আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (63 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

১। আমি দেশের বাড়ি থেকে আসছিলাম। আসার পথে ১৮ কি.মি. দূরে যাওয়ার পর আসরের ওয়াক্ত শুরু হয়। ওয়াক্ত শেষ হতে হতে সফরের দূরত্ব পার করে ফেলার সম্ভাবনা আছে যদি গাড়ি জোরে চলে। এমন অবস্থায় কি আসর ৪ রাকাতই আদায় করতে হবে নাকি ২ রাকাত আদায় করা লাগবে? পূর্বে না জানার কারণে সফরে থাকার সময় সালাত কসর না করে সম্পূর্ণ আদায় করতাম? ঐ সালাতগুলোর কসর কি কাজা করতে হবে?

২। একজন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে খুন করেন এরপর পলাতক হয়ে যান। কয়েক বছর পালিয়ে বেড়ান এরপর পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। যেই কয়েক বছর পালিয়ে ছিলেন তখন একদল দ্বীনদার লোকের সাথে সাক্ষাৎ হয় ও তাদের সংস্পর্শে থাকতে থাকতে দ্বীনের বুঝ আসে। একপর্যায়ে অতীতে করা সকল গুনাহর জন্য তওবা করেন। তিনি এটাও জানতে পারেন যে অতীতের পাপ গোপন রাখাই শরীয়তের নিয়ম। তো যখন দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর পুলিশ যখন তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরল(পুলিশ নিশ্চিত না যে সেই খুনি) এরপর জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করল যে সে খুন করেছে কিনা। তো সেই ব্যক্তি কি তখন অতীতের পাপ গোপন রাখতে সেই খুনের বিষয়টা অস্বীকার করতে পারবে? এরকম করলে কি পাপ হবে?

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আপনি যেখান থেকে দেশের বাড়ি আসছিলেন,পথের দুরত্ব কি ৭৮+ কিলোমিটার ছিলো?

যদি পথের দুরত্ব কি ৭৮+ কিলোমিটার হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে নিজ শহরের আসার আগে আসরের নামাজ আদায় করলে কসর আদায় করতে হবে।

পথের দূরত্ব এর চেয়ে কম হলে কসর আদায় করতে পারবেননা।

★পূর্বে না জানার কারণে সফরে থাকার সময় যে সমস্ত সালাত কসর না করে সম্পূর্ণ আদায় করতেন, ঐ সালাতগুলোর ২য় রাকাতে কি আপনি বৈঠক করেছিলেন?

ঐ সালাতগুলোর ২য় রাকাতে বৈঠক করে থাকলে আপনার নামাজ গুলি আদায় হয়ে গিয়েছে। পুনরায় আদায় করতে হবেনা। 

ঐ সালাতগুলোর ২য় রাকাতে বৈঠক না করে থাকলে আপনি সেই নামাজ গুলি কসর হিসেবেই কাজা আদায় করে নিবেন।

এ সংক্রান্ত আরো জানুনঃ- 

(০২)
মিথ্যা কথা বলা শরীয়ত অনুমোদিত নয়। 
নিঃসন্দেহে মিথ্যা বলা হারাম। 
শরিয়তে সত্যকে সর্বত্রই উৎসাহিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সত্য মুক্তি দেয়, মিথ্যা ধ্বংস আনে।

তবে যে কোনো পরিস্থিতিতে সত্য বলাই শরিয়তের মৌল দর্শনের দাবি।

পবিত্র কুরআন শরিফে এসেছে   
لَّعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ [٣:٦١
তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী। {সূর আলেইমরান-৬১}

হাদিস শরিফে এসেছে,
 সাফওয়ান ইবন সুলাইম বলেন,
قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ ﷺ : أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ جَبَانًا ؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ بَخِيلًا؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ كَذَّابًا ؟ فَقَالَ: ( لَا )
রসুলুল্লাহ ﷺ -কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কাপুরুষ হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কৃপণ হতে পারে। তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি মিথ্যাবাদী হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, না। (মুয়াত্তা মালিক ২/৯৯০) অর্থাৎ মুমিনের বিভিন্ন চারিত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে, তবু সে মিথ্যা বলতে পারে না।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই খুনের বিষয়টা অস্বীকার করা জায়েজ হবেনা।
এটা স্পষ্ট মিথ্যা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (63 points)
কিন্তু যদি তওবা করার পর পাপ গোপন রাখাই শরীয়ত সম্মত হয় তাহলে ঐ ব্যক্তির কাজে কি সমস্যা?
by (684,760 points)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পুলিশ যখন তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরল, এরপর জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করল, যে সে খুন করেছে কিনা। তো সেই ব্যক্তি তখন অতীতের পাপ গোপন রাখতে সেই খুনের বিষয়টা অস্বীকার করতে পারবেনা।

এরকম করলে গুনাহ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...