আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
62 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমার স্বামীরা দুই ভাই দুই বোন। বড় ভাই অবিবাহিত থাকতেই মারা গেছেন। উনার বাবা রিটায়ার হওয়ার পর বাড়ির ছয় শতক ছেলের নামে এবং মেয়েদের জমি থেকে ৭ শতক করে ১৪ শতক দিয়ে দিয়েছেন। যখন ছেলেকে বাড়ির জায়গা লিখে দেয় তখন বার বার মেয়েদের জিজ্ঞেস করেছেন তারা একমত কিনা এবং সন্তুষ্ট কিনা। বোন এবং তাদের স্বামীরা বলেছে তারা সন্তুষ্ট।  কোনো অভিযোগ নেই। তাদের নিজেদেরই  আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ ভালো রেখেছে, এটা তাদের ই ভাষ্য। ছেলে এখনও বেকার। এখন প্রায় দুই / তিন বছর পর বোন রা দাবী করছে তাদের হক্ব আদায় হয়নি। তারা আরও পাওনা। কিন্তু তখন তারা মৌখিক ভাবে ভাইয়ের নামে দিয়ে দিতেই সম্মতি দিয়েছিলেন সেই সূত্রেই তা দেয়া হয়েছিল।  আমার স্বামী বা আমার শ্বশুর কেও ই জুলুমের পক্ষে নয় আলহামদুলিল্লাহ। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই ক্ষেত্রে এখন হুকুম কি আর যদি তাদের সম্পত্তি দিতেই হয় তাহলে তার নিয়ম কি।উল্লেখ্য তাদের ভিটার জমির পরিমান ৬ শতক, যেখানে শ্বশুর এর পেনশনে ঘর করা হয়েছে, মোট আবাদি জমির পরিমান ২৩ শতক।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তির সাথে ক্রমান্বয়ে চারটি হক রয়েছে।

 

১. অপচয় ও কার্পণ্য ছাড়া তার দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা।

২. অবশিষ্ট সম্পদ থেকে তা ঋণ পরিশোধ করা। (যদি ঋণ থাকে)

৩. ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট সমুদয় সম্পদের এক তৃতীয়াংশ দ্বারা অসিয়ত পূরণ করা। (যদি শরীয়ত সম্মত অসিয়ত করে থাকে।)

৪. তারপর অবশিষ্ট সম্পদ তার ওয়ারিশদের মাঝে ফারায়েজ মোতাবেক বন্টন করা হবে।

 

হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ

ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ

নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।

 

অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে। (সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)

 

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

 

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার শশুর এখনো বেঁচে আছেন। তাই তার ছেলে ও মেয়েদের নামে যেই জমিগুলো লেখে দিয়েছেন এটা ছাড়া বাকী সব সম্পদ আপনার শশুরের। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়েরা সম্পদ পাবে আপনার শশুর মারা যাওয়ার পর, এখন তারা মিরাস হিসাবে কোনো সম্পদ পাবে না।

২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু বোনেরা রাজী ও সন্তুষ্ট ছিলো তাই এখন তাদের অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
জাযাকাল্লাহ খাইরন উস্তায। তবে আরেকটু ক্লিয়ার হতে চাই এই বিষয়ে যে আমার স্বামীকে বাড়ির ৬ শতক দিয়েছে যা প্রতি শতক আড়াই তিন লাখের কাছাকাছি ছিল যখন শ্বশুর বাড়ির জায়গা ছেলেকে দেয়, এবং আবাদ জমি শতক সাড়ে বারো হাজার করে। এখন আমার শ্বশুর যেভাবে বন্টন করেছিলেন সেক্ষেত্রে মেয়েদের জমির টাকার হিসাবে এক মেয়েই এক লাখের কম মূল্যর সম্পদ পেয়েছে। সেক্ষেত্রে কি আমার শ্বশুর গুনাহগার হবেন? উনি জীবিত সজ্ঞানে এইভাবেই বন্টন করেছেন। মূল্যমানের ভিত্তিতে আমার শ্বশুর দ্বারা কোনো জুলুম হচ্ছেনাতো? আমার স্বামী চায় তার বাবা মা যেনো কোনো দাবির নিচে না থাকে। শ্বশুর শাশুড়ী এখনো মেয়েদের বাড়ি থেকে দিতে নারাজ কিন্তু স্বামীর কথা মেয়েরা যেহেতু চায় তোমাদের কাছে দিবো। তোমরা যেনো জুলুমকারী গন্য না হও। 
আমার শ্বশুর এর ঋণ আছে যা আমার স্বামী শোধ করবে ইন শা আল্লহ।  আর বর্তমানে আমার স্বামী বেকার। আবার আমার ননদদের আলহামদুলিল্লাহ অবস্থা ভালো।  কিন্তু তারা বাসায় এসে শ্বশুর শাশুড়ী কে অনেক চাপ দেয় মানসিক ভাবে যে তারা আরও পাওনা।  ইন শা আল্লহ পরিস্থিতি বিবেচনায় আরেকটু ক্লিয়ার করবেন বিষয়টা উস্তায। আসসালামু আলাইকুম। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...