আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
864 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)
স্বপ্ন দোষ হওয়ার আগে টের পেয়ে ঘুম ভেঙে গেলে এবং বীর্য নির্গত হওয়ার আগেই হাত দিয়ে আটকে ফেলে যদি বাথরুমে বীর্য ফেলা হয় এবং কাপড়ে ও শরীরের কোথাও না লাগে তাহলে কি ফরয গোসল না করে নামায পড়া যাবে? জানালে খুবই উপকৃত হব। মহান আল্লাহ্‌ যেন আপনাদের এই সেবা ধারাকে কবুল করেন। আমীন।

1 Answer

+1 vote
by (63,040 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

প্রস্রাব ব্যতীত যৌনাঙ্গ থেকে যা কিছু বাহির হয় তা তিন প্রকারঃ- 

(১) মনি (বীর্য)

 وَمَنِيُّ الرَّجُلِ خَاثِرٌ أَبْيَضُ رَائِحَتُهُ كَرَائِحَةِ الطَّلْعِ فِيهِ لُزُوجَةٌ يَنْكَسِرُ الذَّكَرُ عِنْدَ خُرُوجِهِ، وَمَنِيُّ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَر

পুরুষের মনি বা বীর্য হলঃ-যা সাদা গাঢ় একপ্রকার গন্ধমাখা পিচ্ছিল পানি যা উত্তেজনার সাথে আটকিয়ে আটকিয়ে বের হয়,এবং বের হওয়ার সাথে সাথে পুঃলিঙ্গ নেতিয়ে পড়ে,আর মহিলার বীর্য হল,পাতলা প্রায় হলুদ বর্ণের । 

 

(২) মযি

 وَالْمَذْيُ رَقِيقٌ يَضْرِبُ إلَى الْبَيَاضِ يَبْدُو خُرُوجُهُ عِنْدَ الْمُلَاعَبَةِ مَعَ أَهْلِهِ بِالشَّهْوَةِ

মযিঃ- যা স্ত্রীকে কামুত্তেজনায় স্পর্শের পূর্বে বাহির হয়,এবং যা দেখতে প্রায় সাদা রঙ এর এবং মহিলার ও বের হয় তবে তাকে "কাযয়ুন"বলা হয়।

 

(৩) ওদী 

وَالْوَدْيُ بَوْلٌ غَلِيظٌ وَقِيلَ مَاءٌ يَخْرُجُ بَعْدَ الِاغْتِسَالِ مِنْ الْجِمَاعِ وَبَعْدَ الْبَوْلِ. كَذَا فِي التَّبْيِينِ.

ওদীঃ- গাঢ় প্রস্রাব,কেউ কেউ বলেনঃ ঐ পানি যা সহবাসের পরে গোপনাঙ্গ ধৌত করা পর বাহির হয় এবং যা প্রস্রাবের পর বাহির হয়।

 

উপরোক্ত তিনপ্রকারেরর মধ্যে 

শুধুমাত্র মনি বের হলে গোসল ফরজ হবে। অন্যান্যগুলো বের হলে গোসল ফরজ হবেনা। বরং গোপনাঙ্গ ধৌত করে ওজু করে নিলেই পবিত্রতা অর্জিত হবে। এক্ষেত্রে গোসলের কোনো প্রয়োজন পড়বেনা।

যেমনঃ- ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে.............

الْمَذْيُ يَنْقُضُ الْوُضُوءَ وَكَذَا الْوَدْيُ وَالْمَنِيُّ إذَا خَرَجَ مِنْ غَيْرِ شَهْوَةٍ

মযি অজুকে ভেঙ্গে দেয় ঠিক তেমনিভাবে ওদী এবং ঐ মনি যা কামুত্তেজনা বতীত বাহির হয় তাও ওজুকে ভেঙ্গে দেয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া -১/১০)

শরীয়তের বিধান হলো উত্তেজনা ব্যতীত বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় না। কেননা, গোসল ফরজ হওয়ার জন্য শর্ত হল, বীর্য বের হওয়ার সময় উত্তেজনা থাকতে হবে। 

 

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُواْ

তোমরা জুনুবি হও তবে (গোসল করে) সারা দেহ পবিত্র করে নাও। (সূরা মায়েদাহ ৬)

আর জুনুবি বলা হয়, ওই ব্যক্তিকে যার বীর্য সবেগে ও উত্তেজনার সঙ্গে বের হয়েছে। 

 

যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ  خُلِقَ مِن مَّاءٍ دَافِقٍ

অতএব, মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে, সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। (সূরা আত্ব-তারিক্ব ৫, ৬)

 

রাসূলুল্লাহ আলী রাযি.-কে বলেছিলেন,

فَإِذَا فَضَخْتَ الْمَاءَ فَاغْتَسِلْ

যদি উত্তেজনা বশতঃ বীর্য নির্গত হয় তবে গোসল করবে। (আবুদাউদ ২০৬) অন্যথায় নয়।

 

ফাতাওয়া শামীতে আছে  

وقال ابن عابدين، (قوله: بشهوة) متعلق بقوله: منفصل، احترزبه عما لو انفصل بضرب أو حمل ثقيل على ظهره، فلا غسل عندنا، (رد المحتار

যার সারমর্ম হলো যদি প্রহার করা,বা ভারি বোঝা উঠানোর কারনে বীর্য বের হয়,তাহলে গোসল ফরজ হবেনা।   

 

উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত হলেই গোসল করা আবশ্যক। তাই যেকোনোভাবে উত্তেজনের সাথে বীর্যপাত হলে অবশ্যই গোসল করে নামায পড়তে হবে। শুধু অজু করার দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে না।

 

إِنَّمَا الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ

তথা পানি [বের হবার দ্বারা] পানি {শরীরে ঢালা তথা গোসল] আবশ্যক হয়। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩৪৩}

 

وفرض الغسل عند خروج المنى منفصل عن مقره بشهوة وإن لم يخرج بها (الدر المختار)

বীর্য যদি আপন স্থান থেকে উত্তেজনার সাথে বের হয়,যদিও লিঙ্গ থেকে বের হওয়ার সময় উত্তেজনা না থাকুক,গোসল ফরজ হবে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

গোসল ফরজ হওয়ার জন্য বীর্যপাত হওয়া শর্ত। তা শরীর বা কাপড়ে লাগা শর্ত নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার উপর গোসল ফরজ হবে। সুতরাং এমন পরিস্থিতি কোন দিন হলে গোসল না করে নামাজ পড়া যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 103 views
...