আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
112 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

বিয়ের পর থেকে স্বামী স্ত্রীর একসাথে কখনও থাকা হয়নি।

(১) স্ত্রী ঘুরতে যাওয়ার অনুমতি চাইলে স্বামী এমনিতে "এক তালাক " বলেন তালাকের বা ছেড়ে দেওয়ার নিয়ত ছাড়া,  এবং উনি ভাবতেন এক তালাক বললে তালাক গণনা হয় না, এক সাথে তিন তালাক বললেই শুধু তালাক পতিত হয় তাই এই এক তালাক বলায় তালাকের কোনো উদ্দেশ্য তার ছিলনা। তালাকের যেহেতু সম্ভাবনা আছেই তাই পরে উনি মুখের বলেন যে "ফিরিয়ে নিলাম" এবং সবটা ফোনেই বলা হয়, কোনো সাক্ষী ছিলনা।

(২) দূর সম্পর্কের আত্বীয় না জেনে স্ত্রীর জন্য বিয়ের প্রস্তাব খুজে আনায় স্বামী অতিরিক্ত রাগের মাথায় স্ত্রীকে প্রায় ৩বার  বলে বসে "তোমাকে ছেড়ে দিলাম, মন চাইলে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারো"।  উল্লেখ্য যে স্বামী প্রচন্ড রাগী স্বভাবের এবং রাগ হলে উনি কি বলেন না বলেন তার হিসাব বা হুশ থাকেনা। এক্ষেত্রেও উনি রাগ নামার পর ছেড়ে দেওয়া সংক্রান্ত কিছু বলেছেন বলে তার স্মৃতিতে ছিল না বলে জানান।
(৩) স্বামী যদি স্ত্রীকে বারবার " চাইলে চলে যেতে পারো, ভালো না লাগলে চলে যেত পারো,  আমার চেয়ে ভালো কাউকে পেলে তাকে বিয়ে করতে পারো " এসব প্রায়ই বলেন কিন্তু তার মনে স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার কোনো নিয়ত না থাকে, শুধুমাত্র স্ত্রীকে শাসনের জন্য বা ঘোচানোর জন্য বলে তবে কি এতে তালাকের কোনো সম্ভাবনা থাকে?

এক্ষেত্রে উপরের পরিস্থিতি মিলিয়ে মোট কয় তালাক পতিত হয়েছে বলে গগনা হবে? বিয়ে কি বহাল আছে এতে বা পুনরায় কি বিয়ে করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★সুতরাং এক নং প্রশ্নের বিবরন অনুযায়ী স্ত্রীর উপর এক তালাকে বায়েন পতিত হয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نَکَحۡتُمُ الۡمُؤۡمِنٰتِ ثُمَّ طَلَّقۡتُمُوۡہُنَّ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَمَسُّوۡہُنَّ فَمَا لَکُمۡ عَلَیۡہِنَّ مِنۡ عِدَّۃٍ تَعۡتَدُّوۡنَہَا ۚ فَمَتِّعُوۡہُنَّ وَ سَرِّحُوۡہُنَّ سَرَاحًا جَمِیۡلًا ﴿۴۹﴾ 

হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিয়ে করবে, তারপর তাদেরকে স্পর্শ করার আগে তালাক দিবে, তখন তোমাদের জন্য তাদের পালনীয় কোন ইদ্দত নেই যা তোমরা গুণবে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে কিছু সামগ্ৰী দেবে এবং সৌজন্যের সাথে তাদেরকে বিদায় করবে।
(সুরা আহযাব ৪৯)

إذا طلق الرجل امرأته ثلاثا قبل الدخول بها وقعن عليها فإن فرق الطلاق بانت بالأولى ولم تقع الثانية والثالثة

যদি কেউ তার স্ত্রীকে সহবাসের পূর্বে তিন তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তিন তালাকই তার উপর পতিত হবে।আর যদি বিচ্ছিন্ন ভাবে এক এক করে তিন তালাক দেয়,তাহলে প্রথম তালাক দ্বারাই স্ত্রী বায়েন হয়ে যাবে।দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তালাক তার উপর পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৩)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যে স্ত্রীর সাথে কোনো রকম অন্তরঙ্গতা এবং নির্জনবাস হয়নি,তাকে এক তালাকে বায়েন দেয়া হলে তার জন্য এই বায়েন তালাকের ইদ্দতকাল থাকবেনা।

যেহেতু তাদের মাঝে খালওয়াতে সহীহাহ হয়নি,তাই এই তালাকের পর আরও তালাক দিলে তা প্রযোজ্য হবেনা।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক নং প্রশ্নের বিবরন অনুযায়ী স্ত্রীর উপর এক তালাকে বায়েন পতিত হয়েছে।
যেহেতু উক্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস/খালওয়াতে সহীহাহ কিছুই হয়নি,তাই পরবর্তীকালে বলা কেনায়া বাক্যের দরুন কোনো তালাক পতিত হবেনা। 

তাই উক্ত স্ত্রী শুধুমাত্র এক তালাক প্রাপ্তা হিসেবেই আছে। তাকে ফিরিয়ে নিতে চাইলে পুনরায় নতুন করে মোহরানা ধার্য করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...