আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (15 points)
১. এক ভাইয়ের এর হয়ে প্রশ্ন করছি -

"আমি এক মহিলাকে পছন্দ করতাম সেও আমাকে করতো । আমার ইচ্ছা ছিলো।তার ১৮ বছর হলে তাকে বিয়ে করে নেবে। অল্প দিনের পরিচয় আর আঠারো বৎসর হতে ৫/৬ মাস বাকি ছিলো এই সময়ে তার বাবা মা তার সাথে ওই নারীর যোগাযোগ বন্ধ করায় আমার প্রায় মারা যাবার মত অবস্থা।পাগলের মত কান্নাকাটি আর কোন কাজ ই করতে না পারার অবস্থা তৈরি হয় আমার বয়স ২০ বৎসর।
আমাড় মাথায় সব সময় এটা ঘুরতো যে আমার থেকে ওকে সরানোর জন্য ওকে তাবিজ করা হইসে। ও এমন মেয়ে না।
কদিন আগে জানতে পারি মেয়েটা অন্য ছেলেদের সাথে কথা বলে হাসি ঠাট্টা করে।

তবুও আমার মন মানতে পারছিলো না।

তখন আমার এক ভাই যিনি মাওলানা পরীক্ষা দিয়েছেন উনি বলতেছিলো যে তোমাকে যদি আমি হালাল ভাবে কিছু করে দেই তুমি কি করবা?  হালাল ভাবে যদি নিয়ে আসা যায় তুমি কি আনবা?
আমি বলছি ভাই আমি কুফরি কিছু করবোনা।কোন আমল দিলে করবোনা কারন আমি ভাবতাম যে কোন আমল দিলে এর মাধ্যমে কুফরি কিছু করাবে। আমি বলেছি হালাল ভাবে হলে আমাকে এটা জানান যে ওকে কি তাবিজ করছে নাকি ও নিজে থেকে চলে গেছে।আপনি কি আমাকে বলতে পারবেন ও মেয়ের ক্যারেক্টার কেমন?

এরপর উনি জানায় (এক মহিলা হুজুর টাইপ থেকে যিনি তদবির করে, যা তথ্য দেয় তাই সত্য হয়, যেই তদবির দেয় সেটায় কাজ হয়) থেকে জানায় যে এই মেয়েকে তাবিজ করেছে আর এই তাবিজ দুই মাস আগে করেছে,তাবিজ করে তোমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করেছে, আরো ৭ সপ্তাহ এই মেয়ের তাবিজের প্রভাব থাকবে।
উনি আমাকে সব সময় এটাই বুঝাইছে যে এইটা হালালভাবে জানা যায়।তদবির নাকি হালাল, এটা হালাল।এটা হারাম নয়,আমরা নাকি অনেক মাস'আলা জানি না যেটা উনারা ছাড়া কেউ জানেনা। এগুলার অনেক ফাংশন থাকে যেগুলা আমি বুঝবোনা। কিন্তু হালাল এটা হারাম নয়। এটার গ্যারান্টি আছে যে কুফরির সংমিশ্রণ করবেনা।
আমার বোন বলতেছে এটা নাকি গণকের কাছে যাওয়া হয়েছে, এখন আমার ৪০ দিনের ইবাদাত কবুল হবেনা। আর বিশ্বাস করলে নাকি আমার ঈমান চলে গেছে,তওবা না করলে নাকি আমি কাফির অবস্থায় মারা যাব।

আমার প্রশ্ন হলো হুজুর,
১.আমি কি বিশ্বাস করলে বেঈমান হয়ে যাবো? আমি কি কাফির অবস্থায় মারা যাবো? উনি বলেছিল হালাল ভাবে জানবে তাই বিশ্বাস করে নিয়েছিলাম। আমাকে বলে যে এগুলা কুফরি না,কুফরি করলে মেয়ে হেটে হেটে চলে আসবে আমার কাছে। সামনে রমজান আমি কি করবো কিছুই মাথায় কাজ করতেছেনা.

২. যদি বিশ্বাস না করে তওবা করতাম তাহলে কি আমার ইবাদত কবুল হবে?

৩. এটা কি গণকের কাছে যাওয়া হয়েছে? আমার মন আমাকে ধোকা দিতে চাচ্ছে যে সে তো ভবিষ্যৎ নিয়ে গণনা না করে অতীত নিয়ে করেছে। এটা কি গণকের কাছে যাওয়ার হাদিসের দিকে ইংগিত করে?

৪. আমি কি ওই মেয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য তদবির করবো?
উনি যে বলতেছে উনি হালাল ভাবে তাবিজ কাটায় দিবে এটা কি সত্য?  যার সাথে বৈধ কোন সম্পর্ক নাই তাকে তাবিজ করে নিজের করে নেয়া কি জায়েজ হবে?

বি:দ্র: ওই মেয়ের ফ্যামিলি কখনো আমাকে মেয়ে দিবেনা।
৫. আমার মন থেকে কোন কিছু হবার আগে কামড় দেয়। মনে হয় এটা হবে ওটা হবে, তখন সেটা হয়।

কোন একটা জিনিসের দিকে আমার অন্তর ঝুকলে সেটাই ম্যাক্সিমাম সময় হয়।
এটা কি আল্লাহর তরফ থেকে নাকি শয়তানের তরফ থেকে?

এই অবস্থায় কি নিজের মনের সব কথা দৃড় বিশ্বাস করা যাবেম এতে কি নফসের গোলামি হবে?

৬.আমার মন সব সময় শুধু বলে যে ওকে তাবিজ করছে ওকে তাবিজ করছে। যতটা না ওই তদবির দাবী করা লোকের কথা য় বিশ্বাস হয়েছে,আমার মন বলেছে বলেই আমার বিশ্বাস হচ্ছে।এভাবে নিজের মন যা বলে তাই করা বা বিশ্বাস করা কি শরিয়ত সম্মত?

হুজুর একটু বলুন আমার তো রুহ শুকিয়ে আসছে,আমি কি করব!

অপরদিকে ওই নারীর এত বদ খাসলত দেখেও দুনিয়ার বিপক্ষে গিয়েও ওই নারীকে বিয়ে করতে মনে চায়। আমার আগে থেকে ওয়াস ওয়াসার সমস্যা ছিল, শয়তান মনে মনে ইসলাম,আল্লাহ নিয়ে আজে বাজে কথা আসতো।
আমি মনে মনে যুদ্ধ করতাম,ইস্তেতেগফার করতাম।এখন যদি ইমানহারা হই কিভাবে আবার কালিমা পড়ে বা ঈমান আনবো?

আরো একটু প্রশ্ন হুজুর, আমার ওই ভাই ঝাড়ফুক করতে হিন্দু লোককে বাড়ি নিয়ে আসে আর বকে এভাবে করলে।নাকি সমস্যানাই,কাজ করলে নাকি এদের দিয়ে করানো যায়।

 একজন মুসলিম হয়ে বিধর্মি কারো কাছে সাহায্যের জন্য/ তদবিরের জন্য যাওয়া কি জায়েজ?ইমান থাকবে?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


আল্লাহ তায়ালা বলেন,

﴿قُل لَّا يَعۡلَمُ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ ٱلۡغَيۡبَ إِلَّا ٱللَّهُۚ﴾ [النمل: ٦٥]
“বলুন, আকাশ এবং জমিনে আল্লাহ ছাড়া গায়েবের সংবাদ অন্য কেউ জানে না।” [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬৫]

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، - يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ - عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ صَفِيَّةَ، عَنْ بَعْضِ، أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَىْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً " .

মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না আনায়ী (রহঃ) ..... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতক স্ত্রীর সানাদে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে লোক গণকের নিকট গেল এবং তাকে কোন ব্যাপারে প্রশ্ন করল, চল্লিশ রাত্রি তার কোন সলাত (সালাত/নামাজ/নামায) গ্রহণযোগ্য হবে না। (মুসলিম শরীফ ৫৭১৪.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৬২৭, ইসলামিক সেন্টার ৫৬৫৬)

সহীহ হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ أَتَى كَاهِنًا فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»

“যে ব্যক্তি কোনো গণকের নিকট গমন করে তার কথায় বিশ্বাস করল, সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ বিষয় (কুরআন ও সুন্নাহ)-এর সাথে কুফুরী করল।”
(তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবুত তাহারাহ।)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
উক্ত কথা আপনি বিশ্বাস করলে বেঈমান হয়ে যাবেননা। আপনি কাফের অবস্থায় মারা যাবেননা।

(০২)
উভয় ছুরতেই আপনার ইবাদত কবুল হবে।

(০৩)
এটা গণকের কাছে যাওয়ার হাদিসের দিকে ইংগিত করেনা।
এটি কবিরাজ বা রুকইয়াহ কারীর কাছে যাওয়া হয়েছে।

(০৪)
এক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে,সেই মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য তদবির করবেননা।

তওবা করে তাকে ভুলে গিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পরামর্শ থাকবে। 

(০৫)
এটিও আল্লাহর হুকুমের বাহিরে নয়।
এই অবস্থায় নিজের মনের সব কথা দৃর বিশ্বাস করা যাবেনা। এতে নফসের গোলামি হবে।

(০৬)
এভাবে নিজের মন যা বলে তাহা কোনো সত্যতা যাচাই না করে বিশ্বাস করা শরিয়ত সম্মত নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...