আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (18 points)
আসসালমু আলাইকুম।

শায়েখ আমার অনেক গুলা প্রশ্ন আছে আশা করি উত্তর পাবো ইন শা আল্লাহ।

1)নিজের  বাবা বেচেঁ থাকা অবস্থায় (বাবা মায়ের বিচ্ছেদের পর) মায়ের বিয়ে হয়ে গেলে,সেই সৎ বাবাকে বাবা বলে ডাকা যাবে? সৎ বাবা কি মেয়ের জন্য মাহরাম হবেন?

2)সৎ বাবার (ছেলে,ভাই) এরা কি মেয়ের জন্য মাহরাম হবেন?

3)আপন বাবা বেচেঁ থাকা অবস্থায় একটা মেয়ে তার সব ধরনের কাগজ পত্রে ( NID, cirtificate) এবং বাবার পরিচয় হিসেবে তার সৎ বাবার পরিচয় দিতে পারবে?এবং বিয়ের ক্ষেত্রে কি তার সৎ বাবা দায়িত্ব নিয়ে বিয়ে দিতে পারবে?

(*যেহেতু মেয়েটার সব রকম দায়িত্ব তার সৎ বাবা পালন করেন এবং আপন বাবা কোনো রকম খোঁজ খবর নেন না*)

4) যদি এমন হয় স্বামী স্ত্রী ঝগড়া করে আলাদা হয়ে গিয়েছেন 1 বছর কিন্তু খাতা কলমে ডিভোর্স হয়েছে 1 মাস হলো, এক্ষেত্রে মহিলাটি যদি আবার বিয়ে করতে চান তার কি 3 হায়েজ ইদ্দত পালন করতে হবে এর পর বিয়ে করতে পারবে নাকি ইদ্দত করা লাগবে না?

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
★সৎ বাবাকে অর্থাৎ মায়ের ঐ স্বামীকে সন্তানরা সম্মান সূচক বাবা বলে ডাকতে পারবে। কেননা বাবা শব্দ হাকিকি পিতার সাথে খাস নয়।বরং চাচাকেও বাবা বলে ডাকা যায়।

আরো জানুনঃ 

তবে জন্মনিবন্ধন সনদ,ভোটার আইডি কার্ড,সার্টিফিকেট ইত্যাদি তে সৎ পিতার নাম ব্যবহার করা যাবে না।জায়েয হবে না।
আসল পিতার নামই লিখতে হবে।

★সৎ বাবার সাথে নিজ মায়ের যদি সহবাস বা স্ত্রী সুলভ কাজ হয়ে থাকে,তাহলে তিনি মাহরামের অন্তর্ভুক্ত হবেন। 
এক্ষেত্রে তাকে বিবাহ করা জায়েজ নেই,তাই তার সামনে পর্দা ফরজ নয়।
চেহারা খোলা অবস্থায় তার সামনে আসা যাবে।
,
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
সূরা ৪. আন-নিসা
আয়াত নং ২৩

حُرِّمَتۡ عَلَیۡکُمۡ اُمَّہٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ وَ عَمّٰتُکُمۡ وَ خٰلٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُ الۡاَخِ وَ بَنٰتُ الۡاُخۡتِ وَ اُمَّہٰتُکُمُ الّٰتِیۡۤ اَرۡضَعۡنَکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ مِّنَ الرَّضَاعَۃِ وَ اُمَّہٰتُ نِسَآئِکُمۡ وَ رَبَآئِبُکُمُ الّٰتِیۡ فِیۡ حُجُوۡرِکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِکُمُ الّٰتِیۡ دَخَلۡتُمۡ بِہِنَّ ۫ فَاِنۡ لَّمۡ تَکُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِہِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ ۫ وَ حَلَآئِلُ اَبۡنَآئِکُمُ الَّذِیۡنَ مِنۡ اَصۡلَابِکُمۡ ۙ وَ اَنۡ تَجۡمَعُوۡا بَیۡنَ الۡاُخۡتَیۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿ۙ۲۳﴾ 

অনুবাদঃ 
তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা এবং মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইঝি, ভাগিনী, দুধ মা, দুধ বোন, শ্বাশুড়ী, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সাথে সঙ্গত হয়েছ তার পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত মেয়ে যারা তোমাদের তত্ত্বাবধানে আছে, কিন্তু যদি তাদের সাথে তোমরা সহবাস না করে থাক, তবে (তাদের বদলে তাদের মেয়েদেরকে বিয়ে করলে) তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই এবং (তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে) তোমাদের ঔরসজাত পুত্রের স্ত্রী এবং এক সঙ্গে দু’ বোনকে (বিবাহ বন্ধনে) রাখা, পূর্বে যা হয়ে গেছে, হয়ে গেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, দয়ালু। 
(সুরা নিসা ২৩)

کما فی أحكام القرآن للجصاص:
أن الربائب لا يحرمن بالعقد على الأم حتى يدخل بها أو يكون منه ما يوجب التحريم من اللمس والنظر على على ما بيناه فيما سلف هو نص التنزيل في قوله تعالى فإن لم تكونوا دخلتم بهن فلا جناح عليكم۔
(ج:3/69)
সারমর্মঃ
তত্তাবধানে থাকা মেয়ে তার মাকে বিবাহ করার দ্বারা যতক্ষন পর্যন্ত তার মায়ের সাথে সহবাস বা যাহা হুরমত সাব্যস্ত করে এমন কাজ করার আগ পর্যন্ত  হারাম হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ  

(০২)
মেয়ের জন্য সৎ বাবার ছেলে মাহরাম হবে।
সৎ চাচাও মাহরাম হবে।

আরো জানুনঃ  

(০৩)
জন্মনিবন্ধন সনদ,ভোটার আইডি কার্ড,সার্টিফিকেট ইত্যাদি তে সৎ পিতার নাম ব্যবহার করা যাবে না।জায়েয হবে না।
আসল পিতার নামই লিখতে হবে।

রাসূল (সা.) একটি হাদিসে অন্যের পিতাকে পিতা বলে ডাকতে নিষেধ করেছেন।

عَنْ سَعْدٍ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَنْ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ

‘সা‘দ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল(সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে অন্যকে নিজের পিতা বলে দাবি করে অথচ সে জানে যে সে তার পিতা নয়, জান্নাত তার জন্য হারাম।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৭৬৬]

এ হাদিসে অন্যকে পিতা বলে সম্বোধন করার নিষেধাজ্ঞা দ্বারা উদ্দেশ্য হল, নিজের পিতার বংশ পরিচয় গোপন রেখে অন্যের বংশ পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত না করা। [উমদাতুল ক্বারী শরহু সহিহিল বুখারি ২৩/২৬২]

★তবে বিবাহের সময় তার সৎ বাবা দায়িত্ব নিয়ে বিয়ে দিতে পারবে।

(০৪)
এখানে এক বছর আগে যে স্বামী স্ত্রী ঝগড়া করে আলাদা হয়ে গিয়েছিলো,তখন কি মৌখিক ভাবে তালাক দিয়েছিলো?
যদি দিয়ে থাকে,তাহলে যেহেতু তাত ইদ্দতকাল অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে,তাই  এখন সেই মহিলার আর ইদ্দত পালন করতে হবেনা। 
অন্যত্রে বিবাহ করতে পারবে।
আর যদি সেই সময়ে মৌখিক ভাবে তালাক না দিয়ে থাকে,বরং এক মাস আগে খাতা কলমে যে ডিভোর্স হয়েছে,সেটিই শুধু হয়ে থাকে,তাহলে তাকে এই ডিভোর্স হওয়ার পর থেকে  ইদ্দত পালন (৩ হায়েজ অপেক্ষা) করতে হবে। 
তারপর সে অন্যত্রে বিবাহ করতে পারবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...