আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
205 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (9 points)
১-হজজ্হ ফরজ হওয়ার বিধান কী?

২- হজ্জ এবং ওমরাহ এর পার্থক্য কী?
৩-ওমরাহ করলে কী ফরজ হজ্জ আদায় হয়?

৪-স্ত্রীকে হজ্জ করানের দায়িত্ব কী স্বামীর? নাকি নিজের অর্থ সামর্থ্য যোগার করে হজ্জ করতে হবে?

স্ত্রী ঘরে রেখে মা কে নিয়ে হজ্জ করতে গেলে স্বামীর ওপর কি বিধান!

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হজ্ব ফরজ হয় দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে ব্যক্তির উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।

সে হিসেবে দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগবে। সে টাকা উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে তার উপর হজ্ব করা আবশ্যক।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরিফে এরশাদ করেনঃ   
ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا، ومن كفر فان الله غنى عن العلمين.
 (তরজমা) মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বায়তুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহরউদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্ব করা ফরয। আর কেউ যদি অস্বীকার করে তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিতযে, আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের প্রতি মুখাপেক্ষী নন।-সূরা আলে ইমরান (৩) : ৯৭
,

★ফাতওয়ার কিতাবে এসেছেঃ   
যার মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণের খরচের অতিরিক্ত এই পরিমাণ টাকা-পয়সা বা সম্পত্তি আছে, যা দ্বারা হজ্জে যাওয়া-আসার ব্যয় এবং হজ্জকালীন সাংসারিক খরচ হয়ে যায়, তার উপর হজ্জ করা ফরয। (আদ্দুরুল মুখতার মা‘আ রদ্দিল মুহতার ২/৪৫৮)

হজ্জ যে বছর ফরয হয় সে বছরই তা আদায় করা ওয়াজিব। গ্রহণযোগ্য কোনো ওযর ছাড়া হজ্জ বিলম্বিত করলে গুনাহ হবে। তবে পরবর্তীতে হজ্জ আদায় করে নিলে এই গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ৩/৫১৭ রশীদিয়া, কিতাবুল মাসাইল ৩/৭৬)
,
(০২)
শরীয়তের পরিভাষায় ওমরাহ বলা হয়-

زيارة بيت الله الحرام على وَجْهٍ مخصوص، وهو النُّسك المعروف المتركِّب من الإحرام والتلبية، والطَّواف بالبيت، والسَّعي بين الصفا والمروة، والحلْق أو التقصير

শরীয়ত নির্দেশিত বিশেষ পদ্ধতিতে বাইতুল্লাহর জিয়ারত করা। বিশেষ পদ্ধতিটি হল, ইহরাম, তালবিয়া, ক্বা’বা শরীরে চর্তুদিকে তাওয়াফ করা, সাফা ও মারওয়া’র মধ্যস্থলে সাঈ করা এবং মাথা মুণ্ডনো। 

★ওমরার কাজ মাত্র কয়েকটা। 
ইহরাম বাধা,তওয়াফ,সাফা ও মারওয়া’র মধ্যস্থলে সাঈ করা এবং মাথা মুণ্ডনো বা চুল কাটা। 

আর হজ্জের অনেক কাজ।

★হজ ও ওমরাহর মধ্যে অনেক ধরনের পার্থক্য বিদ্যমান। এ পার্থক্যটা গুরুত্ব এবং পদ্ধতির মধ্যে। যেমন,
১. হজ ফরয; প্রত্যেক মুসলমানের জন্য তাদের জীবনকালে এটি পালন করা বাধ্যতামূলক যদি তারা শারীরিকভাবে উপযুক্ত এবং আর্থিকভাবে এটি করতে সক্ষম হয়। পক্ষান্তরে ওমরাহ সুন্নত।
২. হজ এক নির্দিষ্ট সময়ে করতে হয় কিন্তু ওমরাহ বৎসরে যে কোন সময়ই করা যায়। তবে ৯ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত ওমরাহ করা মাকরূহ।
৩. ওমরাহর মধ্যে আরাফাত ও মুযদালিফায় অবস্থান, দু’নামায এক সাথে আদায় করা ও খুতবার বিধান নেই। তাওয়াফে কুদূম এবং তাওয়াফে বিদা’ও নেই কিন্তু এই সব কাজ হজের মধ্যে রয়েছে।
৪. ওমরাহর মধ্যে তাওয়াফ আরম্ভ করার সময় তালবিয়াহ পড়া মওকুফ করা হয়। আর হজের মধ্যে জামরাতুল আক্বাবাহ’তে রামী (কংকর নিক্ষেপ) করার সময় মওকূফ করা হয়।
৫. ওমরাহ নষ্ট হলে বা জানাবত (ওই নাপাকী যা দ্বারা গোসল ফরয হয়।) অবস্থায় তাওয়াফ করলে (দম হিসেবে) একটা ছাগল বা মেষ জবেহ করা যথেষ্ট, কিন্তু হজে যথেষ্ট নয় বরং পরবর্তী বছর পুনরায় সম্পন্ন করতে হয়।
(সংগৃহীত।)

(০৩)
না,আদায় হয়না

(০৪)

মহিলাদের উপর হজ্বঃ

দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে এবং সফর সঙ্গি হিসেবে স্বামী বা মাহরাম কেউ থাকলে ঐ মহিলার উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।

স্বামী উভয়ের খরচ বহনে সক্ষম হ’লেই স্ত্রীর উপর হজ্জ ফরয হয় না।

বরং স্ত্রীর যদি নিজ মালিকানায় হজ ফরজ হওয়ার মতো সম্পদ থাকে,তাহলে তার উপর হজ ফরজ হবে

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/21183/

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
স্ত্রী যদি উপরে উল্লেখিত শর্ত স্বাপেক্ষে  নিজের হজ্জ করার টাকা থাকা থাকে,তাহলেই কেবল তার উপর হজ্জ ফরজ হবে। 
স্ত্রীকে হজ্জ করানের দায়িত্ব স্বামীর নয়।
তবে দুইজনের উপরেই হজ্জ ফরজ হলে উচিত হলো একসাথেই হজ্জে যাওয়া।  
কেননা স্ত্রী আবার তার মাহরাম পুরুষ ছাড়া হজ্জে যেতে পারবেনা।

(০৫)
 স্ত্রী ঘরে রেখে মা কে নিয়ে হজ্জ করতে গেলে কোনো সমস্যা নেই।
এটি তার একান্তই ব্যাক্তিগত ব্যাপার।
তবে স্ত্রীর উপরেও যদি হজ্জ ফরজ হয়ে থাকে,তাহলে তাকে এভাবে রেখে যাওয়া কোনো ভাবেই উচিত হবেনা।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...