আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
116 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,, নিম্নোক্ত আমলগুলো সহীহ কিনা? আমি কি এগুলো আমল করতে পারব?
১✪কুরআন মাজীদ প্রতি মাসে একবার খতম করা সুন্নাত
২✪ প্রতিদিন ২০০বার সূরা ইখলাস পাঠ করলে তার ৫০বছরের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে
[সুনানে তিরমিজিঃ২৮৯৮]
৩✪রাতে বিছানায় শুয়ে ডান কাতে ১০০বার সূরা ইখলাস পড়লে,আল্লাহ ডান দিক দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন..
[সুনানে তিরমিজিঃ২৮৯৮]
৪✪একবার সূরা ইয়াসিন পড়লে ১০বার কুরআন খতমের সাওয়াব দেবেন..
[সুনানে তিরমিজিঃ২৮৮৭]
৫✪আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রাতে সূরা ইয়াসিন পড়লে ঐরাতের সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন..
[সুনানে দারেমীঃ৩৪৬০]
৬✪দিনের বেলায় সূরা ইয়াসিন পড়লে তার সকল হাজত পূর্ণ করা হবে.
[সুনানে দারেমীঃ৩৪৬১]
৭✪জুমু'আর রাতে সূরা দূখান পড়লে তাকে মাফ করা হবে
[সুনানে তিরমিজি ঃ২৮৮৮]
৮✪প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া পড়লে কখনো অভাবে পতিত হবেনা।
[মুসনাদে আবি সায়বাঃ৩৫৮৭৩]
৯✪সুরা হাশরের শেষ ৩আয়াত সকালে এবং রাতে ৩বার পড়লে আল্লাহ ৭০হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করবেন,এবং সেদিন যদি মৃত্যু হয় তাহলে শহিদী মর্যাদা পাবে,,যারা সারাদিন তার জন্য ইস্তিগফার করবে,
[সুনানে তিরমিজি ঃ২৯২২]
১০✪সূরা আলে ইমরানের ২৬,২৭ নং আয়াত পড়লে আর্থিক দারিদ্র্য দূর হয়..
[আজ জুযাজ,তাফসীরে মায়ানিউল কুরআন ও ইরাবুহ,১ম খন্ড,পৃঃ৩৯২]
১১✪ "ঈশার নামাজের পর প্রথমে ১১বার দরুদ শরীফ+সূরা মুযাম্মিলের ৯আয়াত পর্যন্ত পড়ে ২১ বার হাসবুনাল্লাহু ওয়ানি'আমাল ওয়াকিল......পড়ে আবার মুযাম্মিলের ১০থেকে ২০আয়াত পর্যন্ত পড়ে আবার দরুদ শরীফ পড়লে নাকি মনের আশা পূর্ণ হয়",এটা আমার শাশুড়ী বলেছেন..

1 Answer

0 votes
by (710,560 points)
edited by


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
উপরে উল্লেখিত হাদীস সমূহের মধ্যে কিছু কিছু হাদীসের সনদ যঈফ বা রাবী দুর্বল।তবে ফযিলতের ক্ষেত্রে যঈফ হাদীসও গ্রহণযোগ্য।

https://www.ifatwa.info/984 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
আ'মল ও তারগিবের জন্য যঈফ হাদীসের উপর আ'মল করা বৈধ রয়েছে।
ইমাম আহমাদ সহ অন্যান্য মুহাদ্দিসীনে কেরাম বলেন-
ﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﺷﺪﺩﻧﺎ ﻭﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻔﻀﺎﺋﻞ ﻭﻧﺤﻮﻫﺎ ﺗﺴﺎﻫﻠﻨﺎ
অর্থঃ যখন আমরা হালাল – হারামে রেওয়ায়েত করি (সনদে খুব) কড়াকড়ি করি। আর যখন ফযীলাত ইত্যাদির ক্ষেত্রে রেওয়ায়েত করি শিথিলতা করি।(হাফেয সুয়ূতী, তাদরীবুর রাবী ১/২৯৮)

মুহাদ্দিসিনে কেরামের নীতি অনুযায়ী বলা যায়, যে ফাযাইলে আ'মালের ক্ষেত্রে যঈফ হাদীসকে বর্ণনা করা ও তার উপর আ'মল করা জায়েয রয়েছে।তবে মাওযু(বানোয়াট/মিথ্যা)বর্ণনার ভিত্তিতে আ'মল করা জায়েয হবে না।

যঈফ হাদীসের উপর আ'মল করা সম্পর্কে জারাহ- তা'দিল এর ইমাম 'ইবনুস সালাহ রাহ,' বলেন,
ﻳﺠﻮﺯ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ﺍﻟﺘﺴﺎﻫﻞ ﻓﻲ ﺍﻷﺳﺎﻧﻴﺪ ، ﻭﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺎ ﺳﻮﻯ ﺍﻟﻤﻮﺿﻮﻉ ﻣﻦ ﺃﻧﻮﺍﻉ ﺍﻷﺣﺎﺩﻳﺚ ﺍﻟﻀﻌﻴﻔﺔ، ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺍﻫﺘﻤﺎﻡ ﺑﺒﻴﺎﻥ ﺿﻌﻔﻬﺎ، ﻓﻴﻤﺎ ﺳﻮﻯ ﺻﻔﺎﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﺃﺣﻜﺎﻡ ﺍﻟﺸﺮﻳﻌﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻭﻏﻴﺮﻫﻤﺎ . ﻭﺫﻟﻚ ﻛﺎﻟﻤﻮﺍﻋﻆ، ﻭﺍﻟﻘﺼﺺ، ﻭﻓﻀﺎﺋﻞ ﺍﻷﻋﻤﺎﻝ، ﻭﺳﺎﺋﺮ ﻓﻨﻮﻥ ﺍﻟﺘﺮﻏﻴﺐ ﻭﺍﻟﺘﺮﻫﻴﺐ، ﻭﺳﺎﺋﺮ ﻣﺎ ﻻ ﺗﻌﻠﻖ ﻟﻪ ﺑﺎﻷﺣﻜﺎﻡ ﻭﺍﻟﻌﻘﺎﺋﺪ، ﻭﻣﻤﻦ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻋﻨﻪ ﺍﻟﺘﻨﺼﻴﺺ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺘﺴﺎﻫﻞ ﻓﻲ ﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ : ( ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﻣﻬﺪﻱ ) ، ﻭ ( ﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺣﻨﺒﻞ ) ، ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ
মুহাদ্দিসিনে কেরামদের নিকট মাওযু ব্যতীত যঈফ তথা সনদের দুর্বলতা সম্ভলিত হাদীস সমূহ কে  বর্ণনা করা জায়েয রয়েছে।এক্ষেত্রে দুর্বলতা কে জনসমক্ষে প্রকাশ করা জরুরী নয়।
তবে শর্ত হল,উক্ত যঈফ হাদীস আল্লাহর সিফাত এবং হালাল-হারাম বা আক্বাঈদ সম্ভলিত হতে পারবে না।সুতরাং ওয়াজ,পূর্ববর্তী ঘটনা,এবং ফাযাইলে আ'মাল ও  সকল উৎসাহ প্রদাণ মূলক বিষয়ে যঈফ হাদীসকে বর্ণনা করা যাবে এবং তার ভিত্তিতে আ'মল করা যাবে। যেমন আব্দুর রহমান ইবনে মাহদি রাহ, আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ থেকে হাদীস বর্ণনা করা যাবে।
(মু'আক্বাদাহ ইবনে সালাহ)

ইমাম নববী রাহ উনার কিতাব 'তাক্বরীব' এ লিখেন,
ﻭﻳﺠﻮﺯ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ﺍﻟﺘﺴﺎﻫﻞ ﻓﻲ ﺍﻷﺳﺎﻧﻴﺪ
ﻭﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺎ ﺳﻮﻯ ﺍﻟﻤﻮﺿﻮﻉ ﻣﻦ ﺍﻟﻀﻌﻴﻒ ﻭﺍﻟﻌﻤﻞ ﺑﻪ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺑﻴﺎﻥ ﺿﻌﻔﻪ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﺻﻔﺎﺕﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﺍﻷﺣﻜﺎﻡ ﻛﺎﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻭﻣﺎ ﻻ ﻳﺘﻌﻠﻖ ﺑﺎﻟﻌﻘﺎﺋﺪ ﻭﺍﻷﺣﻜﺎﻡ
এবং মুহাদ্দিসিনে কেরামের নিকট সনদে দুর্বলতা গ্রহণযোগ্য রয়েছে।মাওযু ব্যতীত সনদ হিসেবে যঈফ(দুর্বল) হাদীস বর্ণনা করা জায়েয রয়েছে।এবং এর ভিত্তিতে আ'মল করাও জায়েয রয়েছে।এক্ষেত্রে যঈফ উল্লেখ করা জরুরী নয়।তবে শর্ত হল,সেই যঈফ হাদীস আল্লাহর সিফাত,হালাল-হারাম, আক্বাঈদ সম্ভলিত হতে পারবে না।(শেষ)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 132 views
...