আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (18 points)
edited by
১)বাঘ শিকার করা কি জায়েয শখের বশে???
২)ধরুন একজন কারীর তেলাওয়াত আমার খুব ভালো লাগে। তার তিলাওয়াত শুনি,অন্য কারো কোরআন তেলাওয়াত শুনতে ভালো লাগেনা।
এতে কি শিরক হবে??

৩) কি কি লক্ষন দেখলে বুঝতে পারব যে আমি কোন কিছুকে আল্লাহর চেয়ে বেশি ভালবাসি??

মানে ভালোবাসার ক্ষেত্রে শিরক বুঝব কিভাবে??

৪)আল্লাহর মর্যাদা আর আল্লাহর নামের মর্যাদা কি সমান??

আমরা আল্লাহর ইবাদাত করি নাকি আল্লাহর নামের?

৫)ধরুন দুনিয়ার কিছু বিষয় নিয়ে শিরক করেছি বলে মনে হচ্ছে।আল্লাহর কাছে ওয়াদা করলাম যে, "যদি এই বিষয় গুলো শিরক হয়,তবে আমি এই রিলেটেড দুনিয়াবি কাজ গুলো ছেড়ে দিব।"এই বিষয় গুলো শিরক কিনা সেটা আমি আলেম দের কাছে জিজ্ঞাসা করি।

আবার কিছু শিরক এমন করেছি বলে সন্দেহ হচ্ছে যেগুলা আখিরাত এর সাথেই সম্পর্ক যুক্ত।দুনিয়ার কাজের সাথে এগুলার কোন সম্পর্ক নাই।

এগুলা নিয়ে আমি আলেম দের কে জিজ্ঞেস করি না।

আমার এই মনভাব কি শিরক??

৬)ধরুন আমি ঠিক করলাম কোনো হালাল কাজ করবো। দুয়া করলাম," আল্লাহ এ কাজটা আমার জন্য সহজ করে দাও।" তারপর আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করলাম। মানে উসিলা গ্রহন করলাম। এই উসিলা গ্রহণ করার পর আমি মন্র শান্তি বোধ করছিলাম।বিশ্বাস হচ্ছিল হয়তো কাজ টা হবে। এই যে আল্লাহর কাছে দোয়া করার পরে নিশ্চিন্ত না হয়ে উসিলা গ্রহণ এর পর বেশি নিশ্চিন্ত হয়ে আছি এতে কি শিরক হবে??

৭)আমি জিম করতে খুব পছন্দ করি ধরুন একদিন মাজারে গিয়ে কবরের কাছে দোয়া করলাম যে হে কবর আমার শরীরকে জিমের মাধ্যমে সুগঠিত বানিয়ে দাও এরপর তোওবা করে ফিরে আসি
আল্লাহর কাছে ওয়াদা করি যে যদি আর কোন দিন জিমের কারনে কোন গুনাহ বা শিরক করি তবে সারাজীবন এর জন্য জিম করা বাদ দিয়ে দিব।

এবার থেকে সব সময় চিন্তা হয়েছেন জিম করতে পারব কি পারব না এই চিন্তাটা আসতেছে এটা কি শিরক হবে??

৮)ধরুন একজন পড়াশোনা করতে খুব ভালবাসত। তার এমন অবস্থা যে যদি পড়াশোনার জন্য শিরক করা লাগে সেটাও করবে।তবুও সে পরাশুনা ছাড়তে রাজি না। মাঝেমধ্যেই যখনই সে পরাশুনায় খারাপ করত তখন সে ঐতিহাসিক স্থানের পাথরগুলোর কাছে যেয়ে তারপর তাদের উপর দুধ ঢেলে তাদের কাছে দোয়া কর।সে জানত যে শিরক হচ্ছে।তাও সে করতে।তার কাছে আল্লাহর চেয়ে পতাশুনা বেশি গুরুত্বপূন্ন ছিল। সে একবার এমন পরিস্থিতি তে পরেছিল যে,হয় শিরক করে পরাশুনা করতে হবে নয়তো শিরক,পরাশুনা বাদ দিয়ে তাওহিদ নিয়ে থাকতে হবে,।সে শিরক সহ পরাশুনাই বেছে নিয়েছিল।

এখন সে তওবা করতে চাচ্ছে। সে কালিমা পড়ে তওবা করলেই হবে নাকি পড়াশোনা এবার বাদ দিয়ে দেওয়া লাগবে???

৯)আমার ওয়াজ করতে অনেক ভালো লাগে টিভিতে যখন বক্তার আওয়াজ করে আমার ওয়াজ করাচ্ছে করে আমার ইচ্ছা করে আমারও আজ আমার ইসলামী কিনলে কি মানুষ বাহবা দিল এখন আমি ধরেন বাসার মধ্যে এমনি এমনি দাঁড়ায় কল্পনা করতে আমার সামনে অনেকগুলো কারণ সবার সামনে খুব বাহবা দিচ্ছে এভাবে লোক দেখানো ওয়াজ করে কল্পনা করে মজা পাচ্ছি এ থেকে আমার শিরক হবে?? শিরক হলে বড় শিরক নাকি ছোট শিরক??

১০)আল্লাহ কি কোন মুশরিকের দোয়া কবুল করেন??
ধরুন কোনো মুসলিম একাধিক শির্কে লিপ্ত। এখন সে তাওবা না করেই আল্লাহকে বলতেছে, "আল্লাহ দয়া করে আমাকে তোমার কুদরতে সব শিরক থেকে তওবা করার তৌফিক দাও। আমাকে বাচায় নাও।" এই দুয়া কবুল করবে বলে আশা করা যায়??

১১)নামাজের মধ্যে যদি শিরক হয়ে যায় তবে কি নামায ভেঙে দিতে হবে??

 বা কোন শিরকি চিন্তা মাথায় আসলে কি নামাজ ভেঙে দিয়ে আবার নামাজ পড়তে হবে??

১২)ধরুন আমি ঠিক করলাম কোনো হালাল কাজ করবো। দুয়া করলাম," আল্লাহ এ কাজটা আমার জন্য সহজ করে দাও।" তারপর আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করলাম। মানে উসিলা গ্রহন করলাম। এই উসিলা গ্রহণ করার পর আমি মন্র শান্তি বোধ করছিলাম।বিশ্বাস হচ্ছিল হয়তো কাজ টা হবে। এই যে আল্লাহর কাছে দোয়া করার পরে নিশ্চিন্ত না হয়ে উসিলা গ্রহণ এর পর বেশি নিশ্চিন্ত হয়ে আছি এতে কি শিরক হবে??

১৩)যদি কোন শির্ক এর কথা মনে পড়ে, সেই সংক্রান্ত দুনিয়াবি কোন কাজ বাদ দেওয়া লাগবে এই আশংকায় পূর্বের গুনাহ বা শিরক নিয়ে ভাবে চাই না।

এতে কি শিরক হবে??

1 Answer

0 votes
by (680,280 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের খাওয়ার জন্য পশু শিকার করা বৈধ। 
বাঘ যেহেতু খাওয়া যায়না,তাই তাকে শিকার করা যাবেনা।
তদুপরি এখানে বাঘকে শিকার করতে গিয়ে নিজের জানকে মৃত্যুর মুখে ছেড়ে দিতে হয় ,তাই এহেন রিক্স নেওয়া জায়েজ নেই।
,
তবে এলাকাকে হিংস্র প্রাণি হিংস্রতা থেকে বাঁচানোর জন্য তাহা শিকার করে মেলে ফেলা যাবে।

(০২)
শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 
যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 
,
কিছু বিষয় আছে এমন, যা তাওহীদ-পরিপন্থী তো নয়, তবে তা ‘তাওয়াক্কুলে’র সর্বোচ্চ স্তর থেকে নিম্নস্তরের। এ ধরনের বিষয়গুলোকে শিরক বলা স্পষ্ট ভুল। যে বিষয়ে যতটুকু কমতি আছে তাতে ততটুকু কমতির কথাই বলা উচিত। বাড়াবাড়ি করে বিদআতকে শিরক বলে দেওয়া অথবা তাওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিপন্থী বিষয়কে তাওহীদের পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে শিরক বানিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
,
শিরকের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন।
  আল্লাহর কাছে সবচে’ ঘৃণ্য ও জঘন্যতম পাপ হল শিরক। কুরআন মাজীদে পুত্রের প্রতি লুকমান হাকীমের ওসিয়তগুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে তিনি নিজ পুত্রকে ওসিয়ত করে বলেন-
وَ اِذْ قَالَ لُقْمٰنُ لِابْنِهٖ وَ هُوَ یَعِظُهٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشْرِكْ بِاللهِ  اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ.
স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে নিজ পুত্রকে বলেছিল, বৎস! তুমি আল্লাহ্র সাথে শরীক করো না। কেননা র্শিক নিশ্চয় মারাত্মক অবিচার ও পাপ। -সূরা লুকমান (৩১) : ১৩

আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.
নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.
আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

বিস্তারিত জানুনঃ   

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এতে শিরক হবেনা।

(০৩)
এখানে শিরক খোজার প্রয়োজনীয়তা নেই।
ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহত সাথে যেনো কাউকে শরীক করা না হয়,সেদিকে গুরুত্ব দিবেন।
,
(০৪)
আল্লাহ হলেন সৃষ্টিকর্তা,আর নাম তো নাম।
এ দুটো সমান নয়।
আমরা আল্লাহর ইবাদত করি।
তার নামের নয়।
,
(০৫)
এই মনোভাব শিরক নয়। 
,
(০৬)
এতে শিরক হবেনা।

(০৭)
এটি শিরক নয়।
তবে জিম করতে গিয়ে কোনো গুনাহ বা শিরক হলে জিম করবেননা।
,
(০৮)
সে তওবা করে কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করলেই হবে। পড়াশোনা বাদ দিয়ে দেওয়া লাগবেনা।

(০৯)
আপনি শুধু মনে মনে কল্পনা করেছেন মাত্র,বাস্তবে করেননি।
তাই এখানে কোনো শিরকই হবেনা।
,
(১০)
বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছাধীন।
তিনি চাইলে কবুল করতে পারেন।

(১১)
নামাজের মধ্যে বড় শিরক হওয়ার মতো কাজ হলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।
আর ছোট শিরক যেমন রিয়া,তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
,
শিরক এর চিন্তা আসার দ্বারা নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
এতে নামাজ ভেঙ্গে দিতেও হবেনা।
আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে ঐ নামাজই চালিয়ে যাবেন।

(১২)
না,এতে শিরক হবেনা।
,
(১৩)
এতে শিরক হবেনা।
তবে উক্ত কাজ করতে গেলে শিরক বা গুনাহ হলে সেই কাজ করা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...