আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
59 views
in পবিত্রতা (Purity) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম। মুহতারাম, আমরা সাধারণত গোসলের সময় আগের দিনের পরিধেয় কাপড় (লুঙ্গি/প্যান্ট) ধুয়ে নতুন কাপড় পরে থাকি। কোন নাপাক লেগেছে সেটা টের না পেলে সাধারণত কাপড় পরিবর্তন করা হয় না। বেশিরভাগ সময় একই কাপড়ে ওই দিনের ও রাতের পুরো সালাত পড়া হয়। কিন্তু আমাদের অজান্তেই কাপড়ে মযি, অদি বা প্রস্রাবের সামান্য ফোটা লেগে যেতে পারে যেটা এক দিরহাম থেকে কম। লুঙ্গি সাইজে বড় হওয়ায় দেখাও যায় না কোথায় লেগেছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে

১) লেগেছে কি লাগে না সেটা আমার চোখে পড়ে না কিন্তু মযি বা অদি লাগতে পারে এটা স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে সারাজীবনের জন্য পরের দিন গোসলের সময় আগের দিনের পরিধেয় কাপড় (লুঙ্গি) ধোয়ার বিধান কি? একবার ধুলেই হবে নাকি ৩ বার ধুতে হবে?

২) যদি ৩ বার ধুতে হয় তবে প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে জানা আছে। কিন্তু প্রত্যেকবার কাপড় কি কচলিয়ে ধুতে হবে নাকি বালতির পানিতে উপর নিচ করে ভিজিয়ে তারপর উঠিয়ে নিংড়াতে হবে?

৩) প্যান্টের ক্ষেত্রে ধারণা করা যায় কিছু লাগলে চেইনের নিচের অংশেই লাগবে। সেক্ষেত্রে চেইনের নিচের অংশ ভালোকরে কচলিয়ে একবার ধুয়ে নিলে সমস্যা হবে?

৪) এতদিন পর্যন্ত কাপড়ে দৃশ্যমান নাপাকি যেমন মযি লেগে থাকতে দেখলে সেই অংশটা ভালো করে ধুয়ে পুরো কাপড়টা একবার ধুয়ে রেখে দিতাম। আর আগের দিনের পরিধেয় লুঙ্গিও বালতির পানিতে একবার ধুয়ে মেলে দিতাম। এটা কি ভুল ছিল?

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদিস শরিফে এসেছে,আসমা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 أَنَّ النَّبِيَّ  ﷺ قَالَ -فِي دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ-: «تَحُتُّهُ، ثُمَّ تَقْرُصُهُ بِالْمَاءِ، ثُمَّ تَنْضَحُهُ، ثُمَّ تُصَلِّي فِيهِ

হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘পানি দিয়ে ঘষা দিবে তারপর পানি দ্বারা ভালোভাবে ধৌত করবে। অতঃপর সলাত আদায় করবে।’ (বুখারী ২২৭,৩০৭)

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَتْنَا أُمُّ يُونُسَ بِنْتُ شَدَّادٍ، قَالَتْ حَدَّثَتْنِي حَمَاتِي أُمُّ جَحْدَرٍ الْعَامِرِيَّةُ، أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَةَ عَنْ دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ فَقَالَتْ : كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم وَعَلَيْنَا شِعَارُنَا وَقَدْ أَلْقَيْنَا فَوْقَهُ كِسَاءً فَلَمَّا أَصْبَحَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخَذَ الْكِسَاءَ فَلَبِسَهُ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الْغَدَاةَ ثُمَّ جَلَسَ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ هَذِهِ لُمْعَةٌ مِنْ دَمٍ . فَقَبَضَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى مَا يَلِيهَا فَبَعَثَ بِهَا إِلَىَّ مَصْرُورَةً فِي يَدِ الْغُلَامِ فَقَالَ " اغْسِلِي هَذِهِ وَأَجِفِّيهَا ثُمَّ أَرْسِلِي بِهَا إِلَىَّ " . فَدَعَوْتُ بِقَصْعَتِي فَغَسَلْتُهَا ثُمَّ أَجْفَفْتُهَا فَأَحَرْتُهَا إِلَيْهِ فَجَاءَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِنِصْفِ النَّهَارِ وَهِيَ عَلَيْهِ

উম্মু জাহদার আল-‘আমিরিয়্যাহ সূত্রে বর্ণিত। তিনি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে গেলে কি করতে হবে? ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, এক রাতে আমি (হায়িয অবস্থায়) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে রাত যাপন করলাম। আমাদের গায়ে নিজ নিজ কাপড় ছিল। সেটির উপর আমরা একটি চাদরও জড়িয়ে নিলাম। ভোর হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ চাদরখানি পরিধান করে ফজরের সলাত আদায়ে চলে গেলেন। তিনি সলাত আদায় করার পর বসলেন। তখন এক লোক বলল, হে আল্লাহর রসূল! এতে রক্তের দাগ দেখা যাচ্ছে! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাগ ও তার আশেপাশের অংশ হাতের মুঠোয় ধরে ঐ অবস্থায়ই এক গোলামের দ্বারা চাদরটি আমার কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং বললেনঃ এটা ধুয়ে ভাল করে চিপে নিয়ে আবার আমার নিকট পাঠিয়ে দাও। আমি এক পাত্র পানি নিয়ে তা ধুয়ে ভাল করে পানি নিংড়িয়ে (শুকিয়ে) তাঁর নিকট পাঠিয়ে দিলাম। দুপুরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ চাদরটি গায়ে দিয়ে (ঘরে) ফিরলেন।
(আবু দাউদ ৩৮৮)

শরীয়তের বিধান হলো কাপড়ে/ চাদরে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রত্যেকবার ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে তাতে কোনো দোষ নেই। এতেই চাদর কিংবা কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।  (হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১, বেহেশতি জিওর ২/৭৭ )

কাপড়ে অদৃশ্যমান নাজাসত লাগলে, কাপড়কে তিনবার ধৌত করে তিনবারই নিংড়াতে হতে।এবং শেষ বার একটু শক্তভাবে নিংড়ানো হবে যাতে করে পরবর্তীতে আর কোনো পানি বাহির না হয়।(ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া;২/৫৭৪,জা'মেউল ফাতাওয়া;৫/১৬৭) 

আরো জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/118

وغير المرئية بغسلهاثلاثا والعصر كل مرة
অদৃশ্যমান নাপাক বস্তু তিন বার ধৌত করতে হবে।এবং প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে।
(নুরুল ইযাহ ৫৬)

উল্লেখ্য, তিনবারের কথা বলা হয়, যাতে সন্দেহ না থাকে। অন্যথায় যদি প্রবাহমান পানি যেমন, নদী, পুকুরে বা টেপের পানিতে এত বেশি করে ধোয়া হয়, যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায় তাহলে তা পাক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তিনবার নিংড়িয়ে ধোয়া জরুরি নয়। (রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৩ আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৭ শরহুল মুনইয়া ১৮৩) 
,
আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
আপনি যদি নিশ্চিত হোন যে নাপাকি লেগেছে,সেক্ষেত্রে তিনবার করে ধোয়া লাগবে।

নাপাকি লাগা নিয়ে নিশ্চিত না হলে একবার ধোয়াই যথেষ্ট। 

(০২)
প্রত্যেকবার কাপড় কচলিয়ে ধুতে হবেনা।
একবার কচলিয়ে ধুবেন।
এর পরবর্তী ২ বার বালতির পানিতে উপর নিচ করে ভিজিয়ে তারপর উঠিয়ে নিংড়ালে হবে।

(০৩)
সেই অংশ কচলিয়ে একবার ধোয়াই যথেষ্ট। 
এর পরবর্তী ২ বার কচলিয়ে নিতে হবেনা।
নিংড়ালেই হবে।

(০৪)
যেহেতু আপনি তিনবার করে ধুয়ে পাক করেননি,সুতরাং আপনার কাজটি ভুল ছিলো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 143 views
...