আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামুআলাইকুম


আমার এক পরিচিত ভাই একজন তালাক প্রাপ্ত মহিলা কে বিয়ে করতে চাইছেন, তালাকের ছয় বছর পার হয়ে গিয়েছে

ওই মহিলা আল্লাহ্‌র হুকুম অনুযায়ী বিয়ে পড়িয়ে নিতে চাইছেন, কিন্তু তার পক্ষ থেকে কোনো স্বাক্ষী প্রমাণ দিতে পারছেন না, বা এভাবে বলা যায় অভিভাবক কে না জানিয়ে বিয়ে করতে চাইছেন, তিনি চাইছেন ছেলের পক্ষ থেকে সাক্ষী বা উকিল নির্ধারন করে বিয়ে করে নিতে


যেহেতু তিনি তালাক প্রাপ্ত সেক্ষেত্রে তার অভিভাবকের অনুমতি বা তার পক্ষ থেকে কি কোনো দুজন সাক্ষী বা উকিল লাগবে কি?
তালাক প্রাপ্ত মহিলার পরবর্তীতে বিয়ে করার জন্য শর্ত গুলো কি কি বিস্তারিত বুঝিয়ে বলবেন দয়া করে
জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

https://ifatwa.info/56002/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।

 

হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

 

ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

 

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দু’টি। যথা-

১-ইজাব কবুল হওয়া।

২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।

 

ব্যস উক্ত দু’টি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।

যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ-

স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে, কিংবা স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।

 

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ https://www.ifatwa.info/4541/     

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

 

১. তালাকপ্রাপ্তা মহিলার বিয়ের পদ্ধতি অন্যন্য মেয়েদের মতই। এর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। শুধু এতটুকুই যে, তাকে অবশ্যই ইদ্দত পালন করতে হবে। আর প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু তালাকের ছয় বছর পার হয়ে গিয়েছে তাই অন্যত্রে বিয়ে করাতে কোনো সমস্যা নেই।

 

২. অভিভাবক ছাড়া একা একা বিয়ে করার বিষয়ে আমরা পরামর্শ দেই না। কারণ এতে বিয়ের পরে অনেক রকমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আমরা পরামর্শ দিবো যে, মেয়ের পরিবারের লোকজনকে বুঝানোর জন্য। যার মাধ্যমে বুঝালে মেয়ের পরিবারের লোকজন এই বিয়েতে রাজী হবেন প্রয়োজনে তার মাধ্যমে বুঝানো।  যেভাবেই হোক রাজী করিয়ে এই বিয়েতে অগ্রসর হওয়া সবচেয়ে উত্তম হবে।

 

৩. হানাফী মাযহাবে বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য অভিভাবক রাজী থাকা শর্ত নয়। বরং বালিগ ছেলে মেয়ে নিজেদের কু'ফুর মধ্যে নিজে নিজে দুজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করলেও বিয়ে সহীহ হয়ে যাবে।

আরো জানুন- https://ifatwa.info/54308/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...