আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
64 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
১। মা এর জন্য খরচ করা বাবার জন্য কি বাধ্যতামূলক নয়? যদি বাধ্যতামূলক হয়, তবে কত টুকু খরচ বা কি কি খরচ এই আওতায় পড়বে?  মা যদি ইনকাম করে, সে ক্ষেত্রেও কি বাধ্যতামূলক?


২। একজন বাবা কি চাইলে তার নিজের সম্পত্তি সম্পুর্ন যাকে যতটুকু ইচ্ছা দিতে পারে? যেমন ৩ ছেলের মধ্যে ১ ছেলেকে বেশি দিল, আরেক ছেলেকে কম দিল - এমনটা জায়েজ আছে? আর বাবা কি নিজের যেমন ইচ্ছা যেখানে খুশি খরচ করতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো, স্ত্রী গরিব হোক বা ধনী। অসুস্থ হোক সুস্থ। বৃদ্ধা হোক বা যুবতী,সর্বাবস্থায় স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর ওপর।

https://ifatwa.info/75865/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

স্বামীর উপর ওয়াজিব যে,সে তার স্ত্রীর ভরণপোষণ করবে।
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে।(সূরা নিসা-৩৪)

لِيُنْفِقْ ذُو سَعَةٍ مِنْ سَعَتِهِ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنْفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَا آتَاهَا
বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে।(সূরা তালাক-৭)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
হযরত আমর ইবনুল আহওয়াস রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
 
সাবধান, তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের উপর রয়েছে কিছু অধিকার, আর তোমাদের স্ত্রীদের জন্যও তোমাদের উপর রয়েছে কিছু অধিকার। তোমাদের অধিকার এই যে, স্ত্রীরা কোনোভাবেই তোমাদের বিছানায় এমন কাউকে পদার্পণের সুযোগ দিবে না, যাকে তোমাদের পছন্দ নয়। এবং তোমাদের ঘরে এমন কাউকে প্রবেশের অনুমতি দিবে না, যাকে তোমাদের অপছন্দ।
সাবধান, তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, খোরপোষের বিষয়ে তাদের প্রতি সদাচার করবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৬৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৫১

মুআবিয়া কুশাইরী রাহ. বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! স্ত্রীদের বিষয়ে আমাদের প্রতি আপনার আদেশ কী? তিনি বললেন-

তোমরা যেমন খাও তাদেরকেও তেমন খাওয়াও, তোমরা যেমন পর, তাদেরকেও তেমন পরাও। তাদেরকে প্রহার করো না ও কটু কথা বলো না।-সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৪১৬৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২১৪২

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
স্বামীর উপর ওয়াজিব হল, মধ্যম ধরণের খোরাকি স্ত্রীকে প্রদান করা।এবং প্রয়োজনিয় খরচাপাতি স্বামীর উপর ওয়াজিব। 

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)
নারীদের সাথে সদ্ভাবে ব্যবহার করতে হলে তাদেরকে নিয়মমাফিক অন্ন-বস্র-বাসস্থান দিতে হবে।

এক্ষেত্রে স্বার্থের মধ্যে মধ্যম মানের অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান এর ব্যবস্থা করতে হবে। 

খোরাকি ব্যতিত বিলাসিতার ব্যবস্থা স্বামীর উপর ওয়াজিব নয়।

আরো জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/54770/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার মা এর স্বাভাবিক  অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থানের ব্যবস্থা করা আপনার বাবার উপর আবশ্যক। 

তবে তাহা আপনার বাবার সাধ্যের মধ্য থেক। সাধ্যের বাহিরে থেকে নয়।
বিলাসিতা নয়,স্বাভাবিক অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থানের ব্যবস্থা করা আপনার বাবার উপর আবশ্যক। 

আপনার মা যদি ইনকাম করে,সেক্ষেত্রে আপনার বাবা যদি সন্তুষ্টি চিত্তে সেই ইনকামের অনুমতি দেয়,সেক্ষেত্রে আপনার মায়ের ভরনপোষণ আপনার বাবার উপর আবশ্যক।

আর যদি আপনার মা আপনার বাবার অবাধ্য হয়,কথা না শুনে,অন্যত্রে থাকে, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইনকাম করে, সেক্ষেত্রে আপনার মায়ের ভরনপোষণ আপনার বাবার উপর আবশ্যক।

(০২)
এমনটি করা জায়েজ হয়।
তিন ছেলের সকলকেই সমানভাবে দিতে হবে।

বাবা নিজের যেমন ইচ্ছা যেখানে তার খুশি অনুযায়ী সম্পদ খরচ করতে পারে।
এটি তার সম্পদ,সুতরাং এটি খরচের অধিকার একমাত্র তার।

তবে ওয়ারিশদের মাঝে সম্পদ বন্টন করে দিতে চাইলে সেক্ষেত্রে সকল সন্তানকে সমান সম্পদ দিতে হবে।
স্ত্রী সহ সকল ওয়ারিশকে প্রাপ্য সম্পদ দিতে হবে।

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...