আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)
edited by

আসসালমুআলাইকুম হুজুর,
আমি ৩ বছর থেকে একজন মানসিক ও ওয়াসওয়াসা রুগী। এখন মানসিক  ডাক্তার এর ওষধ খাচ্ছি।  হুজুর আমার কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়ে চিন্তা মুক্ত করুন।
১. আমি আজ ওষধ এর দোকানে ওষধ কিনতে গিয়ে দেখছি দোকানের মালিক পুজো করছে আমার ভয় হয়ে গেলো ঈমান চলে যাবে বলে তাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি এবং পরে ওষধ নিয়ে চলে এসেছি।
একই জিনিষ বার বার মনে হতে থাকে আমার এইটাই রোগ, দিয়ে কি কি ভাবছিলাম হটাৎ মনে হলো আমি হিন্দু হয়ে  গেলাম  নাকি বা হলাম এই রকম মনে মনে হয়েছে আল্লাহ কসম মুখে উচ্চরণ করিনি আল্লাহ কসম মনে মনে হয়েছে।। এই রকম ওয়াসওয়াসা জন্য কি ঈমান চলে যাবে?
২.https://ifatwa.info/34525/ এই লিঙ্কের উত্তর পড়ছিলাম দিয়ে মনে মনে হতে লাগলো , আপনাদের ওয়েব সাইড এ islamic fatwa তে যদি প্রশ্ন করি , বা দেখি তাহলে আমি কাফের হয়ে যাবো এইরকম কসম হয়ে যাচ্ছিলো , এটা সম্পূর্ণ মনে মনে  হয়েছিল। ।  আল্লাহ  কসম মনে মনে হয়েছে হুজুর আমি মুখে উচ্চরণ করিনি, আর আমি এই রকম বলতেও চাইনা । আমি আমার ঈমান হারাতে চাইনা।  ওয়াসওয়াসা র জন্য হয়েছে মনে মনে। আমি তো ওয়াসওয়াসা রুগী আমি না থাকতে পারে ভয় এ প্রশ্ন করছি আপনাদের কে মাসায়েল জানবার জন্য তাহলে কি আমি কাফের হয়ে যাবো ??  আমি মুখে উচ্চরণ করিনি আল্লাহ কসম করে বলছি।
৩.  আমি আমার স্ত্রী কে অনেকবার আল্লাহ কসম করে বলেছি আর প্রশ্ন করবনা নিজেকে ঠিক রাখবো। কিন্তু থাকতে না পেরে প্রশ্ন করে ফেলেছি । যেহেতু আমার ওয়াসওয়াসা আছে । আমার কসম ভঙ্গ হয়েছে , তাহলে কি আমার ঈমান চলে যাবে,?
৪. হুজুর একটা প্রোফাইল এ আমার নাম সরফরাজ রেখেছি ( আমার আসল নাম দেইনি আমি মুসলিম)  হুজুর কোনো মেয়ের সাতে ফোন এ কথা বলতে গিয়ে বা চ্যাটিং করতে গিয়ে মনে মনে এমন ভাবনা হয়  , যে মেয়ে প্রোফাইল টা দেখবে সে ভাববে মুসলিম ছেলে তাহলে হয়তো মেয়েটা ইমপ্রেস হবে ভাববে তার সেক্স বেশি , লিঙ্গ  টাও বড়ো এমন ভাববে। (আস্তাফিরুল্লাহ ), শয়তানের চক্করে পরে  আমার খুবই ভুল হয়েছে হুজুর না জেনে বুঝে ভুল হয়েছে।  আল্লাহ কসম এমন কাজ আমি আর কখনও করিনি, ভুল করে একবার হয়েছিল । আমি তওবা করেছি হুজুর। এর জন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে? আমার বিয়ের আগের ঘটনা অনেক দিন হলো। বিয়ের পর আর এইসব করিনি।
৫. হুজুর আমি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্য তে পড়াশোনা করতাম। একদিন ট্রেন এ করে বাড়ি আসছিলাম , ট্রেন এ কিছু হিন্দু বাঙালি তাদের তীর্থ স্টান হরিদ্বার ও  কেদার নাথ  মন্দির এ গিয়েছিল। আমরা যে খানে থাকতাম সেইখান থেকে হরিদ্বার স্টেশন কাছে আমি গিয়েছিলাম স্টেশন এ তাদের তীর্থ স্টান এ কখনো যায়নি। এবার বিষয় হলো সেই লোক গুলোর সাতে গল্পঃ করতে করতে বলেছিলাম আমি এবং আমার বন্ধুরা  হরিদ্বার, কেদারনাথ ঘুরতে গিয়েছিলাম।  এটা বলেছিলাম কারণ হরিদ্বার ও কেদার নাথ  জায়গাটা আমার যেখানে থাকতাম সেইখান থেকে কাছে  তাই আমি এটা আমি তাদের কে এমনি মিথ্যা কথা বলেছিলাম । ভুলে হয়ে গিয়েছে
দিয়ে ওই হিন্দু দের মধ্যে একজন বললো তোমার তো ঘোরা ও হলো তীর্থ ও হলো। সে ভেবেছে আমি হয়ত হিন্দু বা মুসলিম ও ভাবতে পারে কারণ আমি বলেছিলাম ঘুরতে গিয়েছিলাম আমি বলিনি যে তীর্থ করে গিয়েছিলাম।  ।তার ওই কথা তে আমি কোনো উত্তর দেইনি। পরে জিজ্ঞাসা করলো আমার নাম কি আমি বললাম সাদ্দাম , আমার নাম সাদ্দাম হোসেন আমি হোসেন টা বলিনি আমি একটু নাম টা এমন ভাবে বলতে চেয়েছি সে যেনো বুঝতে না পারে কারণ আমি ঘুরতে গিয়েছিলাম এটা মিথ্যা বলেছিলাম তাই।  তো যাইহোক শেষ মেশ সে বুঝতে পারলো আমি মুসলিম , আমি একজন মুসলমান। দিয়ে আমাদের গল্পঃ হচ্ছিলো। তারা আমাকে মিষ্টি খেতে দিল আমার মনে ভয় লাগছিল তাদের খাবার খেতে , অনুরোধ করছিল তাই খেয়েছি এবং আমার খাবার ও খেতে দিয়েছি। আমার এই মিথ্যা কথা বলার জন্য , আর নাম টা ওই ভাবে বলার জন্য কি ঈমান চলে যাবে হুজুর?  আল্লাহ কসম হুজুর ১.৫ বছর আগের কথা ঈমান সম্পর্কে এত জ্ঞান ছিলনা । না জেনে বুঝে ভুল হয়েছে। আমি আমার পরিচয় তো দিয়েছি এবং তারা জেনেছে আমি মুসলিম আর আমার উদ্দেশ্য এমন ছিল না যে আমি আমার পরিচয় গোপন করবো । জাস্ট মিথ্য  কথা তাকে চাপা দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। আমি আমার পরিচিত গোপন করিনি।আমি মুসলিম সেটা তারা বুঝতে পেরেছে এবং আমি বলেছি।।  আমার অজ্ঞতার জন্য এমন মিথ্যা কথা বলেছি । আল্লাহ কসম আমার না জেনে ভুল হয়েছে । এখন আমি বিয়ে করে ভালো আছি কিছু মাস হলো বিয়ে করেছি।হুজুর আমি ঈমান যাওয়ার মত কাজ করিনি আল্লাহ কসম । শুধু মাত্র একটা মিথ্যা বলেছিলাম যে ঘুরতে গিয়েছিলাম হুজুর এর জন্য কি  । হুজুর আমার কি ঈমান চলে যাবে??  খুব ভয় হচ্ছে হুজুর। শেষ হয়ে যাচ্চি।

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

অন্য এক হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এই রকম ওয়াসওয়াসার কারনে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে মাসায়েল জানার জন্য আই ফতোয়াতে প্রশ্ন করার দরুন আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 

(০৩)
আপনার ঈমান ভঙ্গ হবেনা।

তবে আল্লাহর নাম নিয়ে কসম করে তাহা ভেঙ্গে ফেলার দরুন আপনাকে একটি কসম ভঙ্গের কাফফারা আদায় করতে হবে।

(০৪)
"সরফরাজ" নাম দেয়ার দরুন প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 

(০৫)
আপনার এই মিথ্যা কথা বলার জন্য , আর নাম টা ওই ভাবে বলার জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

আপনি নিশ্চিন্ত মনে থাকুন,আপনার ঈমান চলে যাইনি। পূর্ণ ভাবে আপনার ঈমান বহাল রয়েছে।  আলহামদুলিল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...