আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১-এক বোনের পক্ষ থেকে প্রশ্ন।
উনার ২ভরি স্বর্ন আছে,রুপা নেই।৫/৬ মাস আগে ৫০ হাজার টাকার মালিক হোন।এই টাকা থেকে ২০হাজার একজনকে ঋণ দেয়া।বাকি ৩০হাজার হাসবেন্ডের কাছে বর্তমানে।উনার প্রয়োজনে  নেন আবার ওয়াফকে দেন এমন।
উনার প্রশ্ন উনার যাকাত আসতেছে কিনা?
আসলে কত টাকা?

২-আগে ভাল কিছু পেলে,কোনো আমল,কোন লিখা অন্যান্যদের শেয়ার করতাম দাওয়ার উদ্দেশ্য।এখন মনে হয় আমার নিজের ইবাদতের ইখলাস নষ্ট হয়ে যায় তাই আর শেয়ার করতে ইচ্ছে করেনা।যেমন কাউকে জুমাবারে সুরা কাহাফের কথা মনে করিয়ে দিলে মনে হয় সে এইভাবে আমার আমলের কথা জেনে যাচ্ছে কিংবা তাকে আমি আমার আমলের কথা জানিয়ে দিচ্ছি।আর এইভাবে যেন আমার ইখলাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।তাই আর কাউকে কিছু দিতে ইচ্ছে করেনা।

কিভাবে কি করবো বুঝতেছিনা।

1 Answer

0 votes
by (678,480 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২
আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।
দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২।

সাড়ে ৫২ ভরি রুপা হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
عن أبي سعيد الْخُدْرِي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «ليس فيما دون خمس أَوَاقٍ صدقة، ولا فيما دون خمس ذَوْدٍ صدقة، ولا فيما دُونَ خمسة أَوْسُقٍ صدقة».  
[صحيح] - [متفق عليه]

আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।”
(বুখারী,মুসলিম)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে পূর্ণ  নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে উক্ত বোনের কাছে আগে থেকেই ২ভরি স্বর্ণ আছে।
সুতরাং সেই বোনের মালিকানায় যদি এতোদিন দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কিছু টাকাও (চাই তাহা ১০/১০০ টাকা হোকনা কেনো)
থেকে থাকে,আর এর উপরে বছর অতিবাহিত হয়,অর্থাৎ প্রয়োজন অতিরিক্ত ঐ টাকার মালিক হওয়ার পর যদি এক বছর পূর্ণ হয়,তারপরেও উক্ত টাকা তার মালিকানায় থাকে,সেক্ষেত্রে এমতাবস্থায় তার উপর যাকাত ফরজ হবে। 

আর যদি তার কাছে দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত সামান্য টাকাও না থাকে,সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে যেদিন তিনি সেই ৫০ হাজার টাকার মালিক হোন,সেই দিন তিনি নেসাবের মালিক হয়েছেন।

এমতাবস্থায় এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরেও যদি সেই টাকা বা তার আংশিক টাকা তার মালিকানায় থাকে,সেক্ষেত্রে এমতাবস্থায় তার উপর যাকাত ফরজ হবে। 

★এক বছর পূর্ণ হওয়ার দিন তার কাছে যতটাকা থাকবে,সেই টাকা আর উক্ত ২ ভরি স্বর্ণের বর্তমান বাজার মূল্য হিসেব করে চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে।

এক্ষেত্রে ২০ হাজার যে একজনকে ঋণ দিয়েছে,সেই টাকা উত্তোলনের পর সেই টাকার যাকাত দিতে হবে।

(০২)
আপনি দাওয়াতের তাকিদে আমলের কথা মানুষকে বলতে পারেন।
আর নিজের আমলের সময় খালেস আল্লাহর জন্য আমল করবেন।
তাহলে ইখলাস নষ্ট হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى هُدًى إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ اتَّبَعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى ضَلَالَةٍ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِ مِثْلُ أَوْزَارِهِمْ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাহার নিকট খবর পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ যেকোন আহবানকারী হিদায়াতের দিকে আহবান করিবে তবে তাহাকে তাহার অনুসরণকারীদের সমান পুণ্য দেওয়া হইবে। অনুসরণকারীদের পুণ্য হইতে বিন্দুমাত্র কম করা হইবে না। আর যেকোন আহবানকারী পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করিবে, তবে তাহার উপর অনুসরণকারীদের পাপসমূহের সমান পাপ বৰ্তাইবে। তাহাতে অনুসরণকারীদের পাপসমূহের এতটুকুও কম করা হইবে না।
(মুয়াত্তা মালিক ৪৯৬)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...