আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (37 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ

আল্লাহ তায়ালা  হুজুরকে পরিপূর্ণ সুস্থতার নিয়ামতে জীবন অতিবাহিত করুক এবং দ্বীনের মেহনত কবুল করুক, আমিন।

আমার প্রশ্নাবলি:

১) হাদিস:  হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রা.) বলেন, রসূলে কারীম (সা:) নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমাদের কেউ যেন গোসলখানায় প্রথমে প্রস্রাব ও পরে গোসল অথবা অযু না করে।কেননা, অধিকাংশ মানসিক সংশয় এ থেকেই জন্ম লাভ করে।( আবূ দাউদ):   যে কিতাব থেকে গৃহীত: ওসওয়ায়ে রসূলে আকরাম (সা:), প্রকাশনী: মদীনা পাবলিকেশন্স।

হুজুর এই হাদিসের সহজ ব্যাখ্যা জানালে ভাল হয়। এখানে গোসলখানা বলতে কি শুধুই গোসলখানায় কেউ এই কাজ করলে এরুপ হবে , নাকি গোসলখানা বলতে  বিল্ডিং এর ফ্লাট বাসায় গোসলখানা এবং ইস্তেঞ্জা একসাথে থাকে সেটা ও উদ্দেশ্য। যদি ফ্লাট বাসার ইস্তেঞ্জাসহ গোসলখানাও এই হাদিসের অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে আমরা নামাজের জন্য বা তিলাওয়াতের জন্য বা সব সময় ওযুর হালতের আমলের জন্য বাসায় ইস্তেঞ্জার পর কিভাবে কোথায় অযু করে নিজেদের আমল করব। আর যদি এক্ষেত্রে অন্য কোথাও গোসল অযু না করে এখানেই করি, তাহলে তো ক্ষতি হয়ে যাবে।

২) যারা মেয়েদের কাপড়ের ব্যবসা করে তারা ঐ কাপড় ক্রেতাকে দরকার পড়লে পুরুষ ব্যক্তি নিজে পড়ে দেখাতে পারবে কিনা?

৩) নামাজে কাতার সোজা করতে বড়দের হাত ধরে অথবা ইশারা দিলে কি সেটা  বেয়াদবি হবে ?

৪) খরগোশ এবং পাঠার গোস্ত খাওয়া কি জায়েজ?

৫) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে আযানের পরেও রুমমেট অথবা বাহিরের কাউকে নামাজের জন্য ডাকা যাবে কিনা যদি বিরক্তিবোধ করার কোনো বিষয় না থাকে। সাহাবায়ে কেরামের আমল তথা দলিলভিত্তক উত্তর হলে ভাল হয়।

৬) যদি নিশ্চিত ভাবে জানা থাকে যে, একটি রুমে শুধুই পুরুষ মানুষ ই আছে(যেমন- পুরুষদের ম্যাচ), তাহলে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলে অথবা রুমের ভিতরে তাকালে কোনো গুনাহ হবে কিনা,

৭) একজম প্রাপ্ত বয়স্ক যোগ্য ব্যক্তি ইমাম এবং একজন নাবালক ছেলে মুক্তাদি হলে জামাত হবে কিনা?

জাজাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আবদুল্লাহ্ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) হতে বর্ণিত
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَبُولَنَّ أَحَدُكُمْ فِي مُسْتَحَمِّهِ ثُمَّ يَغْتَسِلُ فِيهِ " . قَالَ أَحْمَدُ " ثُمَّ يَتَوَضَّأُ فِيهِ فَإِنَّ عَامَّةَ الْوَسْوَاسِ مِنْهُ
 রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন গোসলখানায় পেশাব না করে, অতঃপর সে স্থানে গোসল করে।
ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেছেনঃ অতঃপর সেখানে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে। কেননা অধিকাংশ অস্ওয়াসা (সন্দেহ) এটা হতে সৃষ্টি হয়ে থাকে- (নাসাঈ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)।


মুল্লা আলী কারী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় ইবনুল মালাক রাহ এর বক্তব্যকে এভাবে তুলে ধরেন যে,
قَالَ ابْنُ الْمَلَكِ: لِأَنَّهُ يَصِيرُ ذَلِكَ الْمَوْضِعُ نَجِسًا فَيَقَعُ فِي قَلْبِهِ وَسْوَسَةٌ بِأَنَّهُ هَلْ أَصَابَهُ مِنْهُ رَشَاشٌ أَمْ لَا؟ وَقَالَ ابْنُ حَجَرٍ: لِأَنَّ مَاءَ الطَّهَارَةِ حِينَئِذٍ يُصِيبُ أَرْضَهُ النَّجِسَةَ بِالْبَوْلِ ثُمَّ يَعُودُ إِلَيْهِ فَكُرِهَ الْبَوْلُ فِيهِ لِذَلِكَ، وَمِنْ ثَمَّ لَوْ كَانَتْ أَرْضُهُ بِحَيْثُ لَا يَعُودُ مِنْهَا رَشَاشٌ أَوْ كَانَ لَهُ مَنْفَذٌ بِحَيْثُ لَا يَثْبُتُ فِيهِ شَيْءٌ مِنَ الْبَوْلِ لَمْ يُكْرَهِ الْبَوْلُ فِيهِ إِذْ لَا يَجُرُّ إِلَى وَسْوَاسٍ لِأَمْنِهِ مِنْ عَوْدِ الرَّشَاشِ إِلَيْهِ فِي الْأَوَّلِ وَلِطُهْرِ أَرْضِهِ فِي الثَّانِي بِأَدْنَى مَاءٍ طَهُورٍ يَمُرُّ عَلَيْهَا اهـ. وَهُوَ يُؤَيِّدُ اعْتِرَاضَنَا عَلَى الطِّيبِيِّ، وَكَأَنَّهُ ذُهِلَ عَنْ كَلَامِ الطِّيبِيِّ أَوِ انْتَقَلَ إِلَى كَلَامِ النَّوَوِيِّ، وَلِذَا سَكَتُّ عَنْهُ وَاللَّهُ أَعْلَمُ. (مرقاة المفاتيح ج١- ص:٣٨٤)
সারমর্মঃ
প্রস্রাব এবং অজু উভয়ের পানি প্রবাহির হওয়া নালা বা  রাস্তা যদি একই হয়, তাহলে প্রস্রাবের পর যখন সেখানে অজু করা হবে, তখন মনের মধ্যে ওয়াসওয়াসা আসতে পারে যে, হয়তো প্রস্রাবের চিটা এসে কাপড়ে লেগে গেলো কি না? এমন ওয়াসওয়াসা আসতে পারে।এটাই স্বাভাবিক বিষয়। এজন্য সেখানে অজু করা নিষেধ।
কিন্তু যদি প্রস্রাব আর অজুর পানি প্রবাহিত হওয়ার রাস্তা পৃথক থাকে, তাহলে একই ছাদের নিচে উভয়টির ব্যবস্থা থাকা সত্বেও অজু করা তখন সেখানে নিষেধ হবে না। যেমন আজকালকার বাথরুম। যেখানে প্রস্রাবের রাস্তা এবং অজুর রাস্তা পৃথক পৃথক। এ সত্বেো উক্ত বাথরুমগুলোতে অজু করা নিষিদ্ধতার আওতাধীন হবে না। হ্যা, সেটা ভিন্ন কথা যে, বাথরুমে বিসমিল্লাহ বলা যাবে না। 


(২)
যেই সব পুরুষ ভাইয়েরা মেয়েদের কাপড়ের ব্যবসা করে তারা ঐ কাপড় ক্রেতাকে প্রয়োজনে পরিধান করে দেখানোর বৈধতা থাকলেও এতেকরে সুষ্ট জ্ঞানসম্পন্ন একজন ক্রেতা সন্তুষ্ট হওয়ার কথা না। সুতরাং হয়তো পাশে এমন কোনো ব্যবস্থা রাখুন যেখানে মেয়েরা কাপড় পরিধান করে দেখতে পারে।

(৩)
নামাজে কাতার সোজা করতে বড়দের হাত ধরে অথবা ইশারা দিলে বেয়াদবি না হলেও এমন পরিস্থিতিতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবেন,যাতেকরে বড়রা বড়দেরকে আহবান করে নেয়।

(৪) খরগোশ এবং পাঠার গোস্ত খাওয়া জায়েয।

(৫) 

ফজরের সময় আযানের পর পুনরায় নামাযের জন্য ডাকাডাকি করা উত্তম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

অন্যান্য নামাযের জন্যও এরূপ তাসবীবের অনুমতি আছে। কারণ বর্তমানে এ ফিতনার যুগে প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাযের ক্ষেত্রেই মানুষের মাঝে উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়। [প্রমাণ: ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ২:৩৬২ # ফাতাওয়া দারুল উলুম ২:১০১/৯৮,বাদায়েউস সানায়ে- ১/১৪৮, হিদায়া- ১/৮৯, রদ্দুল মুহতার- ১/৩৮৯

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে আযানের পরেও রুমমেট অথবা বাহিরের কাউকে নামাজের জন্য ডাকা যাবে। 

(৬) যদি নিশ্চিত ভাবে জানা থাকে যে, একটি রুমে শুধুই পুরুষ মানুষ ই আছে(যেমন- পুরুষদের ম্যাচ), তাহলেও অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না। েববং রুমের ভিতরে তাকানো যাবে না।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّىٰ تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَىٰ أَهْلِهَا ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।( সূরা নূর-২৭)

(৭) একজম প্রাপ্ত বয়স্ক যোগ্য ব্যক্তি ইমাম এবং একজন নাবালক ছেলে মুক্তাদি হলে জামাত হবে।

إذا زاد علی الواحد فی غیر الجمعة فہو جماعة وإن کان معہ صبي عاقل (ہندیہ: ۱/۱۴۱) ۔


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (712,400 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...