আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
341 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
(১) এই লিখাটা কতটুকু সত্য???

...................................................

দাবার গ্র্যান্ডমাস্টার ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (মৃত্যু ১৪৪৯ খ্রিস্টাব্দ)

আল্লামা সাখাভি রহিমাহুল্লাহ তার গুরু শায়খুল ইসলাম ইবনে হাজারের জীবনী রচনা করেছেন। তাতে উল্লেখ করেছেন ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহ ব্লাইন্ড চেস (ইস্তিদবার) খেলতেন! এমনকি তিনি মিসরের ত্রিশ বছরের গ্র্যান্ডমাস্টারকে (আলিয়া) পর্যন্ত হারিয়েছেন!

আল্লামা সাখাবি বলেন,

وأما انبساطه، لا سيما في محالّ النُّزه، فمعلوم. وربما لعب الشَّطرنج، لكن في النادر جدًّا، بحيثُ لم يضبط عنه غير المرَّة والمرتين، مع كونه عاليةً فيه، يلعبُه استدبارًا.
ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহর প্রফুল্ল মেজাজের কথা সুবিদিত — বিশেষত চিত্ত বিনোদনে। তিনি মাঝে মাঝে দাবাও খেলতেন। তিনি নিজে একজন আলিয়া (গ্র্যান্ডমাস্টার) হলেও তার কেবল এক দুইটি ম্যাচ রেকর্ডেড আছে। তিনি না দেখে দাবা খেলতেন (ব্লাইন্ড চেস বা ইস্তিদবার)।

فممَّا ضبط عنه لعبُه به مع الشهاب الرِّيشي أحد جماعته بالمناوات بعد أن خطمه رخًّا . وزعم العالية محمد الحلوائي الملقب البُخْش، وهو مِنْ مدة تزيد على ثلاثين سنة عالية، أنَّه لعبه معه مرة سبع دسوت، فضله صاحبُ التَّرجمة بثلاثة منها، وتساويًا في باقيها، واللَّه أعلم. وكان يلعبه مع صهره الشهاب بن مكنون في أوقات راحته. وحكى لي سبطه أنَّه لعبه بعد سنة آمد مع بعض المعتبرين. قال: وأظنه البدر بن الأمانة.

রেকর্ডকৃত খেলাগুলোর একটি ছিল মিসরের মানাওয়াত শহরে তার এক শিষ্য শিহাব আল রীশির সাথে। তিনি তাকে কিস্তি (রুখ) দিয়ে চেকমেট করেছিলেন।
দীর্ঘ তিরিশ বছরের আলিয়াহ মুহাম্মদ হালওয়াই, যাকে বুখশ উপাধি দেয়া হয়েছিল, দাবি করেছেন যে, তিনি ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহর সাথে পরপর সাত গেমের ম্যাচ খেলেছেন। আলিয়া বুখশ যার তিনটিতে হেরেছেন, বাকিগুলো ড্র হয়েছিল।

এছাড়াও ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহ অবসর সময়ে আপন শ্যালক শিহাব বিন মাকনুনের সাথে দাবা খেলতেন। আমাকে তার নাতি জানিয়েছে যে, 'আমেদ' এর পরের বছর তিনি এক গণ্যমান্য দাবাড়ুর সাথে খেলেছেন। আমার ধারণা তিনি ছিলেন বদর বিন আমানাহ। (সমাপ্ত)

চিন্তা করে দেখুন এই মুসলিম উম্মতের শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তিরা কতটা মননশীল ছিলেন? আর ইসলামি সভ্যতাও কতটা আধুনিক ছিল! মিসরে দাবার টুর্নামেন্ট হত। সেই টুর্নামেন্টে জগৎখ্যাত আলেম ও ইমামরা অংশ নিতেন। অথচ আজকের তথাকথিত আলেম সমাজকে দেখুন। তারা পারলে গুহায় গিয়ে মুখ লুকায়। এই কথিত আলেমরা ইসলামের এমন এক রুক্ষশুষ্ক রূপ মানুষকে দেখায় যা দেখে লোকে ইসলামের কাছে আসার বদলে দৌঁড়ে পালানোর চিন্তা করে।

আল্লাহর নবী সত্যই এরশাদ করেছেন, ولن يشاد الدين أحد إلا غلبه "ধর্মকে কেউ কঠিন করার চেষ্টা করলে সে নিজেই এর কাছে কাবু হয়ে যাবে।"

1 Answer

0 votes
by (713,920 points)
edited by


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/673 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
দাবা খেলা
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ، ﺃَﻥّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺮَّ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻳَﻠْﻌَﺒُﻮﻥَ ﺍﻟﺸِّﻄْﺮَﻧْﺞِ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : " ﻣَﺎ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻜُﻮﺑَﺔُ ؟ ﺃَﻟَﻢْ ﺃَﻧْﻪَ ﻋَﻦْ ﻫَﺬَﺍ ؟ ﻟَﻌَﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ ﻫَﺬَﺍ "
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺍﻷﻣﺮ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ ﻭﺍﻟﻨﻬﻲ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻨﻜﺮ ﻟﻠﺨﻼﻝ » ﺑَﺎﺏُ ﺍﻹِﻧْﻜَﺎﺭِ ﻋَﻠَﻰ ﻣِﻦْ ﻳَﻠْﻌَﺐُ ﺑِﺎﻟﺸِّﻄْﺮَﻧْﺞِ - رقم الحديث 158
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,একদা রাসূল সাঃ একটি দলের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন,যারা দাবা খেলছিল।তিনি তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন,এ গুলো কী? তোমাদেরকে কি এগুলো থেকে নিষেধ করিনি? যারা এগুলো খেলে তাদেরকে আল্লাহ তা'আলা অভিসম্পাত করেন।

ﻣَﻠْﻌُﻮﻥٌ ﻣَﻦْ ﻟَﻌِﺐَ ﺑِﺎﻟﺸِّﻄْﺮَﻧْﺞِ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﻇِﺮُ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ ﻛَﺎﻵﻛِﻞِ ﻟَﺤْﻢَ ﺍﻟﺨِﻨْﺰِﻳﺮِ »
ﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﻟﺪﻳﻠﻤﻲُّ ( ٤ / ٦٣ )
যে দাবা খেলে সে অভিশপ্ত আর এর দর্শক শুকরের গোশত ভক্ষণকারী মতো।

সাহাবায়ে কেরাম রা. দাবা খেলা থেকে স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন। আর এটা সুস্পষ্ট যে, সাহাবায়ে কেরাম রা. এই নিষেধাজ্ঞা রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকেই শুনে থাকবেন।

হযরত আলী রাযি.বলতেন, দাবা অনারবদের জুয়া। তিনি আরো বলেছেন গুনাহগার লোকেরাই দাবা খেলে। একবার তাঁর কাছে কেউ 'দাবা' সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন, এ খেলা বাতিল তথা অনর্থক কাজের অন্তর্ভুক্ত।আর আল্লাহ তা'আলা বাতিলকে পছন্দ করেন না।

একদা হযরত আলী রা. দাবা খেলারত ব্যক্তিদের নিকট দিয়ে গমনকালে তাদেরকে বললেন,
مَا هَذِهِ التَّمَاثِيلُ الَّتِي أَنْتُمْ لَهَا عَاكِفُونَ
অর্থাৎ- এ মূর্তিগুলি কী? যার পূজারী হয়ে তোমরা বসে আছো।

এ সকল হাদীস ও বর্ণনার কারণেই ইমাম আবু-হানিফা রহ. এবং অন্য কয়েকজন ইমাম দাবা খেলাকে নাজায়েয বলেছেন।যদি ও তাতে জুয়ার সংমিশ্রণ না থাকে।

আল্লামা আবু আব্দুল্লাহ কুরতুবী রহ.সূরায়ে মায়েদার ৯০নং আয়াত তথা
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
এর ব্যখ্যায় বলেন,
هذه الآية تدل علي تحريم اللعب بالنرد والشطرنج قمارا او غير قمار
অর্থাৎ- উক্ত আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে,পাশা এবং দাবা খেলা সর্বাবস্থায় হারাম।চাই তাতে জুয়া হোক বা না হোক।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ইবনে হাজার রাহ সম্পর্কে উক্ত বক্তব্য কতটুকু সঠিক আমরা তা জানিনা।দ্বিতীয়ত ইবনে হাজার রাহ যদি খেলেও থাকেন, তাহলে এটাকে দলীল হিসেবে উপস্থাপন করে উক্ত খেলাকে বৈধ করার কোনো সুযোগ নাই, বরং দাবা খেলা সর্বদাই হারাম ও নাজায়েয।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (713,920 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...