আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
436 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (4 points)
বিশ্ববিদ্যালয় এ যাওয়া আসায় journey করতে করতে দিনে ৪ ঘন্টার মত যায়,এদিকে নিজের একটা ইনকাম সোর্স এর খুব প্রয়োজন,সারাদিন ক্লাশ করতে হয়,ইসলামি বই ও পড়া প্রয়োজন,ফ্রিল্যান্সিং এ সময় দেয়া প্রয়োজন,সময়ে বরকত এবং নিজের হালাল  একটা ইনকাম সোর্স এর ব্যবস্থা এর জন্য কিছু পরামর্শ দিন শায়েখ,এছাড়া সারাদিন অনেক হতাশা ও দুশ্চিন্তায় থাকি।এসব থেকে মুক্তির কিছু উপায় বলুন দয়া করে,সুইসাইড ও করতে মনে চায় মাঝে মাঝে,কোনো ব্যাবসায় ও আগাতে পারিনা,লোকসান ই হয় শুধু।

1 Answer

0 votes
by (678,560 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


সময়ের বরকত নষ্ট করে দেয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি। 
 
সৃষ্টির সূচনা থেকে সময়ের একই নিয়ম ও ধারা চলে আসছে। আল্লাহ আআলা বলেন-

تَبٰرَكَ الَّذِیْ جَعَلَ فِی السَّمَآءِ بُرُوْجًا وَّ جَعَلَ فِیْهَا سِرٰجًا وَّ قَمَرًا مُّنِیْرًا  وَ هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ اَرَادَ اَنْ یَّذَّكَّرَ اَوْ اَرَادَ شُكُوْرًا.

‘মহিমাময় সেই সত্তা, যিনি আকাশে বুরূজ বানিয়েছেন এবং তাতে এক উজ্জ্বল প্রদীপ ও আলোকিত চাঁদ সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই সেই সত্তা যিনি রাত ও দিনকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন- (কিন্তু এসব বিষয় উপকারে আসে কেবল) সেই ব্যক্তির জন্য, যে উপদেশ গ্রহণের ইচ্ছা রাখে কিংবা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চায়।’ -সূরা ফুরকান : ২৫ : ৬১

★চিন্তা করলে দেখা যাবে, আমাদের বড় একটা সময় অনর্থক ও বে-ফায়দা কাজে ব্যয় হয়। অথচ মুমিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ, বে-ফায়দা কাজ থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ তাআলা বলেছেন-

قَدْ اَفْلَحَ الْمُؤْمِنُوْنَۙ الَّذِیْنَ هُمْ فِیْ صَلَاتِهِمْ خٰشِعُوْن وَ الَّذِیْنَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُوْن

‘নিশ্চয় সফলতা অর্জন করেছে মুমিনগণ, যারা তাদের নামাযে বিনীত এবং যারা অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকে।’... -সূরা মুমিনূন : ১-৩

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
من حسن إسلام المرء تركه ما لا يعنيه

ব্যক্তির সুন্দর মুসলিম হওয়ার এক নিদর্শন, অর্থহীন কাজ ত্যাগ করা। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৩১৭

অনর্থক ও বে-ফায়দা কাজের মধ্যে ঐসকল কাজও অন্তর্ভুক্ত যেগুলো করলে কোনো সওয়াবও হয় না এবং দ্বীনী বা দুনিয়াবী কোনো ফায়দাও হয় না। কোনো কাজ যদি বাহ্যত ‘মুবাহ’ হয় কিন্তু সে কাজ করলে দ্বীনী বা দুনিয়াবী কোনো ক্ষতির আশংকা থাকে তাহলে সে কাজও لغو বা অনর্থক কাজ বলে বিবেচিত হবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ঈমানের উপর অটল রাখুন। সর্বদা ইসলামের ছায়াতলে রাখুন। সব ধরনের হতাশা, আত্মহত্যার প্রবনতা,  ইরতিদাদ ও ধর্মহীনতা থেকে আমাদের রক্ষা করুন।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ َمِنَ الْحَوْرِ بَعْدَ الْكَوْرِ.
হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে ভালোর পর মন্দে পতিত হওয়া থেকে পানাহ চাই। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৩৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩৮৮৮

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
আপনি নেযামুল আওকাত তৈরী করে সেটি মেনে চলবেন

সময় নষ্ট হওয়ার বা সময় ফলপ্রসূ না হওয়ার যত কারণ আছে তার মধ্যে একটি বড় কারণ,
সময়ের সুষম বন্টন ও সুষ্ঠু বিন্যাস না থাকা। 

সারাদিনের সময় একটি নির্দিষ্ট নিয়মে বণ্টন করে সে অনুযায়ী চলা- এ তো শরীয়তের এক গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং সালাফে সালেহীনের শিআর। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের লিস্ট তৈরি করুন। প্রত্যেকে নিজের মতো করে টাইম মেনেজমেন্টের খসরা দাঁড় করায়। কেউ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রুটিন করে, কেউ দিনকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে। কেউ বা আবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিদিনের কাজের তালিকা তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করেন। প্রতিদিনের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করাই সব চেয়ে ভালো।
একটি সফল দিন যাপনের জন্য আগের রাতেই প্রয়োজনীয় কাজের তালিকা তৈরি করে রাখুন। এতে আপনি দিনের শুরু থেকেই জরুরি কাজগুলো জানতে পারবেন।
আর সে অনুযায়ী টাইম টু টাইম ঠিক ভাবে সকল কাজ করতে পারবেন। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
হালাল  একটা ইনকাম সোর্স এর জন্য উলামায়ে কেরাম কিছু আমলের  কথা বলেছেনঃ

★দোয়া

رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ

অর্থ : ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার প্রতি যে কল্যাণ নাজিল করবে, নিশ্চয় আমি তার মুখাপেক্ষী।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৪)

★তাসবিহ

ভালো চাকরির নিয়তে দিনে বেশি বেশি মহান আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নামের আমল করা এবং বেশি বেশি পাঠ করা।

يَا وَهَّابُ

অর্থ : ‘কোনোরূপ প্রতিদান ব্যতীত অধিক দানকারী।’

হজরত শাহ আবদুল আজিজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে ব্যক্তি রিজিকের প্রশস্ততার জন্য (ভালো কাজ বা চাকরির প্রত্যাশায়) চাশতের নামাজের

সময় ১২ রাকাআত নামাজে সেজ দায় গিয়ে এই দোয়া পড়তে হবে।

رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...