আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
88 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আ'লাইকুম

আমার বিয়ে হয়েছে একজন বেদ্বীন মানুষ এর সাথ দ্বীনের ছিটে ফোটাও মানেনা ওনি । বিয়ের আগে ওনি যেভাবে আমার সামনে এসেছেন আমি ধরে নিয়েছিলাম ওনি দ্বীন মানে অথচ বিয়ের পর বুঝলাম সব ই ধোকা । ৭ মাস চলে  আমাদের বন্ডিং ভালো না ছাড়াছাড়ির হাল কেউ কাউরে ছাড়তেও পারিনা আবার এক সাথে থাকতেও ইচ্ছে করেনা ।এর ভেতরে আমাকে পেইন দিতে সে দাড়ি গুলো ফেলে দিছে নামাজ বাদে আর কিছুতে নেই । তার থেকে দুরে সরে আছি আমল করতে পারি আবার এদিকে তাকে ছাড়া অশান্তি লাগে । আবার তার ফেইস দেখলেও অশান্তি লাগে অমানুষ লাগে তাকে । মাঝে আমি আমল করতে পারতাম নাহ । যাইহোক এখন আমি কি করবো এতটা মানসিক অশান্তি লাগে আমি নিয়ত করেছি তাকে কিছুতে ডাক দিব না । কিন্তু কষ্ট হয় ! যখন দেখি তার দাড়ি নেই সুন্নাহ নেই উল্টা পাল্টা চলে ডাক দিতে ইচ্ছে হয় এদিকে সে কন্ডিশন দিছে তার সাথে থাকতে হলে আমাকে নিরব থাকা লাগবে । আমি তাকে ভালোবাসি সেও বাসে বলে তো বাসে কাজে তো আমার মনের বিরুদ্ধে আল্লাহ বিরুধী করে । আমার কি সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ ? আমার পরিবার বেদ্বীন ,তারা বলে তার আমল এর জন্য সে বুঝ দিবে আবার তার পরিবার ইসলামের মৌলিক জিনিস মানে এবং আমার দ্বীনের ব্যাপারে সচেতন আর আমাকে খুব ভালো বাসে । সবাই বলে সবর করতে ধৈর্য্য ধরতে । আমি সবর করব কিন্তু অন্তরে অস্থিরতা কাজ করে অশান্তি কাজ করে , আমাকে কিছু আমল দেন যেই আমল করলে ওনি আমার কথার ভুল পাবেনা বুঝবে আমি তার ভালোর জন্য বলতেছি ,আমার রব এর প্রতি অনুগত থাকবে রাসুল(সা:) সুন্নত ফলো করবে। দাড়ি টুপি আলাদের দেখে বাজে মন্ত্যব্য করবেনা মোট কথা কি দোয়া আছে যা পড়লে তার হেদায়েত আসতে পারে নরম হবে অন্তর ।
নয়ত এমন হালে সে আমি বেবী কনসিভ করলে আমার কথায় শুনবেনা দ্বীনের থেকে ভুল পথে পরিচালিত করবে। আরো অনেক ঝামেলা আছে যা অনেক বড় কবিরা গুনাহ আমি অপ্রকাশ রাখলাম আমার ইচ্ছা আছে সংসার করার তবে আল্লাহর দ্বীন এর সাথে।
বিদ্র: সে এখন অব্দি আমার ভরণ পোশন চালাতে পারেনি তার বাবা হেল্প করে 7 মাস বিয়েতে আজ অব্দি আমি তার থেকে একটাকা চাইনি কিছু আবদার করিনি শুধু চাইসি দ্বীন অল্প অল্প করে । তাবলিগ জামাত কে সে ঘেন্নাহ করে অপমান করে কথা বলে ।
একজন বললো সুরা ফুরকান এর ৭৪ নাম্বার আয়াত পড়তাম এটা ত বিয়ের আগে বা বাচ্চা কনসিভের টাইমে পড়ার ।
আমাকে আমল দিন যে আমলে আমার স্বামি আল্লাহ ওয়ালা হবে ।

1 Answer

0 votes
by (63,440 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলামের মূল থিউরী হল স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ না হোক। তারা মিলেমিশে থাকুক। সমস্যা হলে উভয়ে বসে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে পারিবারিক মুরুব্বীদের পরামর্শের আলোকে সমাধান করা উচিত। তারপরও যদি সমাধান না আসে। তাহলে নিরূপায় অবস্থায় ইসলাম তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্বামীকে

https://ifatwa.info/43495/ নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে, নেককার স্বামী/স্ত্রী পাওয়া এবং সুস্থ সবল সন্তানের পিতা-মাতা হওয়া, বান্দার উপর আল্লাহ তা'আলার এক বিশেষ নেয়ামত।এজন্য প্রত্যেক স্বামী/স্ত্রী এর জন্য মহান রবের শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ।এ বিশেষ নেয়ামতের অকৃতজ্ঞা প্রকাশ করার অর্থই হল নিজের জীবনকে বিপর্যয়ের দিকে ঢেলে দেয়া।

ল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻭَﺇِﺫْ ﺗَﺄَﺫَّﻥَ ﺭَﺑُّﻜُﻢْ ﻟَﺌِﻦ ﺷَﻜَﺮْﺗُﻢْ ﻷَﺯِﻳﺪَﻧَّﻜُﻢْ ﻭَﻟَﺌِﻦ ﻛَﻔَﺮْﺗُﻢْ ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑِﻲ ﻟَﺸَﺪِﻳﺪٌ

যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। (সূরা ইবরাহিম-৭)

যেহেতু আপনার স্বামী এখনো আপনার সাথে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিচ্ছেদের আলোচনা করছেন না বা সেদিকে অগ্রসর হচ্ছেন না। এটা প্রমাণ করে সে আপনাকে ভালবাসে। হয়তো কোনো কারণে সে এই বদ অভ্যাসে লিপ্ত রয়েছে। তাই আমি মনে করি যে, আপনি তাকে পূর্ণ ভালবাসা প্রদাণ করুন। তার সাথে যথেষ্ট মায়াবী আচরন করুন।তার সামনে সু-সজ্জিত হয়ে আসুন।এবং প্রথম দিনের মত তাকে আগ্রহ ভরে দেখুন এবং সাথে সাথে তাকে আখেরাতের ভয় প্রদর্শন করুন।বা ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে সম্মক অবগত করানোর চেষ্টা করুন।

আমি আপনাকে বিশেষ কয়েকটি নসিহত করবো-

(ক) আপনার স্বামীর বদ অভ্যাস সম্পর্কে অন্য কাউকে জানাবেন না। কেননা গোনাহে গোপন রাখা ওয়াজিব। তাই গোপন রাখার চেষ্টা করুন।

(খ) পূর্ণ আগ্রহের সাথে তাকে সময় দিন। তাকে কখনো একা ছেড়ে দিবেন না। বরং সর্বদা তার সাথে লেগে থাকুন। তার সকল প্রকার পছন্দের জিনিষকে নিজের পছন্দ বানিয়ে তার সাথে সর্বদা থাকার চেষ্টা করুন।

(গ) তার হেদায়তের জন্য দু'আ করতে থাকুন।

এসবের পরেও যদি কোনো প্রকার ফায়দা না হয় তথা যদি স্বামী এই বদ অভ্যাস থেকে বিরত না থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় স্ত্রীর সামনে দু'টি পথ থাকবে-

(এক) হয়তো আপনি স্বামীর বদ অভ্যাস দূর হওয়ার জন্য দু'আ করবেন। এটাই সর্বাবস্থায় উত্তম হিসেবে বিবেচিত হবে।

(দুই) স্ত্রী তালাক চাইতে পারবে বা খূলা করতে পারবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, পরকালে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ আ'মলের হিসাব নিকাশ দিতে হবে।কারো পাপের বোঝাকে অন্য কেহ বহন করবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ الخ

কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়।

(সূরা ফাতির-১৮)

সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতে স্বামীকে বুঝিয়ে এই গোনাহের কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করুন। ধর্য্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করার চেষ্টা করুন। আল্লাহ অবশ্যই এর জন্য আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করবেন। এ সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন-- https://www.ifatwa.info/295

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

আপনার উপরোক্ত মেহনত ও দরদ আরও বেশি কার্যকরী ও সহজ হবে, যদি তাকে কোন হক্কানী আলেমের সঙ্গে সম্পর্ক করিয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি প্রথমে তাকে কোন হক্কানী আলেমের বয়ান শোনার জন্য আগ্রহী করে তুলতে পারেন। ওলামাদের মজলিসে আসা যাওয়ার জন্য উৎসাহ দিতে পারেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

প্রিয় বোন, উক্ত মেহনত আপনাকে চালিয়ে যেতে হবে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি তার হেদায়তের জন্যও দোয়া করতে হবে নিয়মিত। কোন অবস্থায় আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না। আশাহত হয়ে চেষ্টা কিংবা দোয়া বর্জন করবেন না। ইনশাআল্লাহ একদিন না একদিন সাফল্য পাবেন। وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ ‘যে আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট।’ (সূরা ত্বলাক : ৩) রাসূলুল্লাহ বলেছেন,لاَ يَرُدُّ الْقَضَاءَ إِلاَّ الدُّعَاءُ ভাগ্য পরিবর্তন হয় না দোয়া ব্যতীত। (তিরমিযী ২১৩৯)

তথাপি যদি তিনি থেকে ফিরে না আসেন, তাহলে আপনি দায়িত্বমুক্ত বলে বিবেচিত হবেন এবং উক্ত চেষ্টা ও দোয়ার জন্য অশেষ সাওয়াবের অধিকারী হবেন। আমরাও দোয়া করি, আল্লাহ আপনার স্বামীকে পরিপূর্ণ হেদায়াত দান করুন। আমিন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (5 points)
ওনি আলেম ওয়ালামার নিকটে যাবেনা অনেক বার বলেছি। ওনি দাড়ী টুপি আলাদের অনেক তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। অপমানের সুরে কথা বলে ।গাল মন্দ করে । বিচ্ছেদের কথা বলেনা কিন্তু এটাও বলেছেন ডাক দোহাই দিলে সম্পর্ক যাবেগা ।
তার অন্তর নরম হওয়ার কোনো আমল আছে কিনা জানাবেন । আমাকে কিছু আমল দিন যে আমলের উসিলাই আমি ওনার অন্তর শিতল ও চক্ষু শিতলের কারণ হবো । ভালো কিছু বললে বুঝবে তর্ক করবেনা বা রাগ হবেনা । 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...