আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (13 points)
reopened by
আস্সালামুআলাইকুম কিছু বিষয় নিয়ে, খুব জানতে ইচ্ছা করে। হুজুর দয়াকরে উত্তর দিন !!!
(দ্বীনের বুঝ আসার পর অবুঝ বাচ্চার ন্যায় ছলছল চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে রব্বকে ভালোবাসার স্বীকারোক্তি দিতাম। খুশির সীমানা ছাড়িয়ে যেতো। অস্ফুট স্বরে কণ্ঠনালী ভেদ করে বেড়িয়ে আসত চারটি শব্দ!
"আমার দয়াময় আমাকে ভালোবাসেন" ব্যস! আর কিচ্ছু বলার শক্তিটুকু পেতাম না। উচ্ছ্বাস, উৎকণ্ঠা, কৃতজ্ঞতা আর প্রবল ভালোবাসার আবেশে স্তব্ধ হয়ে যেতাম।ইশশশশশ! সেই প্রথমবার নিজেকে পুরোপুরি সমর্পণ। হিদায়েতের সুমিষ্ট স্বাদ। হৃদয়ে বসন্ত নামার সেই সুস্নিগ্ধ স্মৃতিকথা। সেই দীর্ঘায়িত সিজদাহ্। দু'চোখে নামা শ্রাবণের ঢল। আমার দয়াময়ের সাথে নীরব কথোপকথন। এক জাঁকজমকপূর্ণ সাক্ষাৎকার আঁধার রাতে।কালো কাপড়ে নিজেকে জড়িয়ে নিয়ে একটা দীর্ঘ স্বস্তির নিঃশ্বাস।)
কিছুটা উপরিউক্ত উদাহরণের মতো.....
আমি/আমরা অনেকেই আছি যে আমরা রবের সাথে কিভাবে কথাবলি ,তাকে কি বলি/বলেছি,রবের কাছে কিভাবে বায়না করে কোনোকিছু চাই,বা কুরআনের কোন আয়াতের অর্থটা পড়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি,নিজের পাপের জন্য কিভাবে/কতটা অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহকে একান্তই নিভৃতে সেগুলো ফিসফিস করে বলি,কিভাবে ক্ষমা চাই,এগুলো অনেকসময় আমরা অতি আবেগে কাওকে বলে ফেলি..অনেকেই আবার দেখি ফেইসবুক এ পোস্ট ও করেন যে কিভাবে তিনি হেদায়েত হলেন। তার অনূভুতি কি,অন্যদের অনুপ্রাণিত করার জন্য,এগুলো  প্রকাশ করলে  অনেকেই আবার আমাদেরকে অনেক ভালো মানুষ বলে ধারণা করেন,কিন্তু আমি তো জানি যে আমি কতটা পাপী,রব তো জানেন যদিও আমি সবার চোখে হয়তো ভালো হলাম,,তো রবের সাথে আমি গোপনে কি বলি সেগুলো একান্তই আমার এবং আল্লাহর মধ্যেকার কথা, দুনিয়াবাসীকে প্রকাশ করার কোনো প্রয়োজন নেই ,আমি কি /কেমন সেটা রব জানলেই হলো অযথা দুনিয়াবাসীকে জানানোর তো কোনো দরকার নেই। ....কিন্তু আমরা যে অনেকসময় এমনটা করি। ...এটা নিয়ে কি কোনো বিধি নিষেধ আছে ? আমি অনেকসময় কাছের মানুষদের কাছে এভাবেই প্রকাশ করে ফেলি ,পরে নিজেই আফসোস করি যে কেন বলে ফেললাম। কিন্তু  যদি আমার এরকম কথায় কেউ হেদায়েতের জন্য অনুপ্রাণিত হয়..তাহলে তো আরো ভালো না..!?
১)এগুলো প্রকাশ করলে কি আল্লাহ তায়ালা অসুন্তুষ্ট হন ?
২)ছোটবেলা থেকেই একটা অদ্ভুদ সমস্যায় ভুগছি ,সেটা হচ্ছে কেও আমাকে দেখে মানে আমার ব্যবহারে আমার কথা বার্তায় যখন আমাকে অনেক বেশি পছন্দ করে ফেলেন ,অনেক প্রশংসা করেন আমার নামে,আমাকে অনেক বেশি ভালো ভাবে/মনেকরে ,তখন আমার কেন জানি মনেহয় যে আমিতো অতটাও ভালোনা আমার পাপগুলোর কথা তো সে জানেনা ,জানলে হয়তো এতো ভালো ভাবতেন না ,তখন আমি নিজের পাপের কথা তাকে প্রকাশ করে ফেলি এবং বুঝিয়ে দেই যে আমি জীবনে কতটা পাপ করেছি আমাকে ভালো মনে করার কোনো মানেই হয়না ,এরফলে বিপরীত মানুষটা আমাকে খারাপ ভেবে আমার থেকে দূরে সরে যায়। আমি কি তাহলে মানুষের সামনে তারা আমাকে যতটা ভালো মনেকরেন ততটাই মিথ্যে ভালো হয়ে থাকবো তাদের সামনে? নিজের দোষের কথা বলবোনা?
৩) আমি কোনো ভুল/পাপ করে ফেললে আমার মনেহয় যে পুরো দুনিয়াকে জানিয়ে দেই  যে আমি এটা  করেছি ,কারণ আমি অনুতপ্তে ভিতরে ভিতরে শেষ  হয়ে যাই, আমি জানি রব ক্ষমা করে দিলেই তো হলো ,দুনিয়ার মানুষ কি করলো না করলো তাতে তো আসেযায় না।  কিন্তু তবুও আমি এটা করি এবং বুঝিয়ে দেই  যে আমি অনেক পাপী,কেউ আমাকে মিথ্যে ভালো ভাবলে আমার মনেহয় যে আমার তাকে ঠকানো হচ্ছে ,অন্যায় হচ্ছে তার সাথে। অথচ অনেকেই আছেন যারা জীবনে অনেক পাপ করেন কিন্তু তা লুকিয়ে রাখেন অন্যের কাছে ভালো হবার জন্য ,আর মানুষ তাদেরকেই ভালোবাসে,কিন্তু আমি এটা পারিনা ,যেটা আমার জীবনে অত্যন্ত বাজে প্রভাব ফেলছে! এবিষয়ে আমার কি করা উচিত?
৪)প্রচন্ড আবেগ আমার ,এবং অত্যন্ত দুর্বল মন তাই যে যা বলে সব বিশ্বাস  করে ফেলি ,এবং নিজের স্বার্থের কথা একবিন্দুও না ভেবে নির্স্বার্থভাবে সবাইকে সাহায্য করি ,কিন্তু এভাবে জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে আমাকে ভেঙে পড়তে হয়,এইবিষয়ে ইসলামিক বিধি নিশেধ জানতে চাই কোন বইগুলো পড়লে বা কোন আমল গুলো করলে মন শক্ত হবে আবেগ যাবে?

1 Answer

+1 vote
by (712,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
নিজের নেকির কথা প্রকাশ না করাই উচিৎ।এতেকরে আ'মল বরবাদ হয়ে যেতে পারে। তবে কখনো অন্যকে উৎসাহিত করার নিয়তে প্রকাশ করা যেতে পারে।

(২)
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। (সহীহ বুখারী-৬০৬৯,সহীহ মুসলিম-২৯৯০) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/906


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
গোনাহকে কখনো প্রকাশ করা যাবে না।বর্ণিত পরিস্থিতিতে আপনি নিরব থাকবেন। নিশ্চুপ থাকবেন।

(৩)
পাপ হয়ে গেলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়াই উচিৎ। লোকজনকে বলা বা শুনানো কখনো জায়েয হবে না।

(৪)
আপনি নেককারদের সোহবত গ্রহণ করবেন।ইনশা'আল্লাহ, সকল পরিস্থিতিতেই আপনি সাহায্য প্রাপ্ত হবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (712,400 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...