আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,031 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (48 points)
ছবি তোলা হারাম হওয়ার পেছনে কারণ কি?সফট কপি তো ভারচুয়াল।হাদিসে তো বলা হয়েছে যে আল্লাহ সৃষ্টি নকল করার কথা। ফটোতে তো আমরা অনেকটা রিফলেকশন ধরে রাখি।আর এই ছবি আসল ও না,মোবাইল অফ করলেই গায়েব।এখানে খন্ডন দিলে ভালো হতো।

1 Answer

0 votes
by (696,320 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
ﺃﺧﺮﺝ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﺑﺴﻨﺪ ﺍﻟﻤﺘﺼﻞ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﻣﺤﻤﺪﺍ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ : « ﻣﻦ ﺻﻮﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛﻠﻒ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺃﻥ ﻳﻨﻔﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮﻭﺡ، ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ »
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোনো ফটো অঙ্কন করবে,কিয়ামতের দিন তাকে ঐ ফটোতে রূহ ফুকে দিয়ে জীবিত করার দায়িত্ব দেয়া হবে।অথচ সে ঐ ফটোকে জীবিত করতে পারবে না।(সহীহ বোখারী-৫৯৬৩)

শরীয়তে তাসবীর হারাম।কুরআন হাদীসে তাসবীর শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে।তাসবীর যে হারাম,এতে কারো দ্বিমত নাই।বিস্তারিত জানুন- 2253

এখন প্রশ্ন জাগতে পারে,তাহলে তাসবীর কি? কোন কোন জিনিষ তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত?ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে তুলা ফটো কি তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত? 
এই প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে,
সরাসরি বাস্তবে নির্মিত মুর্তি,এবং হাত দ্বারা অঙ্কিত  মুর্তির ফটো,এগুলো তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত। এতে কারো দ্বিমত নাই।

ডিজিটাল ফটো কি তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত? 
এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।আপনি যে বিষয় উল্লেখ করেছেন,সেই বিষয় উল্লেখ করে কেউ কেউ ডিজিটাল ফটোকে নাজায়েযের হুকুম থেকে বের করে বৈধতার ফাতাওয়া দিয়েছেন।অন্যদিকে অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম হাতে অঙ্কিত ফটো এবং ডিজিটাল ফটো, সকল প্রকার ফটোকেই নাজায়েয ও হারাম ঘোষনা দিয়েছেন।

জাস্টিস আল্লামা তাকী উসমানী (দাঃবাঃ)লিখেন,
ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻌﺮﺑﻴﺔ، ﻭ ﺟﻠﻬﻢ ﺃﻭﻛﻠﻬﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻗﺪ ﺃﻓﺘﻮﺍ ﺑﺄﻧﻪ ﻻﻓﺮﻕ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﻤﺮﺳﻮﻣﺔ ﻭ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺸﻤﺴﻴﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻜﻢ ..… ﻭﺍﻟﻮﺍﻗﻊ ﺃﻥ التفريق ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺸﻤﺴﻴﺔ ﻻ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﻋﻠﻰ ﺃﺻﻞ ﻗﻮﻯ، ﻭﻣﻦ ﺍﻟﻤﻘﺮﺭ ﺷﺮﻋﺎ ﺃﻥ ﻣﺎﻛﺎﻥ ﺣﺮﺍﻣﺎ ﺃﻭ ﻏﻴﺮﻣﺸﺮﻭﻉ ﻓﻲ ﺃﺻﻠﻪ ﻻﻳﺘﻐﻴﺮ ﺣﻜﻤﻪ ﺑﺘﻐﻴﺮ ﺍﻵﻟﺔ
আরব দেশের অনেক উলামায়ে কেরাম,এবং হিন্দুস্তানের অধিকাংশ বা সকল উলামায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন যে,হাতে অঙ্কিত ছবি এবং ডিজিটাল ছবির মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। বাস্তবতা হচ্ছে, হাতে অঙ্কিত ছবি এবং ডিজিটাল ছবির মধ্যে পার্থক্য করার ভিত্তি মজবুত নয়।শরয়ী সিদ্ধান্তকৃত মাস'আলা হল,যে জিনিষের মূল হারাম,সেই জিনিষের হুকুমে মাধ্যম বা উসিলা পরিবর্তনের কারণে কোনো প্রকার পরিবর্তন আসবে না।(তাকমিলাতু ফাতাহিল মুলহিম-৪/৯৭)

প্রামাণ্য গ্রন্থাবলীঃ
(১)বুখারী শরীফ : ২/৮৮০; হাঃ ৫৭২৯
(২)মুসলিম শরীফ- ২/২০০, হাঃ ৫৪৭১
(৩)ফাতাওয়ায়ে শামী- ২/৪১৬-১৭
(৪)তাকমিলায়ে ফাতহুল মুলহিম- ৪৯৭,৯৮
(৫)শরহে নববী আলা সহীহ মুসলিম : (২)১৯৯; 
(৬)কিফায়াতুল মুফতী : ৯/২৪৩

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
শরীয়তের একটি সর্বজন স্বীকৃত মাস'আলা বা সিদ্ধান্ত হল,কোনো জিনিষের মূল হুকুম হারাম থাকলে,সেই জিনিষ সর্বদাই হারাম হবে।চায় সেই জিনিষের মাধ্যম পরিবর্তন হোক বা না হোক।যেমন ফটো তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম।প্রথমে হাতে অঙ্কিত হত,তখনও হারাম ছিলো।এখন ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় ছবিকে তুলা হচ্ছে,এখনও হারাম হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
সুন্দর ফতোয়া। আল্লাহ আমাদের আমল করার তৌফিক দিন

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...