আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in সাওম (Fasting) by (17 points)
সফরে নফল রোজার বিধান কি? কেউ কেউ টিটকারি দিয়ে বলে, আল্লাহ সহজ করে দিয়েছে তাইলে সফর অবস্থায় আশুরার রোজা রাখো কেন?
এখন প্রশ্ন হলো,
১/ সফরে নফল রোজা (এখন আশুরা) রাখা যাবে কিনা?

২/ সফরের হালতে নফল রোজার ফজিলত আছে কিনা?

৩/ যারা এভাবে বলে তাদের বলা ঠিক কিনা?
দলিল সহকারে মাসআলা দেয়ার অনুরোধ। জাযাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (63,280 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

সফর অবস্থায় সবার জন্যই রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ

অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ অথবা সফরে থাকবে সে অন্য সময় পূরণ করে নিবে।” (সূরা বাকারা: ১৮৪)

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ أَنْ تُؤْتَى رُخَصُهُ كَمَا يُحِبُّ أَنْ تُؤْتَى مَعْصِيَتُهُ

আল্লাহ্ তাআলা তাঁর অবকাশ দেয়া কাজগুলো কার্যকরী হওয়া পছন্দ করেন। যেমন তিনি তাঁর অবাধ্যতাকে অপছন্দ করেন।” [মুসনাদে আহমদ হা/৫৮৬৬]

 

সফর অবস্থায় রোজা রাখতে কষ্ট না হলে রোজা রাখাই উত্তম।

হাদীস শরীফে এসেছে-

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ أَنَّ إِسْمَاعِيلَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ حَدَّثَهُ عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ فِي يَوْمٍ حَارٍّ حَتَّى يَضَعَ الرَّجُلُ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ مِنْ شِدَّةِ الْحَرِّ وَمَا فِينَا صَائِمٌ إِلاَّ مَا كَانَ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَابْنِ رَوَاحَةَ

আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কোন এক সফরে প্রচণ্ড গরমের দিনে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে যাত্রা করলাম। গরম এত প্রচণ্ড ছিল যে, প্রত্যেকেই আপন আপন হাত মাথার উপর তুলে ধরেছিলেন। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং ইবনে রাওয়াহা (রাঃ) ব্যতীত আমাদের কেউই সিয়ামরত ছিলেন না। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৯৪৫) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

(উক্ত হাদীস দ্বারা বুঝে আসে যে, রাসূল সা. সফর অবস্থায় রোজাদার ছিলেন)

 

মুহাররম মাসের ফযিলত সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে-

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ: شَهْرُ اللهِ المُحَرَّمُ، وَأَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الفَرِيضَةِ: صَلاَةُ اللَّيْلِ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “রমযান মাসের রোযার পর সর্বোত্তম রোযা হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হচ্ছে রাতের (তাহাজ্জুদের) নামায।”

মুসলিম ১১৬৩তিরমিযী ৪৩৮৭৪০আবূ দাউদ ২৪২৯ইবনু মাজাহ ১৭৪২আহমাদ ৭৯৬৬৮১৮৫৮৩০২৮৩২৯১০৫৩২দারেমী ১৭৫৭১৭৫৮

 

হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি আশাবাদী যেআশুরার রোযার কারণে আল্লাহ তাআলা অতীতের এক বছরের (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।’

صيام يوم عاشوراء أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله

 -সহীহ মুসলিম ১/৩৬৭জামে তিরমিযী ১/১৫৮

 

আশুরার রোযা সম্পর্কে এক হাদীসে আছে যে, ‘তোমরা আশুরার রোযা রাখ এবং ইহুদীদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করেআশুরার আগে বা পরে আরো একদিন রোযা রাখ।’

صوموا عاشوراء وخالفوا فيه اليهود، صوموا قبله يوما أو بعده يوما

 -মুসনাদে আহমদ ১/২৪১

 

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিতনবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তাহলে ৯ তারিখেও অবশ্যই রোযা রাখব।’-সহীহ মুসলিম ১/৩৫৯

 

আরো জানুন- https://ifatwa.info/25346/?show=25346#q25346

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

. হ্যাঁ, সফর অবস্থায় রোজা রাখতে কষ্ট না হলে আশুরার রোজা রাখা যাবে, বরং উত্তম।

২. হ্যাঁ, সফর অবস্থায়ও নফল রোজা রাখলে উক্ত নফল রোজার ফজিলত পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।

৩. না, এভাবে বলা ঠিক নয়। কারণ, কেউ যদি সফর অবস্থায়ও রোজা রাখতে সক্ষম হয় তাহলে সে রাখতে পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 60 views
...