আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (1 point)
আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু,

মুফতি সাহেব আমার কিছু পরামর্শ প্রয়োজন। আমার হাতে প্রায় ৯-১০ মাস পুরোপুরি ফ্রি সময় আছে। আমি বাংলাদেশ বিচার বিভাগে একজন সহকারী বিচারক হিসেবে মনোনীত হয়েছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ভেরিফিকেশন শেষে আগামী বছর জয়েনিং। এই সময়ের মাঝে কিছু প্রোডাক্টিভিটি কাজে সময় দিতে চাই যা আমার জন্য উপকারী হবে।

আমি নিজে প্ল্যান যেটা করেছি, কোরআন পড়তে শেখা সঠিক মাখরাজ দিয়ে। যেভাবে করলে সুন্দর সুরেলা ভাবে তিলাওয়াত করা যায়। কিছু সূরা হিফজ করা যেগুলো বেশ গুরুত্ববহ। যেমন: সূরা ইয়াসিন, সূরা রহমান, সূরা মূলক (মুখস্ত নেই, তবে কেউ পড়লে তালে থেকে কন্টিনিউ করতে পারি) ইত্যাদি। কোনো মাধ্যম বলতে পারেন? কোনো কোর্স বা কোনো ইউটিউব চ্যানেল, যেখানে তাজবিদ-মাখরাজ শুদ্ধভাবে শেখায়।একইসাথে আপনি আর কিছু রুটিন দিতে পারেন কি ইসলামিক বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের মতো কিছু। আপনার কাছে অনুরোধ থাকলো।

আপনার হয়তো মনে হচ্ছে যে এমন ২৭-২৮ বছরের মুসলিম ঘরের ছেলে কুরআন পড়তে পারেনা এ কেমন বিষয়!

আমি যে এর পূর্বে কখনো শেখার চেষ্টা করিনি তা নয়। কিন্তু কেউ আমার সাথে শুধু শুধু রাগারাগি করলে বা বকা দিলে আমার খুবই খারাপ লাগে। এবং তাকে বা সেই বিষয়টাকে এড়িয়ে চলি সবসময়। ছোটবেলায় প্রথম কোরআন পড়া শেখার চেষ্টা করছিলাম করছিলাম আব্বুর থেকে। কিন্তু প্রথম ২-৩ দিন পর থেকেই শুধু ধমক দিতো পড়ানোর সময়। এজন্য কিছুদিন পরে লেখাপড়ার বাহানা দিয়ে সরে আসছিলাম। এরপরে এক সময় মক্তবে পড়তে যাওয়া শুরু করি। সেখানের হুজুর আরো বেশি রাগী, এমনকি আরো আগে থেকে যারা পড়তো দেখতাম তাদের বেত্রাঘাত ও করতেন। মক্তব ও মাত্র ৪/৫ দিন যেয়ে আর যাইনি।

এইগুলো প্রাইমারি অব্দি। এরপরে ক্লাস সিক্স বা সেভেনে থাকতে, আমাদের সময়ে তো রমজানে ১ মাস এবং ৫-১০ দিন এর মতো ছুটি থাকতো। রমজানের ছুটির সময়ে আব্বুকে আরেকবার বলি শিখিয়ে দিতে। এবার শিখিয়ে দিতে যেয়ে আগের আচরণ এর পুনরাবৃত্তি করে। একবার কোনোরকম একটু বুঝিয়ে বা না বুঝিয়ে পড়তে বলে, না পারলেই ধমক।
এরপরে ছেড়ে দিয়েছিলাম আর কখনো চেষ্টা করিনি।

স্কুলে যাতে শিক্ষকের বেত্রাঘাত খাওয়া না লাগে এজন্য কখনো হোমওয়ার্ক মিস করতাম না। সঠিক টাইমে উপস্থিত হতাম যাতে এসেম্বলিতে টাইমমতো যেতে পারি, নইলে ও পিটি শিক্ষক এর বেত্রাঘাত খাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তো পুরো প্রাইমারি লাইফে একবার ও বেত্রাঘাত খাইনি, হাইস্কুলে খুব সম্ভবত ৪-৫ বার হবে। খুব ডিসিপ্লিনে চলছি শুধু মার এর ভয়ে।

আমায় দয়া করে কোনো গাইডলাইন দিন। জাজাকাল্লাহু খাইর।

1 Answer

0 votes
ago by (74,100 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/11294/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে,

হযরত আনাস ইবনে মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত,নবীজী সাঃ বলেনঃ

ﻋﻦ ﺃﻧﺲ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﻗَﺎﻝَ : ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲِّ ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋﻠﻴﻪِ ﻭﺳﻠَّﻢ ﺃﻧﻪ ﻗﺎﻝَ : ( ﻃَﻠَﺐُ ﺍﻟﻌِﻠْﻢِ ﻓَﺮِﻳْﻀَﺔٌ ﻋَﻠَﻰْ ﻛُﻞِّ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ) . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ( 224  .

রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেনঃ দ্বীনি জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয।

,

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে  

وَفَرْضٌ عَلَى كُلِّ مُكَلَّفٍ وَمُكَلَّفَةٍ بَعْدَ تَعَلُّمِهِ عِلْمَ الدِّينِ وَالْهِدَايَةِ تَعَلُّمُ عِلْمِ الْوُضُوءِ وَالْغُسْلِ وَالصَّلَاةِ وَالصَّوْمِ، وَعِلْمِ الزَّكَاةِ لِمَنْ لَهُ نِصَابٌ، وَالْحَجِّ لِمَنْ وَجَبَ عَلَيْهِ وَالْبُيُوعِ عَلَى التُّجَّارِ لِيَحْتَرِزُوا عَنْ الشُّبُهَاتِ وَالْمَكْرُوهَاتِ فِي سَائِرِ الْمُعَامَلَاتِ. وَكَذَا أَهْلُ الْحِرَفِ،

প্রত্যেক মুকাল্লাফ-মুকাল্লাফাহ (আক্বেল-বালেগ নর-নারী) এর উপর দ্বীনের প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জনের পর ফরয হচ্ছে, ওজু, গোসল, নামায এবং রোযা, এর জ্ঞান অর্জন করা এবং নেসাবপ্রাপ্ত মালের মালিকের উপর যাকাতের জ্ঞান অর্জন করা এবং যার উপর হজ্ব ফরয, তার জন্য হজ্বের বিধি-বিধান অর্জন করা এবং ব্যবসায়ীদের উপর ব্যবসা সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করা। এজন্য ফরয, যাতে তারা উক্ত বিষয় সম্পর্কিত বিভিন্ন অস্পষ্টতা, সন্দেহ ও অপছন্দনীয় দিবসসমূহ থেকে অনায়াস বেছে থাকতে পারে। ঠিকতেমনিভাবে পেশাজীবীদের জন্য সংশ্লিষ্ট পেশা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা ফরয।

,

ফরযে আইন ইলম হলোঃ

আল্লাহর ফরয হুকুমকে ঠিক ঠিক ভাবে অনুসরণ করতে এবং নিষিদ্ধ বিষয় থেকে বাঁচতে যত বিষয় সম্পর্কে যতটুকু ইলমের প্রয়োজন ততটুকু ইলম শিক্ষা ফরয। যেমন, নামায আল্লাহর ফরয বিধান, নামায পড়ার জন্য পবিত্রতা অর্জন শর্ত। তাই পবিত্রতার ইলম অর্জন ফরয। ঠিক তেমনি কেরাত ফরয, তাই কেরাত শিক্ষা ফরয। ঈমান আনয়নের জন্য শিরক মুক্ত হয়ে মনেপ্রাণে একমাত্র আল্লাহকে বিশ্বাস করা ও তার বিধি-বিধান কে মান্য ফরয। তাই এ সম্পর্কীয় ইলম অর্জন ফরয এবং রোযা আল্লাহর ফরয বিধান। রোযা রাখতে হলে তার করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণ ইলম অর্জন ফরয।অর্থাৎ যতটুকু ইলম হলে রোযাকে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়, ততটুকু পরিমাণ ইলম অর্জন ফরয। ইত্যাদি ইত্যাদি।

,

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/3709/

https://ifatwa.info/3782/

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

,

এ বিষয়ে অনলাইনে বিস্তারিত পরামর্শ দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আপনি অফলাইনে কারোর কাছ থেকে পরামর্শ নিলে ভালো হয়। বিশেষ করে মসজিদের ইমাম (যোগ্য আলেম হয়ে থাকলে) সাহেবের কাছ থেকেও পরামর্শ নিতে পারেন। আবার মুফতি যুবায়ের আহমদ হাফি. এর প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা, মান্ডা শেষ মাথা, মুগদা, ঢাকা। সেখানে গিয়েও পরামর্শ নিতে পারেন। তাদের অনেকগুলো শাখা আছে যেখানে অবস্থান করেও ইলম শিক্ষা করা যায়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...