আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
82 views
in সালাত(Prayer) by (11 points)

আসসালামু আলাইকুম মুহতারাম শাইখ। আশা করি আল্লাহ তায়ালা উত্তম হালতে রেখেছেন আপনাদের৷ 

বর্তমানে আমি আমার পিতার চিকিৎসার জন্য ভারতের ভেলোরে অবস্থান করছি। এখানে CMC হসপিটালে চিকিৎসা চলছে আমার পিতার। হসপিটালের এরিয়ার ভিতর কোনো মসজিদ বা সালাত আদায়ের স্থান আলাদাভাবে পাইনি। বাইরে যে মসজিদ আছে, সেটাও বেশ খানিকটা দূরত্বে। পিতাকে রেখে সেখানে যাওয়াটা অনেক দুরূহ হয়ে যায়। 

কিন্তু হসপিটালের এরিয়ার ভিতরে একদম কাছেই একটা গীর্জা আছে। সেখানে একটা বারান্দা আছে, যেটা নিরিবিলি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। 

আমার প্রশ্ন হলো, 

() এমতাবস্থায় এই গীর্জার বারান্দায় সালাত আদায়ে শারঈ কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কী না? 

() যেহেতু আমি মুসাফির, সেজন্য জামা'আতের সাথে সালাত আদায় না করলে গোনাহ হবে কী?

by (5 points)
দুনিয়াতে কি পবিত্র জায়গার অভাব আছে?

আল্লাহ, এই উম্মতের জন্য সকল ভূমিকে পবিত্র ও নামাজের স্থান বানিয়ে দিয়েছেন। 

তাহলে গির্জায় নামাজ পড়ার যুক্তি কী?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ

جُعِلَتْ لِيَ الْأَرْضُ كُلُّهَا مَسْجِدًا

আমার জন্য পুর্ণ জমিনকে মসজিদ বানিয়ে দেয়া হয়েছে। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩১৭, মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-৯৭৫]

وَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «إِنَّا لاَ نَدْخُلُ كَنَائِسَكُمْ مِنْ أَجْلِ التَّمَاثِيلِ الَّتِي فِيهَا الصُّوَرُ» وَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «يُصَلِّي فِي البِيعَةِ إِلَّا بِيعَةً فِيهَا تَمَاثِيلُ»

উমার (রাযি.) বলেছেন আমরা তোমাদের গির্জাসমূহে প্রবেশ করি না, কারণ তাতে মূর্তি রয়েছে। ইবনু ‘আববাস (রাযি.) গির্জায় সালাত আদায় করতেন। তবে যেখানে প্রতিমা ছিল সেখানে নয়। [সহীহ বুখারী-গির্যায় নামায পড়ার অধ্যায়]

فَإِنْ كَانَ فِيهَا تَمَاثِيلُ خَرَجَ فَصَلَّى فِي الْمَطَرِ

হযরত ইবনে উমর রাঃ যদি গির্যায় মূর্তি দেখতেন, তাহলে বের হয়ে যেতেন এবং বৃষ্টিতে হলেও নামায পড়তেন। [ফাতহুল বারী-১/৫৩২, নাম্বার-৪৩৪]

عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الْأَرْضَ مَسْجِدٌ وَطَهُورٌ فَأَيْنَمَا أَدْرَكَتْكَ الصَّلَاةُ فَتَيَمَّمْ وَصَلِّ»

হযরত আবূ যর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় জমিন নামাযের স্থান এবং পবিত্র। সুতরাং যে স্থানেই নামাযের সময় হয়, তা দিয়ে তায়াম্মুম কর এবং তাতে নামায পড়। [মুসতাখরাজে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-১১৫৯]

ইবনে আবদুল বার্ (রহ.) বলেন, ইমাম বুখারি উল্লেখ করেছেন, ইবনে আব্বাস (রা.) বিধর্মীদের উপাসনালয়ে নামাজ পড়তেন; যদি সেখানে মূর্তি না থাকত। আইয়ুব, উবাইদুল্লাহ ইবনে উমর ও অন্যান্যরা নাফে থেকে, তিনি উমর (রা.)-এর আজাদকৃত দাস আসলাম থেকে বর্ণনা করেন যে, উমর (রা.) যখন সিরিয়া আসেন, তখন খ্রিস্টানদের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাকে নিমন্ত্রণ করে। তখন উমর (রা.) বললেন, আমরা তোমাদের গীর্জাগুলোতে প্রবেশ করি না এবং সেখানে নামাজও আদায় করি না সেগুলোতে ছবি ও মূর্তি থাকার কারণে। (তামহিদ : ৫/২২৭)

সুতরাং বোঝা গেল, উমর (রা.) ও ইবনে আব্বাস (রা.) কেবল মূর্তি থাকার কারণে সেখানে নামাজ আদায় করাকে মাকরূহ মনে করতেন। অতএব, নামাজের স্থানে যদি মূর্তি বা এই জাতীয় কিছু না থাকে এবং স্থানটি পবিত্র হয়, তাহলে সেখানে নামাজ পড়া জায়েজ।

অতএব,

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. প্রয়োজনের খাতিরে গীর্জায় নামায পড়া জায়েজ আছে। তবে নামাজ আদায়ের স্থানটি পবিত্র হতে হবে। পাশাপাশি সেখানে কোনো ধরনের ছবি বা মূর্তি না থাকতে হবে (যেগুলোকে তারা সম্মান ও পূজা করে )। কারণ, গোটা পৃথিবী সিজদার স্থান। মুসলিমের জন্য সারা বিশ্বের সব জায়গায় নামাজ পড়া জায়েজ। তবে শরিয়তের দলিল-প্রমাণের কারণে যদি কোনো বিশেষ স্থানকে বাদ দেয়, সেই স্থানগুলো ছাড়া। যেমন- কবরস্থান, গোসলখানা ও উট বাঁধারস্থান ইত্যাদি।

২. মুসাফিরের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় জামাতের সাথে নামাজ আদায় করাই নিয়ম। সফরের কোনো তাড়া না থাকলে মুসাফির জামাতেই নামাজ পড়বে। তবে কোন বিশেষ কারণে জামাত ছাড়া একাকী নামাজ পড়লে জামাত পরিত্যাগের গুনাহ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 43 views
...