আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম। নিরুপায় হয়ে প্রশ্নটা করছি।
শায়েখ, আমি এবং আমার স্বামী আমেরিকায় থাকি। আমাদেরবিয়ের বয়স ৬ বছর। বিয়ের পর ৩ বছর দেশে ছিলাম সেই সময়থেকে এখনো আমার শাশুড়ি  আমার অনুপস্থিতিতে আমার এবংআমার পরিবারের নামে আমার স্বামী এবং শশুড়ের কাছে মিথ্যাএবং বানোয়াট কথা বলে। সাধারন কথার মধ্যেও এমন ভাবেনেগেটিভ কথা প্রকাশ করে যে আমার স্বামীও আমাকে বা আমারপরিবারকে ভুল বুঝে এবং এই ব্যাপারে আমাকে প্রশ্ন করে। আমারশাশুড়ি খুবই চালাকি করে কথা বলে যা সহজ সরল মানুষ সহজেধরতে পারেনা। এমন কি আমার স্বামীর দাদা বাড়ির মানুষদের সাথেতাদের তেমন ভালো সম্পর্ক নাই কারন সারাক্ষণ আমার শশুড় এরকাছে তার ভাই বোনদের নামে নেগেটিভ কথা বলতেই থাকে।
এমন অবস্থায় আমার শাশুড়ি যে অভিযোগ গুলো আমার স্বামীকে দেয় বা যে মিথ্যা গুলো তাকে বলে সেই ভুলগুলো ভাংগানোর জন্য আমার স্বামীকে শাশুড়ীর ভুল গুলো বলতে হয়। নাহলে তো আমার স্বামীই আমাকে ভুলবুঝে থাকবে। এটা আমি কিভাবে মেনে নিবো। যখন অভিযোগ আসে আর আমি স্বামীকে শাশুড়ীর ভুল গুলোতাকে বলি তখন আমার স্বামী বলে আমি নাকি লেবাসধারী মুনাফিক। কারন আমি এই কাফেরের দেশে মানুষকেদ্বীনের দাওয়াত দেই, তালিম করি। আমার স্বামী বলে আমি আমার শাশুড়ির ভুল তাকে বলি এগুলো তারএখানকার সবাইকে বলে দেওয়া উচিত। কারন এটা নাকি মুনাফিকি আচরণ।
কিন্তু আমার শাশুড়ি যেভাবে তার যে কোনো ইন লস পরিবার সম্পর্কে আমার শশুড় এবং স্বামীকে নেগেটিভবানানোর চেষ্টা করে তা আমি মেনে নেই কিভাবে? শাশুড়ি কে কিছু বলতে পারিনা কিন্তু স্বামীকে ভুলটা ভাংগানোরচেষ্টা করি। স্বামী তার পক্ষ নিয়ে বলতে থাকলে ঝগড়া হয়। আমার করনীয় কি আমি বুঝতে পারছিনা শায়েখ।


শাশুড়ী কোনো মিথ্যা বানোয়াট বা কথার ভংগীতে আমার ভুল আমার স্বামীর কাছে বুঝালে আমার কি উচিত হবেশাশুড়ির ভুলটা স্বামীকে ধরিয়ে দেওয়া?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ  

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ [٤٩:١٢] 

মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। {সূরা হুজুরাত-১২}

عَنْ أَبِي سَعْدٍ، وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا “، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَكَيْفَ الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا؟ قَالَ: ” إِنَّ الرَّجُلَ لَيَزْنِي فَيَتُوبُ فَيَتُوبُ اللهُ عَلَيْهِ “وَفِي رِوَايَةِ حَمْزَةَ ” فَيَتُوبُ فَيَغْفِرُ لَهُ، وَإِنَّ صَاحِبَ الْغِيبَةِ لَا يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَغْفِرَهَا لَهُ صَاحِبُهُ  

হযরত আবু সাঈস এবং জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। উভয়ে বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ গীবত করা ব্যভিচার করার চেয়েও জঘন্য। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! গীবত করা ব্যভিচারের চেয়ে জঘন্য হয় কি করে? রাসূল সাঃ বললেনঃ নিশ্চয় ব্যভিচারকারী ব্যভিচার করে তওবা করে থাকে, ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, কিন্তু গীবতকারীকে ক্ষমা করা হয় না, যতক্ষণ না যার গীবত করেছে সে তাকে ক্ষমা করে। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬৩১৫, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫৯০}

ছয়টি কারণে গীবত করা জায়েজ আছে। 

 الأول: التظلم. يجوز للمظلوم أن يتظلم إلى السلطان والقاضي وغيرهما ممن له ولاية أو له قدرة على إنصافه من ظالمه، فيذكر أن فلانا ظلمني وفعل بي كذا وأخذ لي كذا ونحو ذلك. 

(এক) জালিমের জুলুম থেকে বাঁচতে বিচারকের নিকট জালিমের বিরুদ্ধে নালিশ/গিবত করা বৈধ।যেমন মজলুম ব্যক্তি বিচারকের নিকট গিয়ে বলল,অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম-নির্যাতন করেছে।এবং আমার সাথে সে এমন এমন ব্যবহার করেছে।আমার অমুক অমুক জিনিষ সে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

 الثاني: الاستعانة على تغيير المنكر ورد العاصي إلى الصواب. وبيانه أن يقول لمن يرجو قدرته على إزالة المنكر: فلان يعمل كذا فازجره عنه ونحو ذلك، ويكون مقصوده إزالة المنكر، فإن لم يقصد ذلك كان حراما. 

(দুই) মন্দকে পরিবর্তন করতে এবং গোনাহগারকে নেকির দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে কারো গীবত করা।যেমন এমন কারো কাছে গিয়ে গিবত করা,যে ব্যক্তি ঐ মন্দকাজ সম্পাদনকারীকে ধমক দিতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি।শর্ত এই যে, মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যই থাকতে হবে।উদ্দেশ্য যদি অন্য কিছু হয় তখন কিন্তু গীবত করা জায়েয হবে না বরং হারাম হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামী যেহেতু আপনার শাশুড়ীকে বুঝাতে পারবে, ধমক দিতে পারবে/সংশোধন এর চেষ্টা করতে পারবে,সুতরাং মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যে তার কাছে এটি বলা জায়েজ আছে।

তবে প্রশ্নের বিবরন মতে বুঝা যাচ্ছে যে এমনটি বলায় আপনার স্বামী আপনার শাশুড়ীকে বুঝায়না,বরং আপনাকে বিশ্বাস করছেনা,মুনাফিক বলছে।
সুতরাং এক্ষেত্রে এভাবে ফায়সালা সম্ভব নয়।

দেশে পারিবারিক ভাবে বৈঠক করে দুই পরিবারের মুরব্বিরা মিলে আপনার শাশুড়ীকে বুঝাতে হবে।
তাহলে ইনশাআল্লাহ সমাধান মিলবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...