আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
409 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু
১.যারা একদমই সালাত আদায় করেনা মানে জুমাও না তাদের ব্যাপারে আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত এর আকিদা কি থাকবে?মানে তাদের কে কি কাফির ভাববো নাকি মুসলিম?
২.যারা শুধু জুমা আদায় করে তাদের কি ভাববো?
৩.যদি কোনো বন্ধুর বাবা সুদখোর হয় আর সে বন্ধু দাওয়াত করে তার বাসায় তাহলে সে দাওয়াত ও যাওয়া তো নিষিদ্ধ হবে ঠিক না?
৪.৪ রাকাত ফরজ সালাতে ১ম বৈঠকে না বসে যদি ভুলক্রমে ঊঠে যাই এবং বুঝার পড় আবার বসে নামাজ কন্টিনিউ করি তাহলে কি সালাত বাতিল হয়ে যাবে মানে পড়তে হবে আবার?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(১.২)
নামায ছেড়ে দিলেই ব্যক্তি কাফের হবে না। বরং কাফেরদের মত কাজ হয়। যদি কাফের হয়ে যেত তাহলে তার জন্য জান্নাতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত হাদীস আসতো। অথচ নামায ছেড়ে দিলে চিরস্থায় জাহান্নামী হবার কোন হাদীস বা আয়াত বর্ণিত হয়নি।  বরং আল্লাহ তাআলা এবং রাসূল সাঃ পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন শিরক ছাড়া আর যত গোনাহই হোক না কেন, আল্লাহ তাআলা তা মাফ করে দিতে পারেন।

তবে হ্যাঁ, যদি কেউ নামায পড়া ফরজ নয় মনে করে নামায ছেড়ে দেয়, তাহলে উক্ত ব্যক্তি কাফের। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিংবা নামাযকে তাচ্ছিল্য করে নামায পড়া ছেড়ে দেয় তাহলেও উক্ত ব্যক্তি কাফের। কিন্তু অলসতাবশত নামায ছেড়ে দিলে ব্যক্তি কাফের হয়ে যায়না।

বিস্তারিত জানুনঃ
,

(০৩)
হারাম টাকা উপার্জনকারীর দাওয়াত কবুল করার ক্ষেত্রে কয়েকটি কথা জেনে রাখা জরুরী।যথা-

হারাম উপার্জনকারীর পূর্ণ রোজগারই হারাম। আর লোকটি তার হারাম টাকা দিয়েই দাওয়াত দিচ্ছে।

লোকটির উপার্জন হালাল ও হারামের মাঝে সংমিশ্রিত। এ দুটি উপার্জিত অর্থ এমনভাবে সংমিশ্রিত যে, একটি অন্যটি থেকে পৃথক নয়।
তবে এর মাঝে হারাম উপার্জন বেশি। আর লোকটি মিশ্রিত সে সম্পদ দিয়েই দাওয়াত দিচ্ছে।

লোকটির হালাল উপার্জনও আছে, আবার হারাম উপার্জনও আছে। এ দুটি উপার্জিত অর্থ এমনভাবে সংমিশ্রিত যে, একটি অন্যটি থেকে পৃথক নয়। তবে তার হারাম উপার্জন কম। হালাল উপার্জন বেশি। আর লোকটি এ মিশ্রিত সম্পদ দিয়ে দাওয়াত দিচ্ছে।

হারাম উপার্জনকারী হারাম উপার্জন দিয়ে হাদীয়া দিচ্ছেনা। বরং কারো থেকে হালাল টাকা ধার করে বা কারো কাছ থেকে অর্থ নিয়ে বা তাদের হালাল উপার্জন থেকে দাওয়াত দিচ্ছে।

প্রথমোক্ত দুই সূরতে উক্ত ব্যক্তির দাওয়াত গ্রহন করা জায়েজ নয়। আর তৃতীয় সুরতে উক্ত ব্যক্তির দাওয়াত গ্রহণ জায়েজ হলেও, না নেয়া উত্তম।

আর চতুর্থ সুরতে উক্ত ব্যক্তির দাওয়াত গ্রহণ জায়েজ আছে।

ولا يجوز قبول هدية أمراء الجور لأن الغالب في مالهم الحرمة إلا إذا علم أن أكثر ماله حلال بأن كان صاحب تجارة أو زرع فلا بأس به لأن أموال الناس لا تخلو عن قليل حرام فالمعتبر الغالب (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الثاني عشر في الهدايا والضيافات-5/342)
অনুবাদ-জালেম বাদশাহর হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ নয়। কেননা তার অধিকাংশ মাল হয় হারাম। তবে যদি জানা যায় যে, তার অধিকাংশ মাল হালাল, এ হিসেবে যে সে ব্যাবসায়ী বা জমিদার, তাহলে তার থেকে হাদিয়া গ্রহণ করাতে সমস্যা নেই। কেননা সাধারণত মানুষের মাল অল্প হারাম থেকে মুক্ত নয়। তাই এতে আধিক্যের বিষয়টি বিবেচিত হবে। { ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২}
,
★★সুতরাং উপরোক্ত মূলনীতি ফলো করে আপনার মাসয়ালার তাহকিক করতে পারবেন।   
,
,
(০৩)
সে যদি ৩য় রাকাতে দাড়ানোর পর আবার বসে যায়,তাহলে একাকী নামাজ আদায় কারী (মুনফারিদ) হলে পুনরায় নামাজ আদায় করে নিবে।
 
আর যদি সে ইমাম হয়,তাহলে এ মাসআলা নিয়ে ফক্বীহদের মাঝে মতভেদ আছে। একদলের মতে এতে করে নামায ফাসিদ হয়ে যায়। তথা নামায ভেঙ্গে যাবে। কারণ ইমামের জন্য প্রথম বৈঠকে ফিরে যাওয়া উচিত হয়নি। বরং তার জন্য দাঁড়িয়ে বাকি নামায আদায় করে সাহু সেজদা দিলেই নামায হয়ে যেত। কিন্তু সে তারতীব নষ্ট করে অযথাই দাঁড়ানোর পর আবার বসেছে।

তবে ইবনুল হুমাম রহঃ সহ অনেক ফক্বীহই এতে করে নামায নষ্ট হয়নি বলে ফাতওয়া প্রদান করেছেন।

বর্তমানে যেহেতু অধিকাংশ মানুষই নামাযের মাসআলা সম্পর্কে অভিজ্ঞ নন।তাই ইবনুল হুমাম রহঃ এর বক্তব্য অনুপাতে বলা যায় নামায নষ্ট হয়নি। বাকি সাহু সেজদা দিতে হবে। আর এটি ভুল তরীকা। ইচ্ছেকৃতভাবে করলে ব্যক্তি গোনাহগার হবে। আর ভবিষ্যতে যেন এমন ভুল না করে এজন্য সতর্ক থাকতে হবে।

উক্ত বিষয়টি জামাতে নামায পড়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু যদি একাকী নামায পড়ার সময় এমন হয়। তাহলে নামায পুনরায় পড়তে হবে।

(لَا) يَعُودُ لِاشْتِغَالِهِ بِفَرْضِ الْقِيَامِ (وَسَجَدَ لِلسَّهْوِ) لِتَرْكِ الْوَاجِبِ (فَلَوْ عَادَ إلَى الْقُعُودِ) بَعْدَ ذَلِكَ (تَفْسُدُ صَلَاتُهُ) لِرَفْضِ الْفَرْضِ لِمَا لَيْسَ بِفَرْضٍ وَصَحَّحَهُ الزَّيْلَعِيُّ (وَقِيلَ لَا) تَفْسُدُ لَكِنَّهُ يَكُونُ مُسِيئًا وَيَسْجُدُ لِتَأْخِيرِ الْوَاجِبِ (وَهُوَ الْأَشْبَهُ) كَمَا حَقَّقَهُ الْكَمَالُ وَهُوَ الْحَقُّ بَحْرٌ، وَهَذَا فِي غَيْرِ الْمُؤْتَمِّ؛ أَمَّا الْمُؤْتَمُّ فَيَعُودُ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب سجود السهو-2/84، سعيد، البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب سجود السهو-2/178-179، حاشية الشبلى على تبيين الحقائق، كتاب الصلاة، باب سجود السهو-1/479، دار الكتب العلمية بيروت)
যার সারমর্ম হলো একাকী নামাজ আদায় কারী পুনরায় নামাজ আদায় করবে।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবে।            


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 94 views
...