আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
১. আমি গর্ভবতী, আমার নিয়ত ইংশাআল্লাহ সন্তানের শরীরে হারামের অংশ রাখব না। আমার শ্বশুর ইসলামি ব্যাংকে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পোস্টে আছেন। তার আয়ের প্রধান উৎস এটা, দ্বিতীয় উৎস উনি ব্যাংক হতে বড় মাপের লোন নিয়ে ৫তলা বাড়ি করেন, এখনো লোন শোধ করেন, সেটার বাড়িভাড়া।

আমার স্বামী এখনো স্টুডেন্ট, তার বাবার উপর আংশিক নির্ভরশীল। আংশিক, আমরা চেষ্টা করলে উনার কন্ট্রিবিউশান ছাড়াও চলতে পারব ইংশাআল্লাহ। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমার শ্বশুরের আয় হালাল না হারাম এবং সেটা আমাদের জন্য কি হালাল না হারাম? একইসাথে যদি হারাম হয় আমার শ্বশুড়বাড়ি থেকে হাদিয়া/আর্থিক কন্ট্রিবিউশান বা অন্যকোন গিফট নেয়া কি জায়েজ হবে এবং আমার নিয়তের ভিত্তিতে গর্ভাবস্থায় ওই পরিবারের সাথে থাকা ও খাওয়া কি আমার নিয়ত ভঙ্গ করবে?( বর্তমানে  আলাদা থাকি)
২. আমার শ্বশুড়ের উক্ত সম্পত্তি আমার স্বামীর ক্ষেত্রে মিরাসের হুকুম কি? যদি হারাম আয়ে করা সম্পত্তি হয়?

৩. আমার মা ও বাবা উভয়েই একটি গার্লস হাই স্কুলের অধ্যাপক। উভয়ের জন্যই পর্দার ব্যাপারটা পরিপূর্ণ হয়ত পালন হয়না। এতে কি উনাদের আয় হারাম হয়ে যাবে?
৪. আমার কিছু আয় আছে রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে পাওয়া যাতে আমার শুধুমাত্র কন্ঠের পর্দা কোন কোন ক্ষেত্রে আদায় হয়নি৷ এবং এই কাজে মাহরাম ছাড়া আমার একবার ভ্রমনে যেতে হয়েছে যেকারণে আমি অনুতপ্ত। এই রিসার্চে পার্টনার হিসেবে এনজিও এনভলভ ছিল কিন্তু সরাসরি ফান্ডিং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের একটা রিসার্চ প্রজেক্ট থেকে আসা।৷ আমি এই আয় নিয়ে বর্তমানে কিছুটা সন্দিহান। আমাকে একটু জানাবেন।
জাযাকাল্লাহ খইরান

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,

فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن  كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع

যদি এমন কেউ কাউকে কিছু হাদিয়া দেয়,যার অধিকাংশ সম্পত্তি হালাল,তাহলে সেই মালকে গ্রহণ করা নাজায়েয নয়।তবে যদি সে জানতে পারে যে,দাতা হারাম থেকে দিচ্ছে তাহলে এমতাবস্থায় সেটা জায়েয হবে না।আর যদি তার মালের অধিকাংশই হারাম থাকে,তাহলে এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।এমন ব্যক্তির ওখানে আহার করাও যাবে না, যতক্ষণ না সে হালাল খাবারের সংবাদ দিচ্ছে বা এটা বলছে যে,সে ধার করে নিয়ে এসে আহার করাচ্ছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
(০১)
প্রশ্নের আপনার শশুরের অধিকাংশ ইনকাম হারাম,সুতরাং শ্বশুড়বাড়ি থেকে হাদিয়া/আর্থিক কন্ট্রিবিউশান বা অন্যকোন গিফট নেয়া জায়েজ হবেনা এবং আপনার নিয়তের ভিত্তিতে গর্ভাবস্থায় শশুড়ের টাকা হতে খাওয়া আপনার নিয়ত ভঙ্গ করবে।

(০২)
হারাম আয়ে করা সম্পত্তি হলে ওয়ারিশ হিসেবে সেই সম্পত্তি আপনার স্বামী পেলে তাহা ব্যবহার করা হারাম হবে।
সেই সম্পত্তি গরিব মিসকিনদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকাহ করে দিতে হবে।

তিনি যে ৫ তলা বাড়ি করেছেন,সেটির লোন হালাল টাকা থেকে শোধ করলে সেই বাড়ির অংশ ওয়ারিশ হিসেবে গ্রহন করা আপনার স্বামীর জন্য হালাল হবে। 

(০৩)
তাদের আয় হালাল।
তবে পর্দার ব্যাপারটা পরিপূর্ণ পালন না হওয়ার গুনাহ তাদের হবে। 

(০৪)
নিম্নের লিংকে প্রদত্ত শর্ত মেনে চাকুরী করা হলে উক্ত চাকুরী ও ইনকাম হালাল হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...