আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (2 points)
আমার প্রশ্ন এই হাদিসটি কি বানোয়াট?

"একদিন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলি রা. কে বললেন, "প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ৫টি কাজ করবে। যথা:

১. ৪ হাজার দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করবে।

২. একবার কুরআন খতম করবে।

৩..জান্নাতের মূল্য পরিশোধ করবে।

৪..দু জন ব্যক্তি যদি দু জনের উপর রাগ করে থাকে তাইলে সেই রাগ ভাঙ্গিয়ে তাদেরকে খুশি করে তুলবে।

৫. একবার হজ করবে। তারপর ঘুমাতে যাবে।

আলি রা. তখন বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, এটা তো মনে হচ্ছে অসম্ভব। আমি এই পাঁচটি কাজ কীভাবে করতে পারবো?

তখন নবি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

১. "সূরা ফাতিহা ৪ বার পড়লেই চার হাজার দিনার সদকা করার সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে।

২. সূরা ইখলাস ৩বার পড়লে একবার কুরআন খতমের সাওয়াব পাবে।

৩. তিনবার যেকোনো একটি দরুদ শরিফ পড়বে, তাহলে জান্নাতের মুল্য পরিশোধ করার সমপরিমাণ সাওয়াব পাওয়া যাবে। (যেমন: সবচেয়ে ছোট দরুদ শরীফ হচ্ছে, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)

৪. যেকোনো ইস্তাগফার বা আস্তাগফিরুল্লাহ ১০ বার পাঠ করলে দু জন অখুশি মানুষকে খুশি করার সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে।

৫. সর্বশেষ কালেমা শাহাদত চারবার পাঠ করলে একটি হজ সমপরিমাণ সাওয়াব পাওয়া যাবে।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

https://ifatwa.info/85221/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
লোকমুখে একটি বর্ণনার কথা শোনা যায়,
আলী রা.-কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আলী! তুমি পাঁচটি কাজ না করে ঘুমাবে না। কাজ পাঁচটি হল :

১. চার হাজার দিনার ছদকা দিয়ে ঘুমাবে।

২. এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করে ঘুমাবে।

৩. জান্নাতের মূল্য দিয়ে ঘুমাবে।

৪. দু’ ব্যক্তির মাঝের বিবাদ মিটিয়ে ঘুমাবে।

৫. একটি হজ্ব আদায় করে ঘুমাবে।

এ কথা শুনে আলী রা. বললেন, আল্লাহর রাসূল! এ তো আমার জন্য দুঃসাধ্য কাজ। আমি কীভাবে এগুলো করতে পারি?

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

(১) ঘুমের সময় চার বার সূরা ফাতেহা পাঠ করলে তোমার আমলনামায় চার হাজার দিনার ছদকা করার সওয়াব লেখা হবে।

(২) তিন বার কুলহুওয়াল্লাহ সূরা পড়লে তোমার আমলনামায় এক খতম কুরআন পড়ার সওয়াব লেখা হবে।

(৩) তিন বার দরূদ শরীফ পাঠ করলে জান্নাতের মূল্য আদায় হয়ে যাবে।

(৪) দশবার ইসতেগফার পড়লে বিবাদ মিটানোর সওয়াব লাভ হবে।

(৫) চার বার কালেমায়ে তামজীদ পাঠ করলে এক হজ্বের সওয়াব পাওয়া যাবে।

একথা শুনে আলী রা. বললেন, আল্লাহর রাসূল! আমি প্রতিদিনই এই আমল করে ঘুমাবো- ইনশাআল্লাহ!

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এটি একটি ভিত্তিহীন বর্ণনা। হাদীসের নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে এ বর্ণনা নেই। এটি আরব-অনারব সকলের মাঝেই প্রসিদ্ধ।
কিন্তু এর দালীলীক কোনো ভিত্তি নেই। 

এ ধরনের ভিত্তিহীন বর্ণনা প্রচার করা গুনাহের কাজ। এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

কেননা মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করা কোনোভাবেই জায়েজ নেই।       
রাসূল সাঃ এর নামে মিথ্যা কথা বলার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী এসেছে হাদীসে। 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ»

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছেকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল।
 {মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-১২০০, মুসনাদে ইবনুল জিদ, হাদীস নং-১৪৮০, মুসনাদে দারেমী, হাদীস নং-৬১৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩}

عَنِ المُغِيرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ كَذِبًا عَلَيَّ لَيْسَ كَكَذِبٍ عَلَى أَحَدٍ، مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ»

হযরত মুগীরা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল ইরশাদ করেছেন, আমার উপর মিথ্যারোপ করা অন্য কারো উপর মিথ্যারোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি ইচ্ছেকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল। 
{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১২৯১, ১২২৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১২৭৬}

تذكرة الموضوعات لطاهر الفتّني: (ص: 8، ط: إدارة الطباعة المنيرية)
الثالث في كتب أحاديثها موضوعة في الكذابين.
في الخلاصة قال الشيخ قد صنف كتب في الحديث وجميع ما احتوت عليه موضوع كما مر من موضوعات القضاعي.۔۔۔. ومنها وصايا علي رضي الله عنه كلها موضوعة عنه سوى الحديث الأول وهو "أنت مني بمنزلة هارون من موسى غير أنه لا نبي بعدي"
সারমর্মঃ-
রাসুলুল্লাহ সাঃ আলি রাঃ কে ওছিয়ত করেছিলেন,এ মর্মে সমস্থ রেওয়ায়াতে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। 
তবে একটি রেওয়ায়াত ব্যাতিত,এই রেওয়ায়াত সহীহ। তাহা হলো,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আলী (রাযিঃ) কে বলেছেনঃ তুমি আমার কাছে তেমন যেমন মূসা (আঃ) এর কাছে হারূন। তবে আমার পর আর কোন নাবী আসবেন না।

الأسرار المرفوعة لملا علي القاري: (ص: 371، ط: دار الکتب، بشاور)
وقد قال بعض المحققين إن وصايا علي المصدرة بياء النداء كلها موضوعة غير قوله عليه الصلاة والسلام
يا علي أنت مني بمنزلة هارون من موسى إلا أنه لا نبي بعدي.
সারমর্মঃ-
রাসুলুল্লাহ সাঃ আলি রাঃ কে ওছিয়ত করেছিলেন,এ মর্মে সমস্ত রেওয়ায়াত বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। 
তবে একটি রেওয়ায়াত ব্যাতিত,এই রেওয়ায়াত সহীহ। তাহা হলো,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আলী (রাযিঃ) কে বলেছেনঃ তুমি আমার কাছে তেমন যেমন মূসা (আঃ) এর কাছে হারূন। তবে আমার পর আর কোন নাবী আসবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 72 views
...