আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in সাওম (Fasting) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম,, আমি ১ম গর্ভবতী প্রায় এক মাস চলছে।প্রথম রোজা ঠিকভাবে রাখলেও ২য় রোজায় সাহরি খাওয়ার পরপরই বুমি করে ফেলি।ঠিক ওই সময় আজানও দিয়ে দিছিলো। আমার প্রশ্ন হচ্ছে,,
১.বুমি করার কারণে কি আমার রোজা ভঙ্গ হয়েছে?

২.এমতাবস্থায় আমি একটু পানিও খেতে পারিনি,তাই আমার  মুখ গলা শুকিয়ে আসছে,,রোজাও ভাঙ্গতে চাচ্ছি না,কিন্তু খারাপ লাগছে অনেক।এর বিধান কি?রোজা না রাখলে কি গুনাহগার হবো?

৩.শারীরিক দূর্বলতার কারণে তারাবির নামাজ ও পড়তে পারি নাই,আবার সুস্থতাবোধ করায় ১ম দিন সম্পূর্ণ তারাবির নামাজ পড়েছি।আমার প্রশ্ন,তারাবির নামাজ না পড়ার জন্য কি আমি গুনাহগার হবো??

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ۖ [٢:١٨٧]

আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। [সূরা বাকারা-১৮৭]

,

যেসব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়

১. রোজার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় কুলি করার সময় অনিচ্ছায় গলার ভেতর পানি প্রবেশ করলে।

২. পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্যকিছু শরীরে প্রবেশ করালে।

৩. রোজাদারকে জোর করে কেউ কিছু খাওয়ালে।

৪. রাত অবশিষ্ট আছে মনে করে সুবেহ সাদেকের পর পানাহার করলে।

৫. ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে।

৬. ইচ্ছাকৃত ভাবে মুখ ভরে বমি করলে।

৭. জোরপূর্বক সহবাস করলে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর শুধু কাজা করতে হবে এবং স্বামীর কাজা-কাফফারা দু’টোই করতে হবে।

৮. ভুলবশত কোনো কিছু খেয়ে, রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছা করে আরও কিছু খেলে।

৯. বৃষ্টির পানি মুখে পড়ার পর তা খেয়ে ফেললে।

১০. নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে।

১১. জিহ্বা দিয়ে দাঁতের ফাঁক থেকে ছোলা পরিমাণ কোনো কিছু বের করে খেয়ে ফেললে।

১২. অল্প বমি মুখে আসার পর ইচ্ছাকৃতভাবে তা গিলে ফেললে।

,

গর্ভবর্তী ও দুগ্ধদানকারিনীর জন্য সিয়াম পালন না করার অনুমতি।

হাদিস শরীফে এসেছে

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَوَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، رَجُلٌ مِنْ بَنِي عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ قَالَ أَغَارَتْ عَلَيْنَا خَيْلُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدْتُهُ يَتَغَدَّى فَقَالَ " ادْنُ فَكُلْ " . فَقُلْتُ إِنِّي صَائِمٌ . فَقَالَ " ادْنُ أُحَدِّثْكَ عَنِ الصَّوْمِ أَوِ الصِّيَامِ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى وَضَعَ عَنِ الْمُسَافِرِ الصَّوْمَ وَشَطْرَ الصَّلاَةِ وَعَنِ الْحَامِلِ أَوِ الْمُرْضِعِ الصَّوْمَ أَوِ الصِّيَامَ " .

আবূ কুরায়ব ও ইউসুফ ইবনু ঈসা (রাঃ) ..... বানু আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব গোত্রের আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাহিনী আমাদের কবীলায় অকস্মাৎ আক্রমণ করে। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলাম। তখন তিনি তাঁকে সকালের আহারে রত পেলাম। তিনি বললেনঃ কাছে আস এবং খাও। আমি বললাম, আমি তো সায়িম। তিনি বললেনঃ কাছে আস। তোমাকে আমি সিয়াম সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছি। আল্লাহ তা’আলা মূসাফির থেকে অর্ধেক সালাম মাফ করে দিয়েছেন আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিণী মহিলাদের জন্য সিয়াম পালন মাফ করে দিয়েছেন। সুনান আত তিরমিজী, হাদিস নং- ৭১৩

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

১. না, বমি করার কারণে রোজা ভাঙ্গে না।

২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি খুবই কষ্ট হয় এবং রোজা ভাঙ্গা ছাড়া উপায় না থাকে তখন রোজা ভেঙ্গে ফেলবেন এবং রমজানের পরে শুধু এই রোজার কাযা করে দিলেই হবে। কাফফারা দেওয়া লাগবে না।

বি:দ্র: আপনি দ্বীনদার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন। আপনি যেহেতু গর্ভবতী। তাই ডাক্তার আপনার শারিরিক অবস্থা দেখে যদি রোজা রাখতে নিষেধ করেন তখন রোজা না রাখার আপনার জন্য অনুমতি রয়েছে। তবে পরে অবশ্যই কাযা করে দিতে হবে।

,

৩. আপনি দাড়িয়ে তারাবির নামাজ পড়তে না পারলে প্রয়োজনে বসে বসে রুকু-সিজদা করে নামাজ পড়বেন। এটাও না পারলে প্রয়োজনে বসে বসে ইশারায় নামাজ পড়বেন। তবুও তারাবির নামাজ পড়া ছাড়বেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...