আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার বিয়ের কয়েকমাস পর আমি গর্ভবতী হয়ে যাই।তখনো আমাকে শশুরবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়নি,এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনরা বিয়ের কথা জানতো না।আমার স্বামী এবং শ্বশুর শাশুড়ী এই বাচ্চাটাকে মেনে নিতে পারেনি।এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে আমার স্বামী আমাকে তালাকের হুমকি দেয়,১তালাকও দেয়,রাগের মাথায় গলা টিপে মেরে ফেলারও চেষ্টা করে,এমনকি তলপেটেও আঘাত করে,তারপর থেকে তলপেটে মৃদু ভিন্ন রকম অনুভূতি হতো,ব্যাথা করতো।আমি থাইরয়েডের রোগী।এমনিতেও শারীরিক অবস্থাও খুব খারাপ ছিলো।আমার বাবার বাড়ির লোকজন এই সমস্ত অবস্থা,আমার শারীরিক অবস্থা, তালাকের হুমকির কথা জানতে পেরে আমাকে বাচ্চাটা গর্ভপাত করানোর জন্য প্রচন্ড প্রেশার দেয়।বিন্দুপরিমাণ সাপোর্ট স্বামী,শশুরবাড়ির লোকদের থেকে পাইনি,এমনকি পরিবার থেকেও না।বাচ্চাকে গর্ভে নিয়ে লড়াই করতে করতে এক পর্যায়ে হার মানি!!স্বামী ঔষধ তো দূরের কথা,খোঁজও নিতো না।অন্য দিকে শারীরিক দূর্বলতা, তলপেটে আঘাতের পর যন্ত্রণা,কেউ বিয়ের কথা না জানা,নিজেরও চাকরী ছিলো না,কোথাও সাপোর্ট পাচ্ছিলাম নাহ,দেনমোহরের টাকাও ছিলো না হাতে। একটু সাপোর্টের জন্য সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি।

তারপর অসহায়ের মতো ২ মাসের সময় আমার বাবার বাড়ির লোকজনের প্রেশারে বাধ্য হয়ে ঔষধ খেয়ে বাচ্চাটাকে আল্লাহর কাছে পাঠাতে বাধ্য হই!!আল্লাহর কসম!আমার সন্তানকে প্রচন্ড ভালবাসি,এমন ইচ্ছা আমার ছিলো নাহ!!আমি আমার বাচ্চাটাকে প্রচন্ড ভালবাসি। তার জন্য নামাজে মুনাজাতে দোয়া করি।

*আমাকে কি আল্লাহ ক্ষমা করবেন??কতটা স্ট্রাগল করে হার মেনেছি সেটা আমার রব দেখেছেন!!

*বাচ্চাটা তো হালাল বাচ্চা,,প্রায়ই বাচ্চাটার জন্য কান্না করি।আল্লাহ যদি দয়া করে আমাকে জান্নাত দেন,তাহলে কি আমার এই অনাগত বাচ্চাটাকে চাইতে পারব??

*আমার স্বামীর সাথে শেষপর্যন্ত বিয়েটা ভেঙ্গে যায়,উনার অন্য জায়গায় পছন্দের মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করা ছিলো জানতে পারি।তাহলে কি এই বাচ্চাটাকে নিয়ে আমি জান্নাতে থাকার অধিকার থাকবে??

1 Answer

0 votes
by (677,400 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


শরীয়তের বিধান হলো  যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে ,কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, 

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً. 

‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)

অন্যত্র তিনি বলেন, الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ . “শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)

রাসুলুল্লাহ (সা.) ভ্রুণহত্যাকে ‘গুপ্তহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ কর ওই
দিনকে, যেদিন জীবন্ত সমাধিস্থ নিষ্পাপ
বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে?’ (সূরা তাকয়ির :৮)।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
চার মাসের পূর্বে বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত গর্ভপাতকে অনুমোদন প্রদান করে থাকে।
,
(ক)বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে।অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না।এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।
,
(খ)কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
আপনি আল্লাহর কাছে যেহেতু তওবা করেছেন,ক্ষমা চেয়েছেন,সুতরাং আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেন।

চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ রইলো। 

যেহেতু ২ মাসের মাথায় বাচ্চাটিকে নষ্ট করা হয়েছে,তাই নিয়ম অনুপাতে তার মাঝে রুহ আসেনি।

সুতরাং এই বাচ্চাটিকে জান্নাতে পাবেননা।

(তবে জান্নাতে যাওয়ার পর আসলেই যদি আপনি সেই বাচ্চাটিকে চান,সেক্ষেত্রে যেহেতু আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক জান্নাত বাসীর আশা কবুল করবেন,তাই আশা করা যায় যে কোনোভাবে,কোনো এক উপায়ে আল্লাহ তায়ালা আপনার আশাও কবুল করবেন,ইনশাআল্লাহ।) 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...