আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
98 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (62 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আগের দুটো প্রশ্নে বলেছিলাম পাত্র দেখার ব্যাপারে। লিংক দেওয়া হলঃ https://ifatwa.info/82712/, https://ifatwa.info/83613/

Disclaimer: এটা কোন প্রেমকাহিনী নয়

পরে বান্ধবীকে(সিনিয়র আপু কিন্তু একসাথে মাস্টার্স করছি) নিয়ে পাত্রের সাথে দেখা করেছিলাম। পাত্রকে অনলাইনে যেরকম মনে হয়েছিল মোটামুটি সেরকমই আখলাকওয়ালা, দ্বীনদার আলহামদুলিল্লাহ। আব্বু আম্মু জানতেন না, ভাইয়া জানতেন। ভাইয়াকে অনেক অনুরোধ করেছিলাম আমাদের চ্যাটে থাকতে, ভাইয়া রাজি হননি। অগত্যা মাহরাম বাদেই কথা শুরু করতে হয়। একটা গুগল ডক খুলে নিজেদের দরকারি সব প্রশ্নোত্তর জেনে নিই। ছেলের একটা ব্যাপারে খুব আপত্তি ছিল সেটা হল মেয়ের পূর্ববর্তী রিলেশন থাকা যাবে না। ছেলে তার বন্ধুদের সাথে কনভারসেশনে একথাও বলেছিল যে যদি মেয়ে বলে যে তওবা করে ভালো হয়ে গেছে তাও মেনে নেবেনা। কারণ তওবা হল বান্দা ও আল্লাহর মধ্যের ব্যাপার, আল্লাহ ক্ষমা করলেই তো মানুষ তওবাকারীকে মেনে নিতে বাধ্য না। যেমন রাসূল(সাঃ)ও এক জিনাকারী মহিলা তওবা করে ভালো হয়ে গেলেও তার উপর রজমের শাস্তি প্রয়োগ করেছিলেন। আমাকে ছেলে জিজ্ঞাসা করে যে আমার কখনো কোন রিলেশন বা অবসেশন ছিল কিনা। আমি বলে দেই যে ছিল না, আল্লাহ এসব থেকে রক্ষা করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ।

আমি ইস্তিখারা চালিয়ে যেতে থাকি। মাসখানেক আব্বু আম্মু কিছুই জানতেন না দেখা করার ব্যাপারে। একদিন আমি আম্মুকে জানিয়ে দেই ওনার ব্যাপারে। এভাবে মেয়ে হয়ে মেইল করে এপ্রোচ নিয়েছি তার উপর দেখা করেছি আব্বু আম্মুকে না জানিয়ে(ভাইয়া জানতেন) এতে প্রচণ্ড রেগে যান আমার উপর। এরপর বলেন ছেলে যাতে তার বায়োডাটা পাঠায়। আমি ছেলেকে জানাই তার বায়োডাটা দেওয়ার জন্য। এটা নভেম্বরের ১১ তারিখের কথা। ছেলে বলে যে ১৫ তারিখ বিসিএসের ভাইভা শেষ করে বায়োডাটা দেবে। ১৫ তারিখের পর আরও কিছুদিন সময় চায় কারণ সব আত্মীয়দের ডিটেইলস তার কাছে নেই, জোগাড় করে দেবে। ১৬ তারিখ আমার ভাইয়া ভাবী দেশে আসেন ৭ দিনের জন্য। ভাইয়া ঐ ছেলের সাথে দেখা করতে চান। দেখা করে ভাইয়া ওনাকে পছন্দ করেন আলহামদুলিল্লাহ। এরপর বায়োডাটার জন্য তাগাদা দেওয়া হয় ছেলেকে। ভাইয়া যাবেন ২২ তারিখ, ছেলে ঐদিন সন্ধ্যায় বায়োডাটা দেয় তার ফুপাতো ভাইকে, ফুপাতো ভাই সেই বায়োডাটা দেন আমার ভাইয়ের বন্ধুকে, সেই বন্ধু আমার ভাইয়াকে, ভাইয়া আব্বু আম্মুকে। আমি ছেলেকে বলে দিয়েছিলাম বায়োডাটাতে যেন নিজের বেসিক ইনফরমেশন ও আত্মীয়দের ইনফো দেয়। ছেলে আগেও আমাকে বায়োডাটা দেখিয়েছিল(দেখা করার আগে)। সেখানে চাকরি, পড়াশুনার শর্ত ছিল যেটা নিয়ে যেদিন দেখা করি ঐদিন কথা হয়। একান্ত প্রয়োজন না হলে চাকরি করতে দেবে না এটায় আমার আপত্তি ছিল না। গার্ডিয়ানকে যখন বায়োডাটা দেয় তখন চাকরি, পড়াশুনার শর্ত রেখে দেয়। যদিও কথাগুলো ঘুরিয়ে বলেছিল যেমন ইসলামের রুলের সাথে এলাইন করলে চাকরি করতে দেবে।

কিন্তু গার্ডিয়ান বায়োডাটা দেখার পর আর আগাতে চাননি কারণ বায়োডাটাতে লিখে রেখেছিল যে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, টাখনুর উপর প্যান্ট পরে, গান শুনে না, টিভি দেখে না, মেয়েকে পর্দা করতে হবে, চাকরির শর্ত ইত্যাদি কারণে। আমাকে কেউ চাকরি করতে "পারমিশন দেবে" বা "পারমিশন দেবে না" দুটোই কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। সেই সাথে সবসময় পর্দা করতে হবে এই কথাটায় মনে করেছে যে মেয়েকে ঘরে আটকে মেরে ফেলবে। তার উপর আত্মীয়দের ডিটেইলসে কোন মহিলা আত্মীয়ের(ফুপু,খালা) তথ্য নাই যেটার কারণে বাসায় ধরে নিয়েছে যে ঐ ফ্যামিলিতে মহিলাদের হয়তবা সম্মান করা হয়না। আমার আত্মীয়রাও এসব দেখে আর আগাতে চাননি। আমি এসব জানতে পেরে রিকুয়েস্ট করি আত্মীয়দের আর কিছুটা বুঝিয়ে বলার পর তারা কিছুটা রাজি হন। এর মধ্যে আমি ইস্তিখারা চালিয়ে যাই। আমার ভাইয়া বলে যান যে ছেলের সাথে যেন নিজে কথা বলি। আমি আগেই বলেছি যে ভাইয়াকে অনেক অনুরোধ করার পরেও আমাদের চ্যাটে থাকতে হননি। আর অন্য কাউকে বললেও রাজি হতনা। কতই না সৌভাগ্যবান তারা যাদের উপযুক্ত মাহরাম আছেন যারা তাদের জন্য পাত্রও দেখে দেন তাদের ফিতনায় না ফেলে। আপুরা যাদের এরকম মাহরাম আছে তারা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ থাকুন প্লিজ।

ছেলেকে পরে জিজ্ঞাসা করেছিলাম বায়োডাটাতে এরকম করেছেন কেন। তিনি উত্তর দিয়েছেন যে আগে কখনো কাউকে বায়োডাটা দেননি তাই বুঝতে পারেননি। আর আত্মীয়দের সবার আপডেট জানেন না কিন্তু বিপদে পাশে থাকেন। মানে আত্মীয়দের সাথে সেরকম যোগাযোগ নেই কিন্তু যখনই আত্মীয়দের তাকে দরকার হয় পাশে পান। যেমনঃ করোনার সময় তার চাচীর জন্য অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছিল না, তিনি ১ ঘণ্টার মধ্যে অক্সিজেন জোগাড় করে দেন আলহামদুলিল্লাহ। এমনি এমনি ফোন দিয়ে কথা বলেন না, খোঁজ নেন না কিন্তু বিপদে পাশে থাকেন আরকি। তিনি বলেছেন যে তার আব্বা আম্মা যাদের তথ্য তাকে লিখে দিয়েছেন তাদেরটাই তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন, এত কিছু চিন্তা করেননি আর বায়োডাটা নিয়ে এত ঝামেলা হবে সেটাও ভাবতে পারেননি। এরপর আমার মাস্টার্সের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলে আসে। একটা পরীক্ষার আগে অনেকদিনের গ্যাপ থাকে। সেই গ্যাপে ছেলের থেকে আরও কিছু তথ্য নেই। আর বলি যেন কষ্ট হলেও আত্মীয়দের নিয়ম করে খোঁজ নেয় কারণ আমি এমন কাউকেই বিয়ে করতে চাই যার জীবনে বরকত আছে।

ছেলে ঐ সময়েই একদিন হঠাৎ আমি ফার্স্ট ইয়ারে থাকাকালীন কালচারাল প্রোগ্রামে একটা নাটকে পার্টিসিপেট করেছিলাম(তখনো দ্বীনের বুঝ ছিল না) সেই ভিডিও খুঁজে বের করে বলে ডিলিট করে দিতে। ঐ নাটকে আমি ছিলাম সাইড নায়িকা, যে সাইড নায়ক ছিল তার সাথে হাইফেন দিয়ে নাম লেখা ছিল। এটা দেখে উনি নাকি বেশ কষ্ট পেয়েছিলেন। পরে যেই বান্ধবী ঐ ভিডিও দিয়েছিল ওকে অনেক অনুরোধ করি যেন মুছে দেয় ভিডিওটা। ভিডিও মুছে দেওয়ার পর মনে হল ওনার যেই জায়গায় আপত্তি সেটা নিয়ে স্পষ্টভাবে বলে দেই। আমি বলে দেই যে আমার কখনো কারো সাথে সম্পর্ক ছিল না আলহামদুলিল্লাহ আর কখনো থাকবেও না ইনশাআল্লাহ। উনি তারপর বলেন যে এই টপিকটা বাদ দিতে(কালচারালে পার্টিসিপেট)। আমিও আর কথা বলিনি এটা নিয়ে। এরপর ওনার ৪৩তম বিসিএসে তথ্য ক্যাডার আসে(সহকারী প্রকৌশলী) যেটা হারাম ক্যাডারের মধ্যে পড়ে না আলহামদুলিল্লাহ। উনি তখনো আমার ব্যাপারে পজিটিভ বলেই জানালেন।

এরপর উনি একদিন ওনার হুশাপে একজনের প্রশ্নের উত্তরে জানালেন যে কোন মেয়ের আগে ছেলে ক্লোজ ফ্রেন্ড, বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল এটা যদি সে তার হবু বরকে যার কখনো কোন মেয়ের সাথে অপ্রয়োজনে কথা হয়নি তাকে না জানায় তাহলে নাকি অন্যায় হবে। উনি জানিয়েছেন যে উনি কখনো কোন মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়াননি, সেই অর্থে ভালোলাগাও কাজ করেনি তাই একই জিনিস তিনি তার বউয়ের থেকে চান। তার জীবনের প্রথম প্রেম হবে তার বউ, তার বউয়ের অন্য জায়গায় প্রেম ছিল এটা বিয়ের পর জানতে পারলে প্রতারণা হিসেবে নেবেন, এমনকি খাঁটি দিলে তওবাকারী হলেও কারণ বিয়ের আগে অল্প কিছুক্ষণ কথা বলে তিনি কীভাবে জানবেন যে সেই মেয়ে আদৌ তওবাকারী নাকি তওবা করেছে এমন ভান করছেন। আর বিয়ের পরে আগের প্রেমিকের মাধ্যমে কিছু ফাঁস হলে সম্পর্কের শ্রদ্ধা ভালোবাসা নাকি কমে যাবে যতই তওবাকারী হোক না কেন, হাজার হলেও মানুষ তো। সব বিবেচনা করে আমি ইস্তিখারা করে তাকে জানিয়ে দেই যে আমার ছেলে বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল কিন্তু এখন নেই। এটা শুনে তিনি বলেন যে ওনার এসবে আপত্তি আছে জেনেও আমি কেন এগিয়েছি। আমি বলি যে আমি জানতাম ওনার মূল কনসারন হল যে মেয়ের আগে রিলেশন থাকা যাবে না। আমার যেহেতু ছিল না তাই আমি এগিয়েছি।

এছাড়া আমার আগে ভালোলাগা ছিল, বিয়ের জন্য নিজে পাত্র দেখেছি এরকম ঘটনাও ওনার সামনে চলে আসে। আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি কৌশলে উত্তর দেই। উনি বলেন যে নিজে পাত্র দেখা দোষের কিছু নয় কিন্তু উনি কারো ২য়, ৩য়, ৪র্থ জন হতে চান না। তিনি চান যিনি তার জীবনে আসবেন তিনি তাকেই প্রাধান্য দিন। আমি পরে জানিয়ে দেই যে আগে কাউকে দেখেছি জন্যে যে তাকেই মনের মধ্যে রেখে দিয়েছি এমন না, বিয়ের পর হাজবেন্ডই প্রাধান্য পাবে ইনশাআল্লাহ। আমি এটাও জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে বিয়ের পর যদি কখনো ক্লাসের কোন ছেলে প্রয়োজনে ফোন দেয় তাহলে ব্যাপারটাকে উনি কীভাবে নেবেন। উনি বলেছিলেন যে সেই ছেলে যদি আমার সেই আগের বেস্ট ফ্রেন্ড হয় তাহলে ওনার আপত্তি আছে। আমি বলি যে সেই ছেলে তো আর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড নাই, উনি চাইলে ওকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড বানাতে পারেন। সেটা শুনে উনি বলে দেন যে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল যেই ছেলে তাকে উনি ওনার আশেপাশেও সহ্য করবেন না। উনি আগের থেকেই বলছিলেন ২য় বার মাহরামসহ দেখা করতে। আমি গত ১৮ জানুয়ারি আব্বু আম্মুকে বলি ওনার সাথে দেখা করব আর মাহরাম হিসেবে চাচা চাচী যাবেন। আব্বু আম্মু চাচা চাচী সবাই বয়স্ক মানুষ, ওনাদের অনেক কষ্ট হয়ে যাবে তাই আমাকে একাই যেতে হয় বাধ্য হয়ে। যেই কফিশপে দেখা করি ওটা চাচার বাসার কাছে। পরে চাচা চাচী এসে ওনার সাথে দেখা করে আমাকে নিয়ে যান। ঐদিন যখন দেখা করি তখন ওনাকে জিজ্ঞেস করি ওনার আপত্তির বিষয়গুলো আমার মধ্যে আছে জেনেও উনি আগালেন কেন। উনি বললেন যে যাকে ভালো লাগে তার অনেককিছুই ইগনোর করা যায়। কেউ কেউ আমাকে বলেছিল ওনার আগের আচরণ দেখে যে উনি সন্দেহপ্রবণ মানুষ হতে পারেন। আমি ঐদিন আবার বলি যে উনি যদি নিশ্চিত হন যে আমাকে ১০০% বিশ্বাস করতে পারবেন তাহলেই যেন আগান। উনি নিশ্চয়তা দেন যে এটা সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। আমিও বলি যে উনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে আমার মন অন্য কোন ছেলের কাছে পড়ে নেই। আমাদের বাড়ি যেহেতু একই জেলায়, তাই ওনার অনেক আত্মীয়কে চেনেন আমার আত্মীয়রা। ওনার ফুপাতো দুলাভাইকে আমার বাবা চাচারা এক নামে চেনেন আলহামদুলিল্লাহ। আমার ফুপু ওনার ফ্যামিলির ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ভালোই জেনেছেন আলহামদুলিল্লাহ। সেদিন আমার চাচাও ওনার সাথে কথা বলেছেন, তিনিও বেশ পছন্দই করেছেন মাশাআল্লাহ।

আমি এতদিন ধরে ইস্তিখারা করেই যাচ্ছি, সেই সাথে যতদূর জানি উনিও করছেন। আমি আমার চাচাকে, ভাইয়াকে বলেছি যেন ওনার সাথে কথা বলেন আরও। তারা বলেছেন যে বিয়ে আমার, ওনারা কেন কথা বলবেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আমার উপর ছেড়ে দিয়েছেন। আমাকে এই জানুয়ারি মাসটা সময় দেওয়া হয়েছে ফ্যামিলি থেকে। ওনার বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সাথে নির্দিষ্ট কিছু ইন্টারএকশনে আপত্তির বিষয়টা, সাথে আগের কিছু থাকলে তার প্রতি মন পড়ে থাকা নিয়ে চিন্তার বিষয়টা অবশ্য বড়দের বলিনি। ওনার সাথে কথা বলে আমার অবশ্য ভালো মানুষ বলেই মনে হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আমার আব্বু আম্মু অবশ্য ওনার সাথে সরাসরি কথা বলেননি এখনো। বললে হয়ত ওনাদেরও ভালো লাগার সম্ভাবনা বেশি(আল্লাহু আ'লাম)। আব্বু আমাকে সেদিনও জিজ্ঞাসা করেছেন যে ওর সাথে বিয়ে হলে ও তোমাকে তোমার ক্লাসমেট ছেলেদের সাথে গেট টুগেদার করতে দেবে তো নাকি ছেলেমেয়ে একসাথে হবে বলে মানা করবে? এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর আমি দিতে পারিনি। মুফতি সাহেব গত ৫ টা বছর ধরে মানুষের সাথে না মিশতে না মিশতে আমি মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছি। আমি কথা বলাও ভুলে গিয়েছি। আমি জানি না ইসলামকে ভিত্তি হিসেবে রেখে কীভাবে মানুষের সাথে কানেক্ট করব। আপনি জানেন আমার ফ্যামিলি হুজুরদের সহ্যই করতে পারে না, আমাকে দয়া করে বলবেন না তালিমে যেতে। আমার মত ঐ ছেলের ফ্যামিলিতেও ছেলে একাই প্র্যাকটিসিং, অন্যরাও ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন আলহামদুলিল্লাহ। সমস্যা হল গিয়ে ছেলে কিশোর বয়সে দ্বীনের বুঝ পায়, ফ্যামিলিও সাপোর্টিভ ছিল, কখনো টাকাপয়সার অভাব হয়নি, ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটিতে গিয়ে দ্বীনি সার্কেল পেয়েছে, ব্যাচে ছেলেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ(যেখানে আমাদের ব্যাচে মেয়ে মাত্র ৭ জন, বাকি সবাই ছেলে। আমিও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি) সব মিলিয়ে ওনার কখনো মেয়েদের সাথে মেশা লাগেনি। এখন আমি জানি না উনি আমার সিচুয়েশন বুঝতে পারছেন কিনা, বিয়ের পর কোন ছেলের সাথে কথা হয়ে গেলেই আমাকে সন্দেহ করবেন কিনা। ওনার বোনের সাথেও আমাকে কথা বলিয়ে দিয়েছেন। আপুও আমাকে পছন্দ করেছেন আলহামদুলিল্লাহ। এখন আমি যদি আমার ডিসিশন জানাই তাহলে উনারা ফ্যামিলি পর্যায়ে আগাতে পারেন। আমি বুঝতে পারছি না যে আমি কী বলব। ইস্তিখারা করেই যাচ্ছি প্রতিনিয়ত, ইস্তিখারার নামাজ না পড়তে পারলে দুয়া পড়ছি কিন্তু তাও করছি। আমি একবার স্বপ্নে দেখেছিলাম যে ওনার বড় বোন আমাকে দেখতে এসেছেন। আরেকবার দেখেছি যে উনি ক্ষমতা পেয়ে অত্যাচারী শাসক হয়ে গেছেন। উনি আমাকে বলেছিলেন যে উনি ক্ষমতা চান কারণ সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে চান টা সে শিল্পপতি হয়ে হোক আর সরকারি চাকরি করে হোক আর পলিসি মেকার হয়েই হোক।

আব্বু আম্মু ওনাকে দেখেননি এখনো। উনি এখনো আমার ব্যাপারে "হ্যাঁ" বলছেন। আমি "হ্যাঁ" বললেই হয়ত দুই ফ্যামিলি মিট করবে ইনশাআল্লাহ। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমার এখানে কী করা উচিত? ওনার কি সন্দেহ করার রোগ থাকতে পারে বলে আপনার মনে হয়েছে? ৪ মাস ধরে করা ইস্তিখারার তো কোন রেজাল্ট পাচ্ছি না তাই ডিসিশন জানাতে পারছি না। নিজের হৃদয়কে জিজ্ঞাসা করেও উত্তর পাচ্ছি না। আগে যাদেরকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছি তাদের একজন আমাকে একরকম হুমকিই দিয়েছে যে ও ওর ক্লোজ বন্ধুদের সবকিছু বলে যদিও আমি স্পষ্ট ভাষায় বলেছি কাউকে যেন ঐ বিয়ের প্রস্তাবের কথা কিছু না বলে, আর ও বলেছেও যে ও কাউকে কিছু জানাবে না। এখন আমি তো আমার হবু বরকে হিন্ট দিয়েছি যে আগে কয়েকজনকে দেখেছি, আমি কি এখন এই ছেলের ব্যাপারে বিস্তারিত বলেই দেব? আপনার কি মনে হয়? আর কতদিন ইস্তিখারা করব? এতদিন ইস্তিখারা করে তো কাউকে ডিসিশন জানাতে পারছি না। আমার কি "হ্যাঁ" বলা উচিত নাকি "না"? আল্লাহ তো শক্তিশালী মুমিনদের পছন্দ করেন সেখানে এতদিন ইস্তিখারা করেও যে ডিসিশন দিতে পারছি না সেটার জন্য কি আল্লাহ আমাকে শাস্তি দেবেন এই বলে যে তুই তো দুর্বল তাই ডিসিশন দিতে পারিস না? কী করা উচিত আমার মুফতি সাহেব?

আমার আগেই এখানে যোগাযোগ করা উচিত ছিল। অনেক দেরি হয়ে গেছে আসতে এখানে। আমি গুছিয়ে বলতে পারলাম কিনা জানি না। আশা করি বুঝে নিবেন ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


বিবাহের ক্ষেত্রে রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত পাত্রের সাথে আপনার কুফুর সামঞ্জস্যতা থাকলে পরামর্শ থাকবে তাকে হ্যাঁ বলার। এক্ষেত্রে পারিবারিক ভাবে বিবাহ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আগে যাকে প্রস্তাব দিয়েছি তার ব্যাপারে বলে দেব? সংসারে সন্দেহ হওয়ার চান্স আছে? ছেলে কি সন্দেহবাতিকগ্রস্ত বলে মনে হয়েছে আপনার?
by (62 points)
reshown by
আগে যাকে প্রস্তাব দিয়েছি তার ব্যাপারে বলে দেব? সংসারে সন্দেহ হওয়ার চান্স আছে? ছেলে কি সন্দেহবাতিকগ্রস্ত বলে মনে হয়েছে আপনার?
by (62 points)
আরও কিছু কনসার্ন ছিল যেগুলোর উত্তর বিস্তারিত প্রয়োজন ছিল। ঐ যে আমি মাহরাম নন মাহরাম মেইনটেইন নিয়ে কী করব সে ব্যাপারটা নিয়ে। ছেলেকে কি কঠিন হৃদয়ের মনে হয়েছে?
by (62 points)
ছেলে ১৭ জানুয়ারি মানে ২য় বার দেখা করার আগের দিন আমার ক্লাসমেটদের খুঁজে বের করেছে। এরপর জিজ্ঞেস করেছে যে আমি মানুষ হিসেবে কেমন, কোন রিলেশন ছিল কিনা আগে এইসব। 
by (676,960 points)
আপনার সাথে যে পাত্রের কুফুর সামঞ্জস্যতা আছে,তার ব্যপারে আগানোর পরামর্শ থাকবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...