আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
49 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ শাইখ।

১. মসজিদে যারার/জারার বলতে কি বুঝানো হয়? বর্তমানে কোনো মসজিদকে কি মসজিদে জারার বলা যেতে পারে?

২. এলাকায় একটি মসজিদ পূর্ব হতেই আছে। তার ১০০ গজ দুরত্বেত মধ্যেই নতুন একটি মসজিদ নির্মান করা হয়েছে যা অপ্রয়োজনীয় ছিল। দুই স্থানেই সালাত আদায় হচ্ছে। এমতাবস্থায় ২য় মসজিদে সালাতের পরা যাবে?

৩. কুরআন পাঠের সময় রেহেলে পা লাগলে আমরা চিন্তিত হই। তবে কেউ যদি টেবিলে কুরআন রেখে পাঠ করে এবং টেবিলের পায়ায় পা লাগে, তবে সমস্যা হবে?

জাজাকাল্লাহ খাইরান

1 Answer

0 votes
by (679,480 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَالَّذِينَ اتَّخَذُوا مَسْجِدًا ضِرَارًا وَكُفْرًا وَتَفْرِيقًا بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ وَإِرْصَادًا لِّمَنْ حَارَبَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ مِن قَبْلُ ۚ وَلَيَحْلِفُنَّ إِنْ أَرَدْنَا إِلَّا الْحُسْنَىٰ ۖ وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ [٩:١٠٧]

আর যারা নির্মাণ করেছে মসজিদ জিদের বশে এবং কুফরীর তাড়নায় মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃস্টির উদ্দেশ্যে এবং ঐ লোকের জন্য ঘাটি স্বরূপ যে পূর্ব থেকে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করে আসছে,আর তারা অবশ্যই শপথ করবে যে, আমরা কেবল কল্যাণই চেয়েছি। পক্ষান্তরে আল্লাহ সাক্ষী যে,তারা সবাই মিথ্যুক। {সূরা তওবা-১০৭}

كل مسجد بنى مباهاة أو رياء وسمعة أو لغرض سوى ابتغاء وجه الله أو بمال غير طيب، فهو لا حق بمسجد الضرار، (الكشاف-2/310، سورة التوبة-107، روح المعانى-11/21، تفسير المدارك-1/651
সারমর্মঃ-
যে মসজিদ মানুষকে দেখানোর জন্য, কারো প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে, আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতিত অন্য কোন উদ্দেশ্যে বা হারাম মাল দিয়ে নির্মিত মসজিদকে বলা হয় মসজিদে জেরার।

যে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে লোক দেখানোর জন্য, লৌকিকতা প্রদর্শনের জন্য বা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কিংবা অপবিত্র ও অবৈধ অর্থে যেটি নির্মাণ করা হয়েছে, শরিয়ত মতে তা মসজিদে জেরারের অন্তর্ভুক্ত (মাদারেকুত তানজিল : ২/১১১)। 

প্রখ্যাত মুফাসসির ইমাম বগভী (রহ.) তার তাফসীর গ্রন্থে লিখেন,
‘তাবেয়ী আতা (রহ.) থেকে বর্ণিত, যখন আল্লাহ তাআলা উমর (রা.)-এর হাতে শহরসমূহ বিজিত করছিলেন তখন উমর (রা.) মুসলমানদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা বেশি বেশি মসজিদ নির্মাণ কর। তবে আরেক মসজিদের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে একই শহরে দু’টি মসজিদ নির্মাণ কর না।’ [তাফসীরে বগভী ২/৩৮৮]

যদি কোনো মসজিদে মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হয়, তাহলে আরেকটি মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে সতর্কতা হলো, এতটুকু দূরত্বে মসজিদ নির্মাণ করবে, যাতে এক ইমামের কিরাতের সঙ্গে অন্য মসজিদের ইমামের কিরাত সাংঘর্ষিক না হয়। তবে উভয় মসজিদের মাঝখানে যদি কেবল একটি দেয়াল থাকে, তবু উভয় স্থানে পৃথক জামাত আদায় করা বৈধ। (ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৪/৪১০)

এক কথায় যে মসজিদ নির্মানে আল্লাহর সন্তুষ্টি নয় বরং অন্য কোন মাকসাদ (মানুষকে দেখানোর জন্য, কারো প্রতি বিদ্বেষ) পূর্ণ করা উদ্দেশ্য হয় সেটিই মসজিদে জেরার।

মুফতি শফি (রহ.) লিখেছেন, বর্তমান যুগে কোনো মসজিদের কাছাকাছি অন্য মসজিদ নির্মাণ করা হলে এবং এর পেছনে যদি মুসলমানদের বিভক্ত করা ও আগের মসজিদে মুসল্লি হ্রাস করার অসৎ ইচ্ছা থাকে, তাহলে এতে মসজিদ নির্মাতার সওয়াব তো হবেই না, বরং বিভেদ সৃষ্টির কারণে সে গুনাহগার হবে। তা সত্ত্বেও শরিয়ত মতে, সে জায়গাকে মসজিদ বলা হবে এবং মসজিদের বিধিবিধান এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। একে ধ্বংস করা কিংবা আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া জায়েজ হবে না। (মা’আরেফুল কোরআন)
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।)

(০১)
বর্তমান যুগে কোনো মসজিদের কাছাকাছি অন্য মসজিদ নির্মাণ করা হলে এবং এর পেছনে যদি মুসলমানদের বিভক্ত করা ও আগের মসজিদে মুসল্লি হ্রাস করার অসৎ ইচ্ছা থাকে,তাহলে সেটিকে মসজিদে যিরার বলা হবে।

তবে সেটিকেও মসজিদ হিসেবে কায়েম রাখতে হবে। 
ভাঙ্গা যাবেনা।
কেননা এর উপর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর যামানার মসজিদে যিরারের হুকুম আরোপ করা যাবেনা।
সেই মসজিদ তো নামাজ পড়ার জন্য বানানোই হয়নি।

(০২)
এমতাবস্থায় ২য় মসজিদে সালাত আদায় করা যাবে।

(০৩)
না, এটিকে আদবের খেলাফ বলা হবেনা।
,
কেননা আদবের সম্পর্কে সমাজের সাথে।
সমাজ যেটাকে আদব বলে,তার খেলাফ করাকে আদবের খেলাফ বলা হয়।
আর সমাজে এটিকে আদবের খেলাফ বলা হয়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...