আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
306 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)

আসসালামু আলাইকুম

প্রেক্ষাপটঃ১
অনেক সময় অনেক ভাই/বোন ইচ্ছাকৃত/অনিচ্ছাকৃতভাবে অনেকসময় বাস/ট্রেন তথা পাবলিক ট্রান্সপোর্টের ভাড়া দেন না সেক্ষেত্রে ঐ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এর পরবর্তীতে খোঁজ পাওয়া না গেলে এবং কি পরিমাণ ভাড়া বাকী আছে সেটি সঠিকভাবে জানতে না পারলে  এক্ষেত্রে করণীয় কি হবে?

প্রেক্ষাপটঃ২
অনেক সময় অনেক ভাই/বোন প্রয়োজনে/অপ্রয়োজনে বাবা/মা এর গচ্ছিত টাকা থেকে কিছু টাকা সরিয়ে ফেলেন বা নিয়ে নেন।যা পরবর্তীতে বাবা-মা অথবা যার গচ্ছিত টাকা চুরি করা হলো তাকে জানান না।এটি পরবর্তীতে জেনে ফেললে সম্পর্কে তিক্ততা আসতে পারে ভেবে এটি তারা প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক।এক্ষেত্রে উপর্যুক্ত গুনাহ
থেকে মুক্ত হবার উপায় কি?


প্রেক্ষাপটঃ৩
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না করার জন্য হাদীসে তাগিদ এসেছে।কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে আপন ভাই-বোনদের মাঝে কোনো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বছরের পর বছর কথা-বার্তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকে অথচ তারা একই ছাদের নিচে বসবাস করছেন।এক্ষেত্রে বারবার সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করা হলেও অনেক সময় জেদ কিংবা কোনো দৈব কারণে যদি যার সাথে মনমালিন্য হয়েছে তিনি রূঢ় আচরণ করেন এবং পুনরায় সম্পর্ককে মেরামত করার ইচ্ছা না দেখা যায়।এক্ষেত্রে করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (678,240 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো  কারো নিকট বান্দার হক পাওনা থাকলে,প্রথমে উক্ত হক পরিশোধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে।সাধ্যমত চেষ্টা করার পরও যদি সেই হককে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত প্রাপ্য হক্বকে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবে।এবং আল্লাহ তা'আলার নিকট খালিছ নিয়তে তাওবাহ করবে। আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ্য থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত ভাড়ার টাকা অনুমান করে একটি এমাউন্ট নির্দিষ্ট করবেন,অতঃপর সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবেন।
,
বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(০২)
মা,বাবার অনুমতি ছাড়া তার অর্থ-সম্পদ নিয়ে নেয়া বা চুরি করা সাধারণ চুরির মতোই গোনাহের কাজ।

জামিয়া বিন নুরি  করাচি পাকিস্তানের ফতোয়া বিভাগের  144103200100 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে উক্ত টাকা যেকোনো ভাবেই হোক,পিতাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
,
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আমর বিন্ ‘আস্ব (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে গাছের ফল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন:

مَنْ أَصَابَ بِفِيْهِ مِنْ ذِيْ حَاجَةٍ غَيْرَ مُتَّخِذٍ خُبْنَةً ؛ فَلَا شَيْءَ عَلَيْهِ، وَمَنْ خَرَجَ بِشَيْءٍ مِنْهُ ؛ فَعَلَيْهِ غَرَامَةُ مِثْلَيْهِ وَالْعُقُوْبَةُ، وَمَنْ سَرَقَ مِنْهُ شَيْئًا بَعْدَ أَنْ يُؤْوِيَهُ الْـجَرِيْنُ فَبَلَغَ ثَمَنَ الْـمِجَنِّ ؛ فَعَلَيْهِ الْقَطْعُ، وَمَنْ سَرَقَ دُوْنَ ذَلِكَ ؛ فَعَلَيْهِ غَرَامَةُ مِثْلَيْهِ وَالْعُقُوْبَةُ.

‘‘কেউ প্রয়োজনের খাতিরে সাথে কিছু না নিয়ে (কারোর কোন ফলগাছের ফল) শুধু খেলে তাকে এর জরিমানা স্বরূপ কিছুই দিতে হবে না। আর যে শুধু খায়নি বরং সাথে কিছু নিয়ে গেলো তাকে ডবল জরিমানা দিতে হবে এবং যথোচিত শাস্তিও ভোগ করতে হবে। আর যে ফল শুকানোর জায়গা থেকে চুরি করলো এবং তা ছিলো একটি ঢালের সমমূল্য তখন তার হাত খানা কেটে দেয়া হবে। আর যে এর কম চুরি করলো তাকে ডবল জরিমানা দিতে হবে এবং যথোচিত শাস্তিও ভোগ করতে হবে’’। (আবূ দাউদ ৪৩৯০; ইব্নু মাজাহ্ ২৬৪৫ নাসায়ী ৮/৮৫; হা’কিম ৪/৩৮০)

আরো জানুনঃ 

আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিস তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্মানহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী, সে যেন আজই তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেয়; সে দিন আসার পূর্বে যে দিন কোন দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) বা দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা) থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম থাকলে সেটা থেকে তার যুলুমের পরিমাণ কেটে নেয়া হবে। আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপের কিছু তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।"[সহিহ বুখারী (২৪৪৯)]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
যখন কোন মানুষ কারো সম্পদ চুরি করে এবং তার পক্ষে তাকে জানানো কঠিন হয়ে যায় কিংবা জানালে সংকট আরও বাড়ার আশংকা থাকে; যেমন— তাদের মাঝে সম্পর্ক নষ্ট হওয়া; সেক্ষেত্রে জানানোটা আবশ্যকীয় নয়। বরং সম্ভাব্য যে কোন পদ্ধতিতে তাকে সম্পদটা ফিরিয়ে দিবে; যেমন তার একাউন্টে জমা করে দেওয়া কিংবা এমন কাউকে দেওয়া যে তার কাছে পৌঁছিয়ে দিবে কিংবা এ ধরণের অন্য কোন মাধ্যমে।

আরো জানুনঃ 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত টাকা মা,বাবার একাউন্টে জমা দিবে।
সেটি সম্ভবপর না হলে অন্য কাহারো মাধ্যমে মা,বাবার কাছে পৌছে দিবে।
,  
(০৩)

আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা নাজায়েজ,এক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাঃ অনেক কঠোরভাষা ব্যবহার করেছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে  

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ " . - صحيح

জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

.(বুখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ১৯-(২৫৫৫), আবূ দাঊদ ১৬৯৬, তিরমিযী ১৯০৯, সহীহুল জামি‘ ৭৬৭১, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৫৪০ সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৪৫, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০২৩৪, মুসনাদুল বাযযার ৩৪০৫, আহমাদ ১৬৭৩২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৭৩৯২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫৪, শু‘আবুল ঈমান ৭৯৫২, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ১৪৯১, আর মু‘জামুল আওসাত্ব ৯২৮৭।)
.
আরো জানুনঃ 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সমস্ত প্রকারের মনমালিন্য ছেড়ে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য,আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে তার সাথে কথাবার্তা বলা শুরু করে দিতে হবে।
প্রয়োজনে শুধু সালাম দিয়ে হলেও কথাবার্তা চালাবে।
অন্য জন যদি সালামের জবাব নাও দেয়,তাও সে সালাম চালিয়েই যাবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (49 points)
reshown by
২।
(উত্তর ২ এর প্রেক্ষিতে)

কিছু টাকা দেয়া হয়েছে।এখন প্রদানকৃত উক্ত টাকা ঋণ হিসেবে দিয়ে দেওয়া হলো মর্মে নিয়ত করলে হবে কি না?(দেয়ার সময় ঋণ পরিশোধের নিয়ত ছিলো না।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...