আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম। কসম ভংগের কাফফারা কখন দিতে হবে?
আমি একটা কাজ নিয়ে কসম করেছিলাম। কিন্তু আমার পরে মনে হয়েছে যে, সেই কাজ টি আমার আবারও করতে হবে। তখন আমি কসম ভংগের কাফফারা দিয়ে সেই কাজটি আবার করি। এমন করে আমি কয়েকবার কসম এর কাফফারা দিয়েছি। কাফফারা দিয়ে সেই কাজ টি করেছি, বা সেই জায়গায় গিয়েছি। এখন আমার এলাকার একজন হুজুর বললো যে,  আগে সেই জায়গায় গিয়ে, সেই কাজ করে নাকি আমার কসমের কাফফারা দিতে হবে। এখন কোনটা করবো আমি?

আগে কাফরারা আদায় করলে পরে  সেটা নিয়ে কসম করেছিলাম সেই কাজ করলে কি কোনো সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (681,780 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

সুরা মায়েদার ৮৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন 
 لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰہُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَکَفَّارَتُہٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَہۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُہُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ کَفَّارَۃُ اَیۡمَانِکُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۸۹﴾

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফ্ফারা, যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাযত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর। 
,
★সুতরাং শপথ তিন প্রকার। এক. যদি অতীত ঘটনা সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা শপথ করা হয়, তাকে 'ইয়ামিনে গুমুস' বা পাপে নিমজ্জিত শপথ বলা হয়। উদাহরণত, কেউ কোনো কাজ করে জেনেশুনে শপথ করে বলল যে সে কাজটি করেনি। এ মিথ্যা শপথ কবিরা গুনাহ। তবে এর জন্য কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

দুই. নিজ ধারণায় সত্য মনে করে কোনো অতীত ঘটনা সম্পর্কে শপথ করা। অথচ বাস্তবে তা অসত্য। যেমন- কোনো অসমর্থিত সূত্রে জানা গেল, অমুক ব্যক্তি এসে গেছে। এর ওপর নির্ভর করে কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে বলল, 'অমুক ব্যক্তি এসে গেছে।' এরপর দেখা গেল, এটি বাস্তবের বিপরীত। এ ধরনের শপথকে 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বলা হয়। 

এ ছাড়া অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে শপথবাক্য উচ্চারিত হলে একেও 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বা অহেতুক শপথ বলা হয়। এ-জাতীয় শপথে কোনো গুনাহ নেই। কাফফারাও দিতে হয় না।

তিন. আল্লাহর নাম নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করা। এ রকম শপথকে 'ইয়ামিনে মুনআকিদ' বা কার্যকর শপথ বলা হয়। এ শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। এমনকি কোনো কোনো অবস্থায় গুনাহও হয়।
,
تفسیر مظہری :

"ذلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمانِكُمْ إِذا حَلَفْتُمْ ،وحنثتم فان الكفارة لا تجب الا بعد الحنث اجماعا."
 (سورة المائدة،أية:89، ج:3، ص:167، ط:مكتبة الرشدية )
মর্মার্থঃ-
নিঃসন্দেহে কাফফারা কসম ভঙ্গের পর আবশ্যক হয়।

المبسوط للسرخسي: 

"الكفارة تجب خلفا عن البر الواجب باليمين، ولهذا يجب في المعقودة على أمر في المستقبل بعد الحنث؛ لأن قبل الحنث ما هو الأصل قائم فإذا حنث فقد فات الأصل، فتجب الكفارة ليكون خلفا، ويصير باعتبارها كأنه على برة."
(كتاب الأيمان، ج:9، ص:129، ط:دار المعرفة)

মর্মার্থঃ-
কাফফারা কসম ভঙ্গের পর আবশ্যক হয়।

فتاوی شامی:

"(ولم يجز) 
التكفير ولو بالمال خلافا للشافعي (قبل حنث) ولا يسترده من الفقير لوقوعه صدقة."
(كتاب الأيمان،  ج:3، ص:727، ط:سعيد)

মর্মার্থঃ-
কসম ভঙ্গের পূর্বে কাফফারা আবশ্যক হয়না।
তবে কেহ কসম ভঙ্গের পূর্বে কাফফারা আদায় করলে সেটি ফিরিয়ে নিবেনা।
কেননা তাহা সদকাহ হিসেবে গন্য হয়েছে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কসম ভঙ্গের পূর্বে কাফফারা আবশ্যক হয়না।
সুতরাং আপনার যদি কসম ভঙ্গ করতে হয়,সেক্ষেত্রে কসম ভঙ্গের পর কাফফারা আদায় করতে হবে।

আগে কাফফারা আদায় করলে কাফফারা আদায় হবেনা।
সেক্ষেত্রে কসম ভঙ্গের পর পুনরায় কাফফারা আদায় করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম। হুজুর তাহলে কি আমার আগের করা কসম গুলোর কাফফারা আবার দিতে হবে? যেগুলা ভংগ করার আগেই কাফফারা দিয়েছিলাম?
by (681,780 points)
না,দিতে হবেনা।

শুধুমাত্র শেষেরটার কাফফারা পুনরায় দিতে হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...