদের বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না, ভালো কাজের আদেশ করে না এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে না, সে আমাদের দলের নয়। (তিরমিযী ১৯২১, য‘ঈফ আত্ তারগীব ১৩৯৩, য‘ঈফুল জামি‘ ৪৯৩৮।)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

মাতাপিতার সাথে সর্বদা উত্তম আচরণ করতে হবে। কখনো তাদের সাথে রাগ করা যাবে না।

মনে রাখবেন,মাতাপিতার বদ-দু'আ সন্তানের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়। কিছু দু'আ আল্লাহ সাথে সাথেই কবুল করে নেন,এর মধ্যে একটি দু'আ হল,মাতাপিতার দু'আ। সুতরাং নিজের ভবিষ্যত জীবনকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে মাতাপিতার সন্তুষ্টি অর্জন একান্ত জরুরী ও কাম্য।

 

মায়ের বদ-দু'আর কারণে জুরাইজ নামাক একজন ওলীকে আল্লাহ অপবাদে আরোপিত করেছিলেন।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1855

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. আপনি সবার সাথে ব্যবহার ভালো করার জন্য আবারও একটু চেষ্টা করতে থাকুন এবং দুআ করতে থাকুন। আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। বিশেষ করে নামাজের পর, তাহাজ্জুদের নামাজের পর, মাগরীবের নামাজের আগে দুআ করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করুন এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে চাইতে থাকুন। আল্লাহ তায়ালা থেকে কখনো নৈরাশ হবেন না।

 

২. আপনি পরিবারের কারোর সাথে কথা বলার আগে বা তাদের সাথে দেখা সাক্ষাত করার সময় একটু চিন্তা করে করবেন এবং সাবধানে করবেন। প্রতিটি কাজ ও কথা ভেবে চিন্তা করে বলবেন যাতে করে তারা কষ্ট না পান। এমন কথা ও কাজ যাতে তারা কষ্ট পায় তা পরিহার করবেন। তাহলে দেখবেন আপনার ব্যবহার আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা আপনাকে তাওফীক দান করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...