আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
116 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
edited by
১. আসসালামু আলাইকুম শায়েখ কোন ছেলে মেয়ের প্রেম থাকলে। ছেলে মেয়েকে কোন আংটি উপহার দিলো কিন্তু তখন কোন সাক্ষী  ছিল না। মুখে ইজাব কবুল হয় নাই। পরে প্রেম ভেঙে গেলে সেই ছেলে তার কোন পরিচিতকে আংটির ব্যাপারে বললে সে তা ফেরত নিতে আসে এবং মেয়েও পরে অন্য আরেকটা ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় তাকে আগের ছেলেটার আংটি উপহার দেয়ার  ব্যাপারে বলে।  এখন প্রশ্ন হলো এই উপহার আদান প্রদান এর সময় কোন লোকজন ছিলনা শুধু ছেলে আর মেয়ে ছিল। কিন্তু উপহার ফেরত নেয়ার সময় যে অনেক মানুষ গুলো জানলো এগুলো দ্বারা তো  বিয়ের ইজাব কবুল হয় নাই তাই তো শায়েখ? আসলে একটা উপহার ছিল। কোন ইজাব কবুল এর উদ্দেশ্য ছিল না মেয়ের দিক থেকেও না।  আর ছেলের দিক থেকেও না। তাকে জিজ্ঞেস করা হইছিল আংটি কেন উপহার দিছিল সে। ছেলেটা বলছিল কোন উদ্দেশ্য ছিল না। বিয়ে র উদ্দেশ্য তো ছিলই না। এমনি মানুষ মানুষকে উপহার দেয় সেভাবে একটা উপহার দেয়া ছিল। বিয়ের উদ্দেশ্য ছিল না।
২. মেয়ে টা হেদায়েত পায় এবং তার উপরোক্ত কোনও প্রেমিকের সাথে বিয়ে হয় নাই। বাবা মায়ের পছন্দে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে হয়। উপরোক্ত ঘটনায় তো কোন বিয়ে হয় নাই।  মেয়েটার এখন কার বৈবাহিক জীবন তো শুদ্ধ তাই তো শায়েখ?
৩. জানার জন্য প্রশ্ন কোন  মেয়ের যদি বাবার অনুমতি ছাড়া বিয়ে হয় কিন্তু সেখান থেকে তালাক হয় না। মেয়েটা প্রথমে মাযহাব সম্পর্কে না জানলেও পরবর্তী তে আহলে হাদিসের মত মানে এবং তার বাবার অনুমতি তে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে হয়। কিন্তু সেই ছেলে কোন মাযহাবের অনুসরণ করে না। তার বিয়ের ব্যাপারে অভিভাবক ছাড়া বিয়ে হয় এমন মত থাকলে কি তাদের বর্তমান বিয়ে হয় নাই বা তালাক হবে? পুরোটাই জানার জন্য প্রশ্ন। মেয়েটার সাথে এমন কিছু হয় নাই।

৪. শায়েখ বিয়ের আগে কাউকে প্রেম থাকলে তাকে বিয়ে করতে চাই নি মেয়েটা। কিন্তু মেয়ে তারর মাকে এভাবে বলছে।  আমার ডিপ্লোমা শেষ সেমিস্টারে ছেলে দেখবা আমি বিয়ে করবো৷ আর তার আগে মেয়ের মা ছেলেকে এমন করে বলছিল আমার মেয়েকে বৌ বলে ডাকতে পারো না যা একটা প্রশ্ন ছেলে বলছিল যখন হবে তখন দেখবো। কিন্তু মেয়ের মা ভুলে গেছিল ছেলেটা কি বলছিল তবে তার মনে ছিল বৌ, আচ্ছা বা কবুল সম্মতিসূচক কিছুই ছেলেটা বলে নাই। আর মেয়েটাও বলে নাই ঐ প্রেমিক ছেলেটার সাথে বিয়ে দিয়ে দাও। এখন মায়ের এমন কথায় তো ইজাব কবুল হবে না। যেখানে মেয়েটা অনুমতি দেয় নাই। উপস্থিত ছিল না শোনেও নাই। এখন মেয়ের মা আবার বলে যে সে ভুলে যায়। আসলে সে পুরনো কথা বলতে চায় না তাই এভাবে বলছে। এখন মেয়ের সব মনে আছে পুরনো ঘটনা। সে নিজের মনে থাকার উপর আমল করলো তার তো অন্য যার সাথে বিয়ে হইছে সেটাই শুদ্ধ তাই তো শায়েখ?
৫. এগুলো নিয়ে কি আর ভাবা লাগবে? নিশ্চিত হয়ে সংসার করতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
বিবাহের জন্য পাত্র পাত্রী বা তাদের উকিল/প্রতিনিধির পক্ষ থেকে ইজাব কবুল জরুরী।

বিবাহের ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।
নতুবা বিবাহ শুদ্ধ হয়না।

সুতরাং শুধু মেয়েকে আংটি দেয়ার মাধ্যমে বিবাহ হয়না।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

★বাহরুর রায়েক গ্রন্থে আছেঃ-

وَتَمَامُهُ فِي الْفَصْلِ السَّابِعَ عَشَرَ فِي النِّكَاحِ بِالْكِتَابَةِ مِنْ الْخُلَاصَةِ، وَقَيَّدَ بِالْإِيجَابِ وَالْقَبُولِ؛ لِأَنَّهُ لَا يَنْعَقِدُ بِالْإِقْرَارِ فَلَوْ قَالَ بِحَضْرَةِ الشُّهُودِ: هِيَ امْرَأَتِي، وَأَنَا زَوْجُهَا، وَقَالَتْ: هُوَ زَوْجِي، وَأَنَا امْرَأَتُهُ لَمْ يَنْعَقِدْ النِّكَاحُ؛ لِأَنَّ الْإِقْرَارَ إظْهَارٌ لِمَا هُوَ ثَابِتٌ، وَلَيْسَ بِإِنْشَاءٍ 
সারমর্মঃ
ইজাব কবুলের সাথে বিবাহকে মুকায়্যাদ করা হয়েছে।কেননা ইজাব কবুল ব্যাতিত বিবাহ শুদ্ধ হয়না।
সুতরাং কেহ যদি সাক্ষীদের সামনে বলে যে সে আমার স্ত্রী আর আমি তার স্বামী,আর মহিলাটিও বলে যে সে আমার স্বামী আর আমি তার স্ত্রী,তাহলে বিবাহ শুদ্ধ হবেনা।
কেননা স্বীকারোক্তি বলা হয় যাহা আগে থেকে প্রমানিত, সেটি প্রকাশ করা,নতুন ভাবে কোনো কিছু হওয়া নয়।
(বাহরুর রায়েক-৩/৯০)

হেদায়া গ্রন্থে আছেঃ

النكاح ينعقد بالإيجاب والقبول بلفظين يعبر بهما عن الماضي لأن الصيغة وإن كانت للإخبار وضعا فقد جعلت للإنشاء شرعا دفعا للحاجة وينعقد بلفظين يعبر بأحدهما عن الماضي وبالآخر عن المستقبل مثل أن يقول زوجني فيقول زوجتك لأن هذا توكيل بالنكاح والواحد يتولى طرفي النكاح الھدایۃ، ج:1، ص:185، ط:دار احياء التراث العربي - بيروت - لبنان
সারমর্মঃ
বিবাহ ইজাব কবুল দ্বারা সম্পন্ন হয়,দুটির একটি অতিতকাকাল সূচক বাক্য হবে,আরেকটি বর্তমান কাল বুঝায় এমন বাক্য হতে হবে।

হেদায়া গ্রন্থে আছেঃ 
وینعقد بلفظ النکاح والتزویج والہبة والتملیک والصدقة )
সারমর্মঃ  
বিবাহ,তাযয়িজ,হিবা,তামলিক,সদকাহ এই জাতীয় বাক্য গুলি দ্বারা বিবাহ সম্পন্ন হয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
মেয়েটার এখনকার বৈবাহিক জীবন শুদ্ধ।

(০৩)
জানা মতে ইতিপূর্বে এ ধরনের প্রশ্নের জবাব আপনাকে দেয়া হয়েছে।
সুতরাং আরো জানতে চাইলে নিকটস্থ কোনো বড় কওমি মাদ্রাসার দারুল ইফতায় যোগাযোগ করার পরামর্শ থাকবে। 

(০৪)
ঐ মেয়েটার এখন অন্য যার সাথে বিয়ে হইছে সেটাই শুদ্ধ।

(০৫)
এগুলো নিয়ে আর ভাবা লাগবেনা।নিশ্চিত হয়ে সংসার করতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...