আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামুআলাইকুম শাইখ।সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ইউনিভার্সিটির মেয়ে বিয়ে না করা, কমবয়সী মেয়ে বিয়ে করার(এই হাদিসের প্রতি পূর্ণ সম্মান আছে আমার) পক্ষে অনেকে সরব হয়েছেন।সাধারণত কোনো পুরুষই বেশি বয়সী মেয়ে বিয়ে করতে চায়না,অর্থাৎ এই বিষয়টি অলরেডি এস্টাবলিশ ছিল,এভাবে এটাকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে, প্রচার করে অনেক বয়স বেড়ে যাওয়া অবিবাহিত বোনদের পরিস্থিতি আরও কঠিন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল এদের অনেকেরই সময়মত চেষ্টা শুরু করেও বিয়ে হয়নি। ইউনিভার্সিটির অনেক মেয়েরা দাতে দাত চেপে ফিতনাহ থেকে,  হারাম সম্পর্ক, ফ্রিমিক্সিং থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে সবার পড়া ছেড়ে দেয়ার  মত পরিস্থিতি থাকেনা। এই ভাইয়েরা যেভাবে প্রচার চালিয়েছে,দ্বিনী কমিউনিটিতে প্রচার চালিয়েছে  তাতে এই মেয়েগুলোর জন্যই বিয়েটা কঠিন হয়ে যেতে পারে।তাদের প্রায় কারো কথাতেই ব্যালেন্স দেখিনি,গণহারে সব মেয়েকেই প্রায় পতিতা বানিয়ে দিয়েছে।আবার কোনো ফ্রিমিক্সিং রিলেটেড নোংরা কিছু ভাইরাল হলে এরা শুধু মেয়েটাকেই বিয়ে করতে না করে,এরকম ছেলেদেরকে   মেয়েদের বিয়ে না করার কথা বলেনা।আমি জানি তাদের কথাগুলো ভ্যালিড কিন্তু তারা ইনসাফ করছেনা,একজনও ভালো মেয়ে দেশে থাকলে তার প্রতি ইন্সাফ হচ্ছেনা,যে এসব থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছে সারাজীবন তার চরিত্র এভাবে জেনারালাইজ করা তার জন্য মেনে নেয়া অনেক কঠিন।আমি নারীবাদকেও সাপোর্ট করিনা কোনোভাবেই। আমার নারীবাদী মানসিকতা থেকে এরকম চিন্তা আসছে বিষয়টি মোটেও এমন নয়।আমার আশেপাশের এরকম অনেক মেয়েকেইবেসব নিয়ে,এভাবে চরিত্রের দোষ দেয়া নিয়ে কষ্ট পেতে দেখেছি।

১)এখন যদি আমি এদের অভিশাপ দেই যে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে মেয়েদের প্রতি বিদ্বেষ রেখে,না বুঝে, নিজে লাইক কামানো বা অন্যভাবে ফায়দা নেয়ার জন্য এভাবে মেয়েদের পরিস্থিতি কঠিন করে দিচ্ছে তাদের দুনিয়া আখিরাত যেন কঠিন হয়ে যায়,তাদের কপালে যেন অল্পবয়সী চরিত্রহীন নারী থাকে আমি কি গুনাহগার হবো?

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

নির্দিষ্ট ভাবে কোনো মুসলিম ব্যক্তির উপর অভিশাপ দেওয়া জায়েজ নেই।

 কেননা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

سَالِمٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ الرُّكُوْعِ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ مِنَ الْفَجْرِ يَقُوْلُ : اللهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا وَفُلَانًا بَعْدَ مَا يَقُوْلُ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ} رَوَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ.

সালিম (রহ.) থেকে বর্ণিত, তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছেন যে, তিনি ফজরের সলাতের শেষ রাকআতে রুকু থেকে মাথা তুলে ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ্ (আল্লাহ তাঁর প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন। হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা)’, ‘রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ’ বলার পর এটা বলতেনঃ হে আল্লাহ! অমুক, অমুক এবং অমুককে লানত করুন। তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ ….. فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন, এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই। কারণ তারা জালিম।”(সূরা আলু ‘ইমরান ৩/১২৮)

[সহিহ বুখারী, অধ্যায়: তাফসীর, অনুচ্ছেদ: আল্লাহর বাণীঃ এই বিষয়ে আপনার করণীয় কিছুই নেই।]
এ হাদিস থেকে জানা গেল, আল্লাহ তাআলা নির্দিষ্টভাবে কোন কাফিরকেও অভিশাপ দেয়ার অনুমতি দেন নি।
এ মর্মে আরেকটা হাদিস:
উমর ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তির নাম ছিল ‘আবদুল্লাহ, কিন্তু তাকে ‘হিমার’ (গাধা) উপাধিতে ডাকা হতো। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসাতো। একদিন মদপানের অপরাধের জন্য নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ওপর দণ্ড প্রয়োগ করেছিলেন। এরপর আবার একদিন তাকে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আনা হলে তিনি তাকে চাবুক মারার নির্দেশ করলেন। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহ, এই লোকের উপর তোমার অভিসম্পাত হোক। কতবারই না তাকে এ অপরাধে আনা হল!
তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
«لَا تَلْعَنُوْهُ فَوَ اللهِ مَا عَلِمْتُ أَنَّه يُحِبُّ اللّٰهَ وَرَسُوْلَه»
“তাকে অভিশাপ দিও না। আল্লাহর শপথ! আমি তার সম্পর্কে জানি যে, সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালোবাসে।” (বুখারী)
এ হাদিসে দেখা গেলো ,প্রিয় নবি সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দিষ্টভাবে একজন পাপী ব্যক্তিকে অভিশাপ দেয়ার অনুমতি দেন নি।
,
তবে মাজলুম জালেমের প্রতি বদ দুয়া করতে পারবে।
,
বিস্তারিত জানুনঃ  

ইসলামের দৃষ্টিতে কাউকে বদদোয়া দেওয়া কিংবা কারো জন্য অভিশাপ কামনা করা সম্পূর্ণ হারাম। এই ধরনের কাজ থেকে বেঁচে থাকা একান্ত কর্তব্য।

অনেক সময় অভিশাপ হিতেবিপরীত হয়। কাউকে অভিশাপ দিলে সেটা নিজের ওপর নেমে আসে। অন্যের বিপদ ও ক্ষতি কামনা করলে— নিজের কপালে বিপদ জুটে।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত লেখালেখি ইত্যাদির দরুন যদি আপনি নিজে মাজলুম না হয়ে থাকে,তথা জুলুমের স্বীকার না হয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে এভাবে অভিশাপ দেয়া জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...