আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
662 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
edited by
আমার তালাকের ওয়াসওয়াসা রয়েছে। আমি না চাইলেও মনে মনে তালাকের শর্ত হয়ে যায়। আমি অবিবাহিত। একটা ঘটনা নিয়ে খুবই চিন্তিতঃ-
আমি মায়ের কাছ থেকে ঘর ভাড়া দেওয়ার  কথা বলে টাকা এনেছিলাম। পরে চিন্তা করলাম টাকাটা অন্যান্য কাজে ব্যয় করি। কোথায় ব্যয় করবো এটা তো আর মাকে বলার প্রয়োজন নেই।
এরপরই সম্ভবত আমার শর্তযুক্ত তালাকের চিন্তা চলে আসছে। আমি মাকে বলে দিলাম যে টাকাটা অন্য কাজে ব্যয় করতাছি। আবারও গতকাল মাকে বললাম টাকাটা আমার ব্যক্তিগত কাজে খরচ করতাছি।

গতকাল রাতে চিন্তা করলাম যে এটা ওয়াসওয়াসা। আমি তো শর্তযুক্ত তালাক দেয়নি, দিলেও মনে মনে এসেছে, তাও পুরোটা আসেনি। কিন্তু হটাৎ করেই মাথায় আসলো যদি তালাকের সম্পর্ক না-ই থাকবে তাহলে আমি কেনই বা মাকে টাকা কোথায় ব্যয় করবো এটা বলেছি।
আসলে টাকা কোথায় ব্যয় করবো এটা যে কেন মাকে বলেছি এটা আমি ভুলে গেছি। এর কারণ হতে পারেঃ
১. আমি মনে মনে শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে ফেলেছি।
২. টাকা হালাল হয় সে জন্য।
তবে, আমার কাছে তালাকের টাই বেশী নিশ্চিত মনে হচ্ছে। তবে, আমি পুরোপুরি নিশ্চিত যে আমি মুখে উচ্চারণ করে এসব শর্ত দেয়নি। মনে মনেও পুরোটা বলেনি। এরপরও ভয় হচ্ছে যে আমি কি শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে ফেললাম কি না?

ক) আমার ভয় হচ্ছে টাকা কোথায় ব্যয় করবো সেটার সাথে শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে ফেললাম কি না? এখন আমি কি সতর্কতার জন্য মাকে আবার বলে দিবো যে টাকা কোথায় ব্যয় করতাছি নাকি পাত্তা দিবো না?

খ) এই বিবরণ লেখার সময় আমি একবার ডিলেট করে দিয়েছিলাম। এরপর ভয় শুরু হয়ে গেল যে আমি যে যতটুকু বিবরণ উল্লেখ করেছি ততটুকুতে, "আমি পুরোপুরি নিশ্চিত যে আমি মুখে উচ্চারণ করে এসব শর্ত দেয়নি। মনে মনেও পুরোটা বলেনি।" এটা লিখা হয়েছিল না। এখন এতে আমার আগের লেখার মাধ্যমে কোন শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে?

গ) আমি লেখার সময় ঠোঁট নাড়িয়ে উচ্চারণ করে করে পড়েছি, এতে কি শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে?

ঘ) এটি লেখার প্রায় অর্ধেক শেষ করে আমি একজনকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়েছি, আবার তা ডিলেট করে দিয়েছি শর্তযুক্ত তালাকের ভয়ে। এখন আবার রিকুয়েষ্ট দিলে কি এই সংক্রান্ত কোন সমস্যা হবে?

ঙ) আরেকটি ঘটনার ব্যাপারে শর্তযুক্ত তালাকের চিন্তা মাথায় এসেছিল। আমি মুখ নাড়িয়ে ফেলেছি কি না চিন্তা হচ্ছে। মুখ নাড়ালেও আমি পূর্ণ বাক্য বলিনি। এটা কি করবো? এখন কি আমার মনে যেই শর্ত এসেছে সেই অনুযায়ী কাজ করবো নাকি পাত্তা দিবো না?

চ) উমুক কাজ করলে শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে - এই রকম কথা যদি উচ্চারণও করি তাহলে কি শর্তযুক্ত তালাক হবে? মনে মনে যদি বিবাহ এবং ৩ তালাক আসে। - এটা জানার জন্য জিজ্ঞাসা।

হুজুর, আমাকে পরামর্শ দিন। আমি অনেক পেরেশানিতে আছি। কি করলে শর্তযুক্ত তালাক হয় একটু বলবেন?

জ) গতকাল আমার বড়বোন ও মায়ের সাথে আমার অনেক ঝগড়া হয়। আজকেও আমি মায়ের সাথে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করেছি টাকা দেওয়ার জন্য। বড় বোনের সাথেও খারাপ আচরণ করেছি। আমি ভাবছিলাম ঐ টাকা ব্যবহারে যদি শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যায়? এখন আমার কাছে মনে হচ্ছে এই খারাপ আচরণ কিছুটা তালাকের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত, আবার গতকালের ঝগড়াকে কেন্দ্র করেই আজকের ঝগড়া হয়েছে।  তাই, ভাবলাম ক্ষমা চাওয়া উচিত। তখন ভাবলাম তালাকের সাথে এটার সম্পর্ক নাই। তখন আমি উচ্চারণ করে বলেছি, "আল্লাহর কসম এই বিষয় নিয়ে আর বাড়বাড়ি করবো না।" এখানে বাড়াবাড়ি করা বলতে মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টিই মূল। এখন আমি যদি ক্ষমা না চাই তাহলে কি শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে? আমি যদি ক্ষমা চাই তাহলে কি শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে?

ঝ) আর যদি ক্ষমা চাই আর তাহলে কি কসম ভেঙে ফেলার কাফফারা দিতে হবে? কাফফারা পরে দিবো এটা চিন্তা করে কি ক্ষমা চাওয়া যাবে নাকি কাফফারা দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে? কোনটা উত্তম হবে? ক্ষমা চাওয়া না চাওয়া কি তালাকের সাথে সম্পর্কিত হয়ে গেছে?

ঞ) এমন কি হতে পারে যেহেতু তালাকের বিষয় নিয়ে চিন্তা ছিল এবং যেহেতু মায়ের সাথে অনেক খারাপ আচরণ করে ফেলেছি ক্ষমা না চাইলে এর মাধ্যমে কি আল্লাহ শাস্তি হিসেবে শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে দিবেন?

চ) আমার জন্য কি কাফফারা দিয়ে ক্ষমা চাওয়া উত্তম হবে নাকি ক্ষমা না চাওয়া? যেকোনো ক্ষেত্রেই কি তালাক সংক্রান্ত কোন সমস্যা হবে?

ছ) আমি তালাকের ঘটনার জন্যও মায়ের সাথে অনেক খারাপ আচরণ করি এবং আমার পরিবার ও প্রতিবেশীর নামে গীবত করি তাহলে কি এর শাস্তিসরুপ শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে?

জ) আমি যদি এই প্রশ্ন গুলো করার সময় কিংবা আগে পরে আল্লাহর হক কিংবা বান্দার হক নষ্ট করি তাহলে কি তালাক সংক্রান্ত ব্যাপারে সমস্য হবে?

ঝ) আমি যদি মুখে উচ্চারণ না করি, আমি যতই তালাকের ব্যাপারে চিন্তা করি, হারাম হালাল কাজ করি। মনে মনে শর্ত দিয়ে ফেলি। মাঝে মাঝে অনুসরণ করি, মাঝে মাঝে করি না। আমার অন্যান্য পাপের সাথে কি তালাকের কোন সম্পর্ক আছে? মানে আমি মুখে উচ্চারণ না করে শর্ত দিলে তো সমস্যা নাই, তাই না?

আমাকে পরামর্শ দিন।

1 Answer

0 votes
by (687,520 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


বিবাহের পূর্বে সাধারণত তালাক পতিত হয়না। 
হ্যাঁ বিবাহের দিকে ঈঙ্গিত করে শর্তযুক্ত তালাক দিলে তালাক হবে। 
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَنْبَأَنَا مَعْمَرٌ عَنْ جُوَيْبِرٍ عَنْ الضَّحَّاكِ عَنْ النَّزَّالِ بْنِ سَبْرَةَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا طَلَاقَ قَبْلَ النِّكَاحِ

‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ বিবাহের পূর্বে তালাক নাই।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৪৯)

حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ أَنْبَأَنَا عَامِرٌ الْأَحْوَلُ ح و حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ جَمِيعًا عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا طَلَاقَ فِيمَا لَا تَمْلِكُ

‘আমর ইবনু শু‘আইব (রহ.) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তালাক দেয়ার অধিকার জন্মানোর আগে প্রদত্ত তালাক কার্যকর হয় না।

তিরমিযী ১১৮১, আবূ দাউদ ২১৯০, সহীহ, ইরওয়াহ ১৭৫১, ২০৬৯, সহীহ আবী দাউদ ১৯০০, ইবনে মাজাহ ২০৪৭ রাওদুন নাদীর ৫৭১, আত-তা'লীকু আলাত তানকীল ২/৬২।

আরো জানুনঃ 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

(ক)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি এটিকে  পাত্তা দিবেননা।

(খ)
আপনার আগের লেখার মাধ্যমে কোন শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবেনা।

(গ)
এতেও শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবেনা।

(ঘ)
আবার রিকুয়েষ্ট দিলে এই সংক্রান্ত কোন সমস্যা হবেনা।

(ঙ)
পাত্তা দিবেননা।

(চ)
এ রকম কথা উচ্চারণ করলেও আপনার জন্য কোনক তালাক হবেনা।

(জ) 
আপনি ক্ষমা চান বা মা চান,শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(ঝ) 
এখানে বাড়াবাড়ি বলতে তালাক নিয়ে আপনি আর বারাবাড়ি করবেননা।
তাই তালাক নিয়ে যদি আর বাড়াবাড়ি না  করেন,তাহলে তো কোনো কাফফারাই দিয়ে হবেনা।
আর বাড়াবাড়ি করে থাকলে কাফফারা আদায় করতে হবে।

তবে এতে আপনার মা থেকে ক্ষমা চাওয়া না চাওয়ার সাথে কাফফারা প্রদানের কোনো সম্পর্ক নেই।

(ঞ)
ক্ষমা না চাইলে এর মাধ্যমে আল্লাহ শাস্তি হিসেবে শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে দিবেননা।

(চ)
যেকোনো ক্ষেত্রেই তালাক সংক্রান্ত কোন সমস্যা হবেনা।

তবে মায়ের সাথে এহেন ব্যবহারের কারনে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

(ছ)
না,এতে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(জ)
এতেও তালাক সংক্রান্ত কোনো  সমস্য হবেনা।

(ঝ)
মুখে উচ্চারণ না করে শর্ত দিলে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...