আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
351 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (30 points)
edited by
আসসালামু ওলাইকুম,

আমরা জানি ইসলামে হস্তমৈথুন হারাম।আল্লাহর রসূল(সাঃ) যুবক সাহাবীদের বলেছেন যাদের বিবাহের সামর্থ্য নেই।তারা যেন সাওম পালন করে।কারন সাওম যৌন চাহিদা কমায়।

কিন্তু সবার ক্ষেত্রে তো তা ঘটে না।যেমন আল্লাহর রসূল সাঃ এর সময় এক সাহাবী বিয়ে করতে চাইলে তিনি বলেন তোমার কাছে মোহর হিসাবে কি আছে।সাহাবী জবাবে বললেন তার কাছে কিছুই নেই।পরে আল্লাহর রসূল সাঃ তাকে সূরা শিক্ষার  বিনিময় হলে ও বিয়ে দেন।আবার আলী রাঃ আনহু বিয়ের ক্ষেত্রে আল্লাহর রসূল সাঃ নিজে  আসবাপত্র কিনে দেন।উভয় পরিস্থিতিতে তাদেরকে সাওম রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
আমি জানি যে আল্লাহর রসূল সাঃ যার জন্য যেটা উত্তম সেটি তিনি করতেন।
বর্তমানে পৃথিবীতে যেহেতু ইনসাফ নেই।তাহলে সবার জন্য এক ফতোয়া কি ঠিক?যেমন একজন সারাদিনে ২ ঘন্টা ঘুমিয়ে বেঁচে থাকে।তার মানে এই না যে অন্যকেউ তার মত এভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। আপনি,বড় বড় আলেম বা শতকরা ৫ ভাগ লোক যারা নিজেদের জীবনকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন।যার কারনে আপনার সময়কে কাজে লাগিয়ে বড় কিছু করতে পেরেছেন।তাদের কাছে হস্তমৈথুন নিয়ন্ত্রণ করা তেমন কঠিন কাজ হয়ত মনে হয় না। কিন্তু বাকি ৯৫ ভাগ মানুষ সে কাজটি করতে পারে না।এখানে এই পাপ না ছাড়ার না কারনে অনেকেই ইসলামের পথে চলার আশা কেমন জানি ছেড়ে দিয়েছে।শয়তান তাদেরকে হতাশা ফেলে দিয়েছে।কিন্তু আমাদের কে তো তাদেরকে নিয়ে জান্নাতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে হবে।তাদের প্রতি আমরা জুলুল করছি কি না কোনোভাবে?
আবার কোনো একটি হাদিসে শুনছিলামঃকোনো এক সাহাবীকে  এক জায়গায় ইমামতি করতে দিলে তিনি এশার সালাতে সূরা বাকারা তেলাওয়াত করতেন।পিছনে সারাদিন পরিশ্রম করে এসে সাহাবীরা সালাতে দাড়ালে তারা অসহ্য হয়ে সালাত ছেড়ে দিত।আল্লাহর রসূল সাঃ কে এ খবর জানানো হলে তিনি ইমামকে ধমক দিয়ে ছোট সূরা গুলো পড়ার নির্দেশ দেন।এখানে লক্ষণীয় যে ইমামের জন্য সূরা বাকারা পড়া স্বাভাবিক হলে ও মুক্তাদি বা অধিকাংশ মানুষ সেটি সহ্য করতে পারে না।এর ফলে মানুষ ইসলাম বিমুখ হচ্ছে।আল্লাহর রসূল সাঃ সেখানে এসে ইনসাফ করে দিলেন।
হহস্তমৈথুনের ক্ষেত্রে ও সেরকম ফতোয়া দেওয়া যায় কি না বিয়ে করার টাকা না থাকলে,সাওম রেখে ও কাজ না হলে।সবার সাথে থাকা ও অন্যন্য যুক্তিসংগত কারনে সম্ভব না হলে।আবার ডাক্তার যে ঔষধ এর জন্য দিয়েছে সেটি খেলে ফজরের নামাজ পড়া সম্ভব নয়। প্রচুর ঘুমের কারনে।আবার  হস্তমৈথুন না করলে দেখি সে সারারাত ঘুমাতে পারে না। অস্থির হয়ে মন ছটফট করতে থাকে।তার পরিবারকে বুঝিয়ে বিয়ে করা সম্ভব নয়।কারন তার পরিবার ইসলাম বুঝে  না।বিয়ে করলে দ্বীনদার দেখে বিয়ে করতে পারবে না,পর্দা রক্ষার পরিবেশ দিতে পারবে না।জুলুম হওয়া সহ নানা রকম আর ও সমস্যা দেখা দিবে।আমার দেখা মতে সে নাটক সিনেমা দেখা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছে,এমনকি ফেসবুকের সব মেয়েকে ও আনফলো দিয়ে রেখেছে।এমনকি সে নিজের চোখ ও পরনারী থেকে সরাতে পারে।সে কিভাবে জানি হাত ব্যবহার না করে বালিশের সাথে  ও শুধু মনের জিনার মাধ্যমে কামভাব দূর করে বা বীর্যপাত ঘটায়।
সে যেন ইসলামকে কঠিন বা হতাশায় এসে হেদায়েত ছেড়ে না দেয়।সে জন্য চোখের জিনা না করার শর্তে কাউকে হস্তমৈথুন বা হাত ব্যবহার না করে অন্য কোনো মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটনো তার জন্য জায়েজ বলা যাবে কি না?
জাযাকুমুল্লাহ খাইর

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
হস্তমৈথুনের নিষেধাজ্ঞা যদিও সহীহ সনদে বর্ণিত  কোনো হাদীসে সরাসরি আসেনি,তথাপিও তাকে শরীয়তের অন্যান্য দলিলপত্রাদি দ্বারা উলামাগণ হারাম সাব্যস্ত করে থাকেন।
যেমন আল্লাহ তা'আলা এক আয়াতে বিবাহবহির্ভূত এবং দাসী ব্যতীত সহবাসকে সীমালঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন।
আল্লাহ তা'আলা বলেন- 
"এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে।
তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।
অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালংঘনকারী হবে।" (সূরা-মু'মিনুন-৫-৭)
আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
عبد الله بن عمرو بن العاص عن النبي صلى الله عليه وسلم سبعة لا ينظر الله عز وجل إليهم يوم القيامة ولا يزكيهم ويقول : ادخلوا النار مع الداخلين : الفاعل والمفعول به ، والناكح يده ، وناكح البهيمة ، وناكح المرأة في دبرها ، وناكح المرأة وابنتها ، والزاني بحليلة جاره ،والمؤذي لجاره حتى يلعنه
“সাত শ্রেণীর লোকের উপর আল্লাহ অভিশাপ বর্ষণ করেন, কিয়ামতের দিন এদের দিকে তাকাবেন না এবং এদেরকে জাহান্নামে প্রবেশের আদেশ দিবেন। এরা হল–সমকামী, হস্তমৈথুনকারী, জীবজন্তুর সাথে সঙ্গমকারী, স্ত্রীর সঙ্গে পুংমৈথুনকারী, কোন মহিলা ও তার কন্যাকে একসাথে বিবাহকারী, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারকারী এবং প্রতিবেশীকে এমন কষ্টদানকারী যে, যার কারণে সে তাকে অভিশাপ দেয় । তবে এরা যদি তাওবা করে তাহলে তারা সবাই হয়ত ক্ষমা পেতে পারে।” (বাইহাকী, শুয়াবুল ঈমান৭/৩২৯)
বিশিষ্ট ফকিহ আল্লামা রশিদ আহমদ রাহ বলেন,
হস্তমৈথুন সম্পূর্ণ  হারাম ও নাজায়েয । তবে কেউ কেউ যেমন আল্লামা হাসক্বফী রাহ মনে করেন,যিনা-ব্যবিচার থেকে বাঁচতে কেউ হস্তমৈথুন করে ফেললে তাকে শাস্তি দেয়া হবে না। (আহসানুল ফাতাওয়া-৮/২৪৯)
হস্তমৈথুনের বিধান সম্পর্কে জানুনঃ 
হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার বিস্তারিত আমল জানুনঃ

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্তমৈথুন করা কোরআন সুন্নাহ ও সুস্থ বিবেকের নির্দেশ মতে হারাম ও কবিরা গুনাহ।
কারো বিবাহ করার সামর্থ না থাকলে এবং লাগাতার রোজা রাখার পরও যদি কারো যৌনচাহিদা এমন পর্যায়ের থাকে যে, যেকোনো মুহুর্তে হারামে লিপ্ত থাকার প্রবল আশংকা থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় কেউ কেউ অনুমতি দিয়ে থাকেন। তাই প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে এমন কাজ সম্পাদিত না হওয়াই কাম্য।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...